শুক্রবার রাত ২টা ৬ মিনিট। অচেনা বিদেশি নম্বর থেকে ফোন আসে একটি গ্রামীণফোন নম্বরে। ফোন রিসিভ করলে অপর প্রান্ত থেকে কোনো সাড়া শব্দ পাওয়া যায়নি। কয়েক সেকেন্ড পার হওয়ার পর ফোন কলটি কেটে যায়। ফোন নম্বরটি ছিল +২৪৩৮৯৬২৩৪০০৪। একই ভাবে +২৪৩৮৯৬২৩৪০০৫ নম্বর থেকে শনিবার সকাল ৯টা ৩৬ মিনিটে আরেকটি ফোন আসে এক সংবাদকর্মীর গ্রামীণফোন নম্বরে। এর আগে +২৪৩৮১০৭৪৩০৪০ নম্বর থেকে মঙ্গলবার দুপুরে অন্য এক সংবাদকর্মীর গ্রামীণফোন নম্বরে আরেকটি ফোন আসে। এই ফোনটি এসেছিল দুপুর ১২টা ৪৯ মিনিটে। ফোন কলটি ধরার আগেই তা মিসড কল হয়ে যায়।
বাংলাদেশ প্রতিদিনের’ চিফ রিপোর্টার মন্জুরুল ইসলাম জানান, তিনিও এমন একটি নম্বর থেকে ফোন পেয়েছিলেন। ওপ্রান্ত থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে লাইনটি কেটে দিয়ে পরে ফোন করেন। তাতেও সাড়া মেলেনি। ব্যালেন্স চেক করে দেখেন তার দেড়শ টাকার পুরোটাই চলে গেছে।আরেক ভুক্তভোগী আসাদুজ্জামান ইমন জানান, তার বড় ভাইয়ের গ্রামীণফোনের একটি পোস্ট পেইড নম্বরে একই কোড থেকে ফোন আসে দুমাস আগে। ফোনটি মিসড কল হয়ে যাওয়ায় তিনি সে নম্বরে ফোন ব্যাক করেন। যথারীতি কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে ফোন কেটে দেন। পরে অন্য একটি নম্বরে ফোন করতে গিয়ে দেখেন ফোন যাচ্ছে না। গ্রামীণফোনের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন তার অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার টাকা বিল হয়েছে! আর এই ভূতুরে বিল দেখে তিনি সেই নম্বরটি ব্যবহার করা বন্ধ করে দেন।এই ফোন নম্বরগুলোর খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে প্রতারণার ভয়ংকর কিছু তথ্য। বিদেশি কিছু চক্র এই সব ফোনের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে মোবাইল ফোন গ্রাহকদের টাকা। এই ফোনগুলো ব্যবহার হয় কেবল টাকা-পয়সা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য।অদ্ভুত এ নম্বর থেকে ফোন আসার পর যদি আপনি তাতে ফিরতি ফোন করেন তাহলেই সাথে সাথে আপনার মোবাইল থেকে ব্যালেন্স কেটে নেওয়া হবে। আপনার মোবাইল ফোনের অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা চলে যাবে ওই জালিয়াত চক্রের কাছে অনায়াসেই।
এই চক্রগুলো টাকা হাতিয়ে নিতে সহজ কিছু কৌশল ব্যবহার করে ফোন করতে উদ্বুদ্ধ করে। যেমন এই নম্বার থেকে ফোন আসার পর যদি ফোনটি আপনি রিসিভ করতে না পারেন তাহলে স্বভাবতই তা মিসড কল তালিকায় উঠবে। পরে কৌতূহলে আপনি স্বাভাবিকভাবেই ফোন করবেন সেই নম্বরে। আর এতে করে মাত্র কয়েক সেকেন্ডেই উধাও হয়ে যাবে আপনার মোবাইল সবটুকু ব্যালেন্স।
আর ফোন রিসিভ করে যদি কোনো সাড়া শব্দ না পাওয়া যায়, কৌতূহল বশত ওই নম্বরে ফোন করবেন। তাতেও একইভাবে টাকা চলে যাবে এবং তা ট্রান্সফার হবে ওই চক্রটির অ্যাকাউন্টে। এছাড়াও বিভিন্ন তরুণ-তরুণীর ছবি ব্যবহার করে এই ধরনের স্ক্যামিং কলের ফাঁদ পাতা হয়।এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামীণফোনের এক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা বলেন, “কেবল গ্রামীণফোনে নয়, অন্যান্য অপারেটারেও এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ফোন আসছে। আমরা মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে এর আগে গ্রাহকদের বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেছি।”তিনি জানান, একই কোড থেকে এ ধরনের ফোন আসছে না। বিভিন্ন সময় কোড পরিবর্তন করে এ ধরনের কল আসছে গ্রাহকদের ফোনে। গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ থেকে এর আগে এই কোডগুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু চক্রটি আবারো কোড পরিবর্তন করে গ্রাহকদের ভোগান্তি করছে।+২৪৩ কোডের নম্বর দিয়ে আসা ফোন নম্বরটির খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, এটি মূলত কঙ্গোর জাইরি’র একটি কোড নম্বর। সেখান থেকেই আসে এই ফোন কলটি। এই কলকে ‘স্ক্যামিং কল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ইন্টারনেট দুনিয়াও এ ধরনের আরো স্ক্যামিং পদ্ধতি ছড়িয়ে রয়েছে।বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্রে এ ধরনের ফোন স্ক্যামিং বেড়ে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। সে দেশে +২৪৩ দিয়ে শুরু হওয়া নম্বর থেকে কল আসছে গ্রাহকদের কাছে। তারপর গ্রাহকরা সে সব নম্বরে কল ব্যাক করার পরই টের পাচ্ছেন যে, অ্যাকাউন্ট শূন্য হয়ে গেছে!এ ধরনের ফোন কল এখন বাংলাদেশেও নিয়মিত আসছে। আর বিষয়টি বেশির ভাগ মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের অজানা থাকায় তারা ভুল করেই ফাঁদে পা দিয়ে হারাচ্ছেন মোবাইলের সব টাকা।
[[ আপনি জানেন কি? আমাদের সাইটে আপনিও পারবেন আপনার নিজের লেখা জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বা আপনার এলাকার খবর তুলে ধরতে এই লেখায় ক্লিক করে জানুন এবং তুলে ধরুন। নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান। আর আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে রয়েছে অনেক মজার মজার সব ভিডিও সহ আরো অনেক মজার মজার টিপস তাই এগুলো থেকে বঞ্চিত হতে না চাইলে এক্ষনি আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে লাইক দিয়ে আসুন। এবং আপনি এখন থেকে প্রবাস জীবনে আমাদের সাইটের মাধ্যমে আপনার যেকোনো বেক্তিগত জিনিসের ক্রয়/বিক্রয় সহ সকল ধরনের বিজ্ঞাপন ফ্রিতে দিতে পাড়বেন। ]]