রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. কুদ্দুস রহমান চৌধুরী গতকাল ঢাকায় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে (ক্যাব) সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দুই RAB কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে নগদ টাকা, ৩টি গাড়ি, ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকার ব্যাংক চেক ও জমির দলিল হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন। ব্যবসায়ীকে আটক করে RAB কার্যালয়ে নিয়ে মারধর, বৈদ্যুতিক শক প্রদানের অভিযোগও করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সেনাপ্রধান, আইজিপি, RAB মহাপরিচালক সহ সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ব্যবসায়ী কুদ্দুস।
২৭ মে RAB-৪-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল হাসানের নির্দেশে RAB অফিসার ক্যাপ্টেন হাসিব তাকে পাইকপাড়ায় RAB-৪-এর অফিসে ধরে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করেছে। ওইদিন বেলা ১১টায় পল্লবী থানাধীন ৬২/৫/সি কালসীতে তার ব্যবসায়িক পার্টনার মো. ইউসুফ ও মো. মনিরের সঙ্গে আলাপরত অবস্থায় র্যাব সদস্যরা তাকে ধরে চোখ বেঁধে গাড়িতে তুলে RAB-৪ অফিসে নিয়ে আসে।
তিনি বলেন, RAB অফিসার হাসিব তাকে একটি অন্ধকার কক্ষে আটকে রেখে ইলেকট্রিক শক দেয় আর বলতে থাকে—তার কথামত কাজ না করলে আমাকে ক্রসফায়ারে দেবে, লাশ ঘুম করে ফেলবে, পুরনো মাদকদ্রব্যের মামলায় জড়িয়ে আজীবন জেলের ভেতরে ঢুকিয়ে রাখবে। তার এই হুমকির মুখে আমি বাধ্য হই মোবাইল ফোন করে RAB-৪ অফিসে আমার স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যদের গাড়ি ও ব্যাংকের চেকবই নিয়ে দ্রুত আসতে বলি।
তিনি বলেন, এই নির্দেশ পেয়ে তার স্ত্রী মোসা. জ্যোত্স্না বেগম, বড় ছেলে মো. শহিদুর রহমান, ছোট ছেলে মো. মাহবুবুর রহমান সাদ্দাম, মেয়ে ফারজানা আক্তার টুম্পা, ভাতিজা মো. আনোয়ার হোসেন রনি এবং ৩ জন ড্রাইভার মো. রাসেল, মো. সাত্তার ও মো. জসিম তার ৩টি গাড়ি ফেরারি ঢাকা মেট্রো ভ-১৫-০৩২১, সিলিকা ঢাকা মেট্রো-গ-১১-৯০৬৫ এবং টয়োটা এলিয়ন ঢাকা মেট্রো-গ-৩১-২৬৬৫ নিয়ে পাইকপাড়ায় RAB অফিসে আসে। পরে তাদেরকেও একটি অন্ধকার কক্ষে আটকে রেখে নানা ভয়ভীতি দেখায় ও নির্যাতন করে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
মো. কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, RAB’র ওই দুই কর্মকর্তার নির্দেশে আমার ও আমার ছেলের ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের যৌথ অ্যাকাউন্ট চেক নং-৬৭২৫২২৭তে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা, চেক নং-৬৭২৫২২৮তে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা, চেক নং-৫৭২৫২২৯তে ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা অর্থাত্ ওই ৩টি চেকে ৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং নগদ ১ লাখ ৮৯ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। একইসঙ্গে ১৫০ টাকা মূল্যের দুটি পুরনো খালি স্ট্যাম্পে সই-স্বাক্ষর করিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় থানায়, আদালতে, কোনো সংস্থায় বা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানকে অবহিত করা হলে মেরে ফেলা হবে বলেও শাসিয়ে ওইদিন রাত ১২টায় তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
কুদ্দুস চৌধুরী বলেন, এ ঘটনার পর আমি দীর্ঘ ২০ দিন চিকিত্সাধীন ছিলাম। তাদের ভয়ে আমি এবং আমার পরিবারের সদস্যরা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও বাসাবাড়িতেও চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এখনও তারা আমার ওই ৩টি গাড়ি ও জমির দলিল আটকে রেখেছে এবং ব্যাংকের চেকগুলো ক্যাশ করতে RAB কর্মকর্তারা নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করছে। আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি সার্বক্ষণিক চালু রাখতেও নির্দেশ দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কুদ্দুস চৌধুরীর স্ত্রী মোসা. জ্যোত্স্না বেগম, ছেলে মো. শহিদুর রহমান ও মো. মাহবুবুর রহমান সাদ্দাম, মেয়ে ফারজানা আক্তার টুম্পা এবং ভাতিজা মো. আনোয়ার হোসেন রনি।
[[ আপনি জানেন কি? আমাদের সাইটে আপনিও পারবেন আপনার নিজের লেখা জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বা আপনার এলাকার খবর তুলে ধরতে জানতে “এখানে ক্লিক করুণ” তুলে ধরুন নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান। ]]