মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) বদলে ইলেকট্রনিক্স পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) চালুর চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার। সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে আগামী দু’বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৫ সালের মধ্যেই এটি চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এনিয়ে আগামী ১৬ই এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বসছে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের সভা। ওই সভায় এমআরপি’র বদলে ই-পাসপোর্ট প্রচলনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা সভার প্রধান আলোচ্যসূচিতে থাকছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার গাইড লাইন অনুসারে ২০১০ সাল থেকে এ দেশে এমআরপি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। ওই কার্যক্রমের আওতায় বর্তমানে দেশে ও বিদেশে অবস্থিত বিভিন্ন বাংলাদেশ মিশনগুলোতে এমআরপি ইস্যু করা হচ্ছে। বাংলাদেশের নাগরিকরা এমআরপি নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে বিদেশ ভ্রমণ করতে পারছেন। বর্তমানে চালু থাকা এমআরপি বুকলেটের কভার পৃষ্ঠা ২৯০ মাইক্রোন কাগজ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া, ভেতরের পৃষ্ঠার পুরুত্ব ১০৫ মাইক্রোন। একই সঙ্গে রেড ভিজিবল সিকিউরিটি ফাইবার, দুই স্তরবিশিষ্ট বাইন্ডিং সুতার স্তর এবং ৩৮টি সিকিউরিটি ফিচার ব্যবহার করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কম্পিউটারে সাপোর্ট করে এমন কোন চিপ থাকবে ইলেকট্রনিক্স পাসপোর্টে। চিপের পাশাপাশি কাগজের অংশও থাকবে। কম্পিউটারে পাঞ্চ করে পড়া যায় এমন চিপের মধ্যে ছবি ও
প্রয়োজনীয় তথ্যসহ সবকিছুই থাকবে। উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনেক আগে থেকেই ই-পাসপোর্ট চালু রয়েছে। এসব পাসপোর্ট সহজে বহনযোগ্য। এছাড়া, এক সঙ্গে ১০ বছর মেয়াদের পাসপোর্ট দিয়ে দেয়া যাচ্ছে। এর আগে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে ১৯০টি দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে ২০১১ সালের ১লা এপ্রিল থেকে সব দেশকে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের মাধ্যমে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট ও ভিসার প্রচলন করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই চুক্তির শর্তানুসারে বাংলাদেশে ২০১০ সালের ১লা এপ্রিল থেকে এমআরপি পাসপোর্ট চালু হয়। এ প্রকল্পের আওতায় তিন বছরে ৬৬ লাখ পাসপোর্ট ও ১৫ লাখ ভিসা স্টিকার দেয়া হয়েছে। তিন বছরের জন্য এ খাতে সরকারের ব্যয় হয়েছে ৫২৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা। এ ব্যবস্থায় এ পর্যন্ত ২৫ লাখ পাসপোর্ট বই ছাপানোর পর বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ২০১০ সালের ৩১শে মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এমআরপি ও মেশিন রিডেবল (এমআরভি) চালুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন। বর্তমানে তিন রঙের এমআরপি দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে কূটনীতিকদের দেয়া হচ্ছে লাল রঙের পাসপোর্ট, নেভি ব্লু পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ও সবুজ রঙের পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। এর আগে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে প্রথম পাসপোর্ট আধুনিকায়নের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০৪ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মেশিনে পাঠযোগ্য পাসপোর্ট, ভিসা ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রবর্তনের কার্যক্রম হাতে নেয়। তা বাস্তবায়নের কাজ পরবর্তী সময়ে আর এগোয়নি। পরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ইন্ট্রোডাকশন অব মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অ্যান্ড মেশিন রিডেবল ভিসা শীর্ষক প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০০৯ সালের ১৯শে মার্চ একনেক ২৮৩ কোটি টাকার এ প্রকল্প অনুমোদন করে। পরে এর খরচ আরও বেড়েছে।
[[ আপনি জানেন কি? আমাদের সাইটে আপনিও পারবেন আপনার নিজের লেখা জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বা আপনার এলাকার খবর তুলে ধরতে জানতে “এখানে ক্লিক করুণ” তুলে ধরুন নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান। ]]