মাঈনুল ইসলাম নাসিম : প্রাকৃতিক দুর্যোগ যদি এসেই যায় তবে সেটাতো মোকাবেলা করতেই হবে কিন্তু আসার আগে কি কি পদক্ষেপ গ্রহন করলে ঝুঁকিটা কমে আসে অর্থাৎ দুর্যোগ এলেও যাতে তার ক্ষয়ক্ষতি যতদূর সম্ভব কমিয়ে আনা যায়, বিশ্বব্যাপী এই অভিন্ন লক্ষ্য বাস্তবায়নের অন্যতম অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশ অত্যন্ত নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে জেনেভা ভিত্তিক United Nations International Strategy for Disaster Reduction (UNISDR)-এর সাথে। প্রাসঙ্গিক ইস্যুতে এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপচারিতায় এমনটাই জানিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভাস্থ বাংলাদেশ মিশনে দায়িত্বরত রাষ্ট্রদূত এম শামীম আহসান।
জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসবিষয়ক সংস্থা ইউএনআইএসডিআর-এ বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করছেন পেশাদার কূটনীতিক এম শামীম আহসান। হিয়োগো ফ্রেমওয়ার্কের পর সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক নিয়ে UNISDR ইতিমধ্যে জোরেশোরে কাজ শুরু করেছে বলে জানান তিনি। রাষ্ট্রদূত বলেন, “দুর্যোগ কিভাবে মোকাবেলা করবে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ২০০৫ থেকে ২০১৫ এই ১০ বছর সময়টাতে কাজ করে আসছিল Hyogo Framework for Action (HFA)-এর অধীনে। সময়ের প্রয়োজন পূরণে ইতিমধ্যে যাত্রা শুরু করেছে Sendai Framework for Disaster Risk Reduction, যার মেয়াদকাল ২০১৫ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত”।
১৪ থেকে ১৮ মার্চ ২০১৫ জাপানের সেন্দাই শহরে অনুষ্ঠিত হয় জাতিসংঘের দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন, যার একটি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন রাষ্টদূত এম শামীম আহসান। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ২০১১ সালে ঘূর্ণিঝড় ও সুনামির আঘাতে এই সেন্দাই শহরই বিধ্বস্ত হয়েছিল ভয়ানকভাবে। সেন্দাই করফারেন্সে অংশগ্রহনের অভিজ্ঞতার বিবরণ দিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, “কাঠামো হিসেবে হিয়োগোর চাইতে অনেক অনেক অগ্রসর সেন্দাই। নতুন এই ফ্রেমওয়ার্কে প্রিভেনশনের ওপরই বেশি জোর দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ যেহেতু রেগুলারলি ডিজাস্টারের শিকার হয়ে থাকে, তাই টেকসই উন্নয়ন জোরদার করে বাংলাদেশ তার নিজেদের স্বার্থেই সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ককে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দিচ্ছে”।
এদিকে জেনেভা ভিত্তিক World Trade Organization (WTO)-এর মতো বিশ্ব সংস্থায়ও বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন রাষ্ট্রদূত এম শামীম আহসান। বিশ্ববানিজ্য সংস্থা ডব্লিউটিও কর্তৃক বাংলাদেশ ২০১৫ সালের জন্য স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশসমূহের কোঅর্ডিনেটর নির্বাচিত হওয়ায় বছরটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্ববহ বলে মনে করছেন এই ঝানু কূটনীতিক। ২০১৩ সালের বালি সম্মেলনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পথ পরিক্রমায় WTO সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মন্ত্রী পর্যায়ের পরবর্তী বৈঠক চলতি বছরের শেষান্তে ১৫-১৮ ডিসেম্বর কেনিয়াতে অনুষ্ঠিত হবে। রাষ্ট্রদূত বলেন, “নাইারোবি মিনিস্টেরিয়াল করফারেন্সেও যথারীতি আমাদেরকে বড় ভূমিকা রাখতে হবে”।