প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ সহ অপরাপর বিজ্ঞ(?) নির্বাচন কমিশনারদের সৌভাগ্য, আজ অবধি বাংলাদেশের কোন বিবেকবান মানুষ উচ্চ আদালতে এইমর্মে রীট করেননি যে, জাতীয় অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি লাখ লাখ প্রবাসী জনগোষ্ঠীকে দূতাবাসসমূহের মাধ্যমে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করায় নির্বাচন কমিশনের হালনাগাদ কার্যক্রমকে কেন অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না ?
প্রবাসী বাংলাদেশিদেরকে ভোটার তালিকার বাইরে রাখা কেন শতভাগ অগনতান্ত্রিক ও জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থি ঘোষণা করা হবে না ? – এইমর্মে উচ্চ আদালতে একটিমাত্র রিটই আজ চোখ-কান খুলে দিতে পারে সরকারের, এমনটা মনে করছেন দেশ-বিদেশের অনেকেই। তবে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার ইস্যুতে সরকার জেগে ঘুমোচ্ছেন, এমন শংকার কথাও কান পাতলে শোনা যায় বিভিন্ন লেভেলে।
প্রবাসী প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের যার যার দেশ থেকে ভোটদানের সুযোগ ব্যতীত বাংলাদেশের যে কোন জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ হলেও সুষ্ঠ অবাধ ও গ্রহণযোগ্য হবার যে ন্যূনতম সুযোগ নেই – এ নিয়ে বহু লেখালেখি হয়েছে অতীতে। কানে পানি যায়নি কারো আজ অবধি। প্রবাসীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিশেষ এই ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দলই তাদের দেউলিয়াত্ব দেখিয়েছে বছরের পর বছর।
প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করবেন এমনটা কথা দিয়ে কথা রাখেননি স্বয়ং আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কী দুর্ভাগ্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের ! পৃথিবীর সব দেশের প্রবাসীরা যার যার বৈদেশিক অবস্থান থেকে জন্মগত অধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পেলেও ব্যতিক্রম শুধু আমাদের বাংলাদেশ। অথচ কথায় কথায় আমরা রেমিটেন্স আর ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলি। প্রবাসী জনতার অধিকার নিশ্চিত না করে রেমিটেন্সের গুণগান বড্ডবড় বেমানান বৈকি !
প্রযুক্তির এই যুগে লাখ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশিদের দূতাবাসের মাধ্যমে হোক বা অনলাইনে হোক তথা যে কোন ভাবে যে কোন মূল্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের সাথে নিবিড়ভাবে অন্তর্ভুক্ত করার সময় এসেছে আজ। বিশ্বের নানা প্রান্তে বাংলাদেশ দূতাবাস সমূহে চলমান এমআরপি কর্মসূচীর সাথে খুব সহজেইে একীভূত করা যেতে পারে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকাভুক্ত করার বিষয়টি। প্রয়োজন শুধু সরকারের সত্যিকারের আন্তরিকতার। নইলে বঙ্গবন্ধু কন্যার দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করার দায়ভার আর কেউ না নিলেও স্বয়ং তাঁকেই নিতে হবে যে !