• Fri. Nov ২২, ২০২৪

আমিওপারি ডট কম

ইতালি,ইউরোপের ভিসা,ইম্মিগ্রেসন,স্টুডেন্ট ভিসা,ইউরোপে উচ্চ শিক্ষা

পোড়া মরিচের কেরামতি!! না পরলে মিস করবেন?

ByLesar

Jan 24, 2014

আমিওপারির এক পাঠকের অনুরোধে তার হয়ে পোস্টটি করা হল।

কাব্য কামরুলঃ শামীম মানুষ হিসাবে বেশ সহজ-সরল। আমার ফোন পেলেই লম্বা এক সালাম। হয়ত, মোবাইলে এক টাকা খরচ হয় আমাদের সালাম বিনিময়েই ! শামীম একজন ওয়েডিং ক্যামেরাম্যান। বিয়ে ও অনুষ্ঠান-পার্বনে তিনি ভিডিওগ্রাফি করেন। ভিডিও সম্পাদনার ক্ষেত্রেও রয়েছে তার দারুণ হাত। একাডেমিক তেমন কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা তার নেই। নিদারুণ বিনয়ী মানুষ। মোটামুটি পেটে-ভাতে তার জীবন চলে। দারিদ্রতাই যেন তার নিত্যসঙ্গী।
শামীমের দাঁতগুলো বেশ খানি উঁচু। তাই একটা মৃদু হাসি লেগে থাকে তার মুখাবয়বে। সে কষ্টে থাকলেও হাসিটুকুর আড়ালে পরে থাকে তার কষ্টগুলো। তার মুখ দেখে বোঝার উপায় নেই, তিনি কষ্টে আছেন।
তার দুই বছরের শিশুর একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেল সেদিন। দুই টাকার নোট নিয়ে খেলা করতে করতেই টাকার ছেড়া অংশ নাকের ভেতর ঢুকে যায় শিশুটির। দুধের শিশুর সে কি চিৎকার। ঘটনার আকস্মিকতায় শামীম কিছুটা হতভম্ভ। নিজে একটু প্রাথমিক চিকিৎসার চেষ্টা করলেন। কিন্তু কোনভাবেই তিনি টাকার টুকরোটি নাক থেকে বের করতে পারলেন না। দ্রুতবেগে তিনি স্থানীয় এক হাসপাতালে গেলেন। মীরপুরে অবস্থিত হাসপাতালটির বেশ নামডাক। অত্যাধুনিক হাসপাতাল ! হাসপাতালেই গিয়েই তিনি বেজায়রকম ফরমালিটির শিকার। এই দিকে তার ছেলের অবস্থা বেশ করুণ। পাঁচশত টাকা ভিজিট দিয়ে ডাক্তারের দেখা মিললো। ডাক্তার পরখ করে বললেন,এটা বের করতে আপনার দশহাজার টাকা খরচ পড়বে। শামীম ডাক্তারের কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লেন। বিনয় সহকারে ডাক্তারকে বললেন, স্যার আমি গরিব মানুষ। এতো টাকাতো দিতে পারবো না। ডাক্তার নির্লিপ্ত কণ্ঠে বললেন,এটা এ কাজের জন্য খুবই কম টাকা। লাবএইডে গেলে এর জন্য ২০/৩০ হাজার টাকা খরচ পড়বে। যান,ওখানে যান। চমৎকার এক ব্যাবসায়িক কৌশলও উপস্থাপন করলেন ডাক্তার সাহেব। শিশুর কান্নার সঙ্গে শামীমেরও কান্না যোগ হলো। তিনি ডাক্তারকে অনেক আকুতি-মিনতি করতে থাকেন। শামীম প্রস্তাব দিলেন তিন হাজার টাকার। ডাক্তার সাহেব শামীমের প্রস্তাব শুনে ক্ষেপে গেলেন। বললেন,এটা কি মাছের বাজার পাইছেন ?
শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে এক সময় ক্লান্ত হয়ে পড়লো। তার বাবার ঘাড়ে মাথা রেখে তখন ডুকরে ডুকরে কাঁদছে নিষ্পাপ শিশুটি। একটি শিশুর কষ্টকর কান্নাও ডাক্তারের মন ভিজলো না।
শামীমের পাশের বাড়ির মফিজ চাচা ছুটে আসলেন শিশুটির দুর্গতির কথা শুনে। তিনি সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন একটি পোড়া মরিচ।

মফিজ চাচা অনেক বুদ্ধিমান মানুষ। তার আচার ভঙ্গিতে একটা নেতা নেতা ভাব। সরাসরি তিনি ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকে পড়লেন। ডাক্তারের সামনেই পোড়া মরিচ ভেঙ্গে শিশুটির নাকের সামনে ধরলেন। পোড়া মরিচের ঝাঁজ শিশুটির নাকে লাগতেই বিকট একটা হাচি দিলো সে। এবং হাচির সঙ্গেই বেরিয়ে গেল টাকার টুকরোটি।
এদিকে শামীমের টাকার দুশ্চিন্তাও যেন টাকার টুকরোর মতো বেরিয়ে গেল তার মন থেকে। অতঃপর ডাক্তার নামের এক কসাইয়ের হাত থেকেও বেঁচে গেলেন বন্ধু ক্যামেরাম্যান, ভিডিওগ্রাফার শামীম।

Lesar

আমিওপারি নিয়ে আপনাদের সেবায় নিয়োজিত একজন সাধারণ মানুষ। যদি কোন বিশেষ প্রয়োজন হয় তাহলে আমাকে ফেসবুকে পাবেন এই লিঙ্কে https://www.facebook.com/lesar.hm

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version