মাঈনুল ইসলাম নাসিম : প্রবাসী বাংলাদেশীদের মরদেহ রাষ্ট্রীয় খরচে দেশে প্রেরণের দাবী বহুদিন ধরেই এক জ্বলন্ত ইস্যু। বছরের পর বছর ধরে ইউরোপ ও আমেরিকায় স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর কাছেই সরাসরি উত্থাপন করা হয়েছে অত্যন্ত মানবিক এই বিষয়টি। বরফ গলেনি কোন কালেই। সর্বশেষ গতমাসে সুইজারল্যান্ডের ডাভোসেও প্রবাসীদের তেমন কোন সুসংবাদ জানানো হয়নি সরকার প্রধানের তরফ থেকে। ঝুলে থাকা এই ইস্যুতে ৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার অনেকটা হঠাৎ করেই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ফেসবুকে তাঁর ইমেইল সম্বলিত একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। হাজার হাজার লাইক এবং শতশত শেয়ার ও কমেন্টসের ভিড়ে অপ্রিয় কিছু সত্য চাপা পড়ে যাওয়ায় বিশেষ করে ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়া জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে বিভ্রান্তি। প্রতিমন্ত্রীর স্ট্যাটাসে উল্লেখিত ওয়েজআর্নারের গোলকধাঁধা নিয়ে লিখতে হচ্ছে তাই বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে।
প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম লিখেছেন, “যদিও খুব সুখকর নয়, একটি বিষয় প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখতে চাই বর্তমান সরকার বেশ কিছুদিন আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে সকল প্রবাসীর পরিবার পরিজনের সামর্থ্য নেই কোন প্রবাসীর মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার, সরকার সেই মৃতদেহ সরকারী খরচে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন এবং সেই সাথে দাফনের খরচও দেয়া হয়। অনেকে আমার সাথে যোগাযোগ করেন, আজকে যেমন জার্মানি থেকে একজনের সহকর্মী একটু আগে ফোন করেছিলেন। যদিও বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওয়েজআর্নার্স বোর্ডের এখতিয়ারভুক্ত প্রথমে আপনারা বাংলাদেশ এম্বেসীতে যোগাযোগ করবেন এবং আশানুরূপ সাড়া না পেলে আমাকে sm@mofa.gov.bd তে ইমেইল করে জানাবেন”।
প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইস্যুতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ভূমিকা অতীতে আশা জাগিয়েছে সন্দেহ নেই। কিন্তু ‘ওয়েজআর্নার’ কারা তা পরিষ্কার করে না বলায় এবং ইমিগ্রান্ট অধ্যুষিত দেশসমূহে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো অন্ধকারে থাকায় সৃষ্টি হয়েছে এই স্ট্যাটাস বিভ্রাট। প্রতিমন্ত্রীর স্ট্যাটাস ভাইরাল হওয়ার পর শনিবার ছুটির দিন হওয়া সত্বেও ব্যক্তিগত যোগাযোগের সুবাদে বিশ্বের নানা প্রান্তে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্বরত বেশ ক’জন সিনিয়র কূটনীতিকের সাথে কথা বলি। তাঁরা একবাক্যে জানিয়েছেন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওয়েজআর্নার্স বোর্ডের প্রচলিত পলিসিতে ইউরোপ-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়াতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে ‘ওয়েজআর্নার’ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। যেসব দেশে সরকারীভাবে কর্মী প্রেরণ করা হয়, শুধুমাত্র ঐসব দেশে কর্মরত প্রবাসীরাই বাংলাদেশ সরকারের খাতায় ‘ওয়েজআর্নার’। থিওরিটিক্যালি বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রেরণকারী বিশ্বের যে কোন প্রান্তে বসবাসরত সকল প্রবাসীরা ‘ওয়েজআর্নার’ হিসেবে বিবেচিত হবার কথা থাকলেও মনগড়া পলিসিতে চলছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওয়েজআর্নার্স বোর্ড।
ইউরোপ-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়ায় ইমিগ্রান্ট বাংলাদেশীরা যেহেতু বাংলাদেশ সরকারের ভুল পলিসির খেসারতে ‘ওয়েজআর্নার’ হিসেবে বিবেচিত নয়, তাই পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর স্ট্যাটাসটি শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়ার মতো দেশে বসবাসরত প্রবাসীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ইমিগ্রান্ট অধ্যুষিত দেশে দায়িত্ব পালনরত রাষ্ট্রদূতরা জানিয়েছেন, সরকারী খরচে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানো কিংবা তাদের দাফনের খরচ বহন করা সংক্রান্ত কোন সরকারী নির্দেশনা তাঁরা পাননি। একটি বিষয় অবশ্য তাঁরা স্পষ্ট করেই বলেছেন, ইউরোপ-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশীরা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে ‘ওয়েজআর্নার’ না হলেও ওয়েজআর্নাস তহবিলের অর্থ যোগানদাতা কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশীরাও। কনস্যুলার সার্ভিস থেকে জনপ্রতি বা সার্ভিসপ্রতি যে ১০% অর্থ বাড়তি নেয়া হয়ে থাকে বিভিন্ন দেশে, তা দিয়েই গড়ে উঠেছে ওয়েজআর্নাসের বিশাল ফান্ড।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাজের সমন্বয়হীনতার বিষয়টি জানেন প্রধানমন্ত্রীও। ফলে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ওয়েজআর্নার্স বোর্ডের পলিসি পরিবর্তন করার কোন উদ্যোগ না নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর স্ট্যাটাস ইউরোপ-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়ায় ইমিগ্রান্ট বাংলাদেশীদের বিভ্রান্ত করার পাশাপাশি হতাশও করেছে । উক্ত ৩টি মহাদেশের দূতাবাসগুলোতে যেহেতু কোন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়নি ঢাকা থেকে, তাই ডেডবডি নিয়ে দূতাবাসে যোগাযোগ করে কোন কাজ না হওয়াই স্বাভাবিক। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে মেইল করা হলে হয়তো বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে তিনি দু’একটি কেস দেখবেন, কিন্তু তা কোনভাবেই মূল সমস্যার সমাধান নয়। প্রতিমন্ত্রী তাঁর স্ট্যাটাসে বলেছেন, “যে সকল প্রবাসীর পরিবার পরিজনের সামর্থ্য নেই কোন প্রবাসীর মৃতদেহ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার”। তাঁর এই বক্তব্যও প্রবাসীদের ডিগনিটির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কারণ সরকারী খরচে মরদেহ প্রেরণ কারো ‘দয়ার দান’ নয়, বরং এটি রেমিটেন্সের উৎস প্রবাসী বাংলাদেশীদের ন্যায্য অধিকার। সামর্থ থাকা না থাকা এখানে গৌন, অধিকার যেখানে মূখ্য।
উল্লেখ্য আমিওপারিতে পূর্বে প্রকাশিত ইউরোপ ও ইতালি নিয়ে অনেক প্রয়োজনীয় কিছু লেখার লিঙ্ক এখানে তুলে ধরা হল যা আপনাদের কাজে আসতে পারে।
* সেঞ্জেন ভুক্ত ইউরোপের যেকোনো দেশের পাসপোর্ট,রেসিডেন্স কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি ডকুমেন্টস গুলো চিনে রাখুন। আজকের বিষয় Austria এখানে ক্লিক করুন।
* ইতালিতে কিভাবে দ্রুত ট্যুরিস্ট ভিসার মাধ্যমে পরিবার নিয়ে আসবেন? কি কি লাগবে? এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিন।
* ইতালির ট্যুরিস্ট ভিসা পাওয়ার কিছু চমৎকার তথ্য,কেন আমি ভিসা পাইনা? তার সমাধান? এখানে ক্লিক করে জেনে নিন।
* ইতালির Permesso di Soggiorno অভিবাসীদের জয় সরকারের পরাজয়। কোর্টের রায়ে সরকারের হার। বিস্তারিত এখানে ক্লিক করুন।
* এখন থেকে ইতালির ফ্যামিলি ভিসার আবেদনে কাজির আইডেণ্টিটি কার্ড জমাদান আবশ্যক। এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত পড়ুন।
* ইতালিতে কাজ ছাড়াও Permesso di Soggiorno তথা রেসিডেন্স পারমিট নবায়নের উপর দারুন এক সুখবর। এখানে ক্লিক করে পড়ুন।
* সতর্ক বার্তা ইতালি ফ্যামিলি ভিসায় ব্যাপক পরিবর্তন? সামান্য ভুলেও হতে পারে জেল-জরিমানা।নিজ স্বার্থেই লেখাটি ভালো করে পড়ুন।এখানে ক্লিক করে।
* ডয়েচ ব্যাংকে ব্লক একাউন্ট খোলা, ডকুমেন্ট পাঠানোর নিয়মাবলী এবং এম্ব্যাসির সহযোগীতা। আপডেটঃ ২৭ আগস্ট, ২০১৬ (লিখাতি পড়তে এখানে ক্লিক করুন)
* কিভাবে ইতালির টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করবেন? কি কি লাগবে ইত্যাদি বিষয় জানতে এখানে ক্লিক করে জেনে নিতে পারেন।
*ইতালিতে ট্যুরিস্ট ভিসায় এসে ফেরত না গেলে কি হবে?পুলিশ ধরলে কি হবে?ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে যত প্রশ্ন ও তার উত্তর। এখানে ক্লিক করে জেনে নিন।
*ইতালিয়ান কাগজ ধারীরা কিভাবে ইংল্যান্ডের ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদন করবেন? কি কি কাগজ পত্র লাগবে? জেনে নিন বিস্তারিত।
* ইতালিয়ান পাসপোর্ট দ্রুত পাবো কিভাবে?ও ইতালিয়ান নাগরিকত্ব পেতে সে সংক্রান্ত কিছু বিষয় না জানলেই নয়। এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
*ইতালিয়ান পাসপোর্টের আবেদন করবো? কোন বিষয় গুলো অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে? এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিন।
*ইউরোপের বা ইতালির পাসপোর্ট নেওয়ার সময় দ্বৈত নাগরিকত্ব রাখার সুবিধা অসুবিধা গুলো জেনে রাখুন? বিস্তারিত এখানে।
*ইতালির বাস/ট্রামে/মেট্রোর বাৎসরিক টিকেট কিভাবে ২৫০ ইউরোর পরিবর্তে ১২৫ ইউরোতে করাবেন।বিস্তারিত জেনে নিন।
*ইতালির ফ্যামিলি ভিসার জন্য প্রেফেত্তুরাতে কাগজপত্র জমা দেওয়ার ৬০ দিন পরেও চিঠি না আসলে? কি করার? বিস্তারিত এখানে।
*নতুন ধারায় দেশে ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে ইতালিয়ান দূতাবাসের হয়রানী।এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিন।
*হাজারো অবৈধ ইমিগ্রান্টদের জন্য পর্তুগালের দরজা বন্ধ।Immigration News Update about Portugal এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিন।
*ইতালিস্থ রোমের বাংলাদেশ দূতাবাসের জরুরী বিজ্ঞপ্তি, অনলাইন এপয়েন্টমেন্ট ব্যতীত কোন প্রকার কাজ সম্পাদন করা হবে না? বিস্তারিত এখানে।
*শুরু হয়ে গেলো ইতালিতে ব্যবসায়ীদের বাৎসরিক আয়/ব্যয়ের তথা রেদ্দিতি (UNICO) ঘোষণা দেওয়ার সময়।এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিন।
*ইতালি ও ইউরোপে অবৈধ অভিবাসীরা চাইলে ইতালিতে বৈধ হতে পারেন?কিন্তু কিভাবে বিস্তারিত পড়ুন! এখানে ক্লিক করে।
*ইতালিতে রোড এক্সিডেন্ট হলে কিভাবে ৩০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণ পাবো? জেনে নিন বিস্তারিত।এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিন।
*ইতালিতে নির্যাতিত নারীরা কিভাবে তাদের অধিকার,হক আদায় করবেন?কোথায় যাবেন?কি করবেন? পার্ট – ১ এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিন।
*ইতালিতে ফ্যামিলি ভিসার ফি ১২৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকার মতো ধার্য করা হয়েছে। এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিন।
*সেঞ্জেন ভুক্ত ইউরোপের যেকোনো দেশের পাসপোর্ট,রেসিডেন্স কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি ডকুমেন্টস গুলো চিনে রাখুন।এখানে ক্লিক করে।
* বন্ধ হল ইতালির স্টুডেন্ট ভিসায় আসার পথ। এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
* ইউরোপে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা অথবা এণ্ট্রি ব্যান কি? কি কি কারনে আপনাকে ব্যান করতে পারে? এখানে ক্লিক করে জেনে নিতে পারেন।
* অবশেষে এপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই ইতালির ভিসা আবেদন কেন্দ্র ভিএফএস গ্লোবালে ভিসার আবেদন জমা নিচ্ছে। এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
* ইতালিতে ফ্যামিলি ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে পুরাতন সিস্টেম পরিবর্তন করে সম্পূর্ণ নতুন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
যারা ইউরোপের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন অথবা ইতালিতে ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে নানা ধরণের সমস্যায় ভুগছেন? অথবা দেশে জমা দিয়ে ভিসা পাচ্ছেন না? বা ফ্যামিলি ভিসা থেকে শুরু করে ইতালি ও ইউরোপের যেকোনো ধরণের ভিসা সংক্রান্ত বিষয়ে আইনি সহায়তার জন্য সরাসরি আমিওপারি টিম এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
আমাদের সাথে যোগাযোগের বিস্তারিতঃ স্ক্যাইপ- amiopari টেলঃ +৩৯ ০৬২৪৪০৫২১৭ মোবাইল +৩৯ ৩৩৮১৪০৮৯১৭ (WIND)মোবাইলঃ +৩৯ ৩২০০৪১২৫৪০ (WIND) ইমেইলঃ info@amiopari.com
ঠিকানাঃ Via Delle Albizzie-27, 00172 Rome (Centocelle), Italy.
আর যারা আপনাদের ফেসবুকে আমাদের সাইটের প্রতিটি লেখা পেতে চান তারা এখানে ক্লিক করে আমাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গিয়ে লাইক দিয়ে রাখতে পারেন। তাহলে আমিওপারিতে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা আপনার ফেসবুক নিউজ ফিডে পেয়ে যাবেন। ধন্যবাদ।