আগামী বছর বাজারে আসছে সৌরশক্তিচালিত রিকশা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ড. এম শামীম কায়ছার ও মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) প্রভাষক আবু রায়হান মো. সিদ্দিক মিলে তৈরি করেছেন ৭০ হাজার টাকা দামের এই রিকশা।
যেভাবে উৎপাদিত হবে শক্তি:
ড. শামীম কায়ছারের উদ্ভাবিত এ রিকশায় শক্তি সরবরাহ করবে দুটি সৌর প্যানেল। এগুলো থাকবে রিকশার হুডের ওপর। সূর্যালোক সংগ্রহ করে প্যালেন দুটি সে শক্তি সরবরাহ করবে ব্যাটারিতে। ড. কায়ছার বললেন, ‘রিকশা চালাতে সাধারণত ৪৮ ভোল্ট শক্তি লাগে। তবে আমাদের দুটো সোলার প্যানেল ২৪ ভোল্ট শক্তি উৎপাদনে সক্ষম। এ জন্য একটি কনভার্টার ব্যবহার করেছি, যা ২৪ ভোল্টকে ৪৮ ভোল্টে রূপান্তরিত করে। এটা চারটা সোলার প্যানেল বসিয়েও করা যেত। তবে তাতে অনেক জায়গা লাগত। রাস্তার ঝাঁকুনিতে সেগুলো পড়ে গিয়ে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও ছিল।’চট্টগ্রামের একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বেশ কিছুদিন আগে সৌরশক্তির রিকশা বাজারজাত করার ঘোষণা দিয়েছিল। তবে নানা সমস্যায় আটকে গিয়ে তাঁরা সেগুলো বাজারে আনতে পারেনি। ‘ওদের রিকশায় চারটি প্যানেল ছিল। তবে মাইক্রোকন্ট্রোলার ছিল না। ফলে নানা সমস্যা হতো। আমরা এসব সমস্যা কাটিয়ে সহজ পদ্ধতিতে এটা তৈরি করতে পেরেছি’, বললেন ড. কায়ছার।
আছে নানা সুবিধা:
‘আমাদের দেশে গরমকালে গড়ে ৮.০৩ পরিমাণ সৌরশক্তি থাকে; শীতকালে ৫.০৫ সারা বছরের হিসাবে আমরা প্রতিদিন গড়ে ৪-৬.০৮ সৌরশক্তি পেয়ে থাকি। এ প্রাকৃতিক শক্তি কাজে লাগিয়ে রিকশা চালানোই আমাদের বড় সাফল্য’- জানালেন ড. কায়ছার। উদ্ভাবক জানালেন, আমাদের রিকশায় মাইক্রোকন্ট্রোলার ব্যবহার করা হয়েছে। এতে রিকশার গতি নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে শক্তি সঞ্চয়সহ অনেক কিছুই করা সম্ভব। উদাহরণ দিয়ে তিনি বললেন, ‘যখন রিকশায় যাত্রী থাকেন না, তখন এ মাইক্রোকন্ট্রোলার দিয়ে শক্তি সঞ্চয় করা যাবে। ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোটর থেকে ব্যাটারিতে শক্তি সরবারহ বন্ধ থাকবে। এতে রিকশার গতি কমে যাবে, আর সৌরশক্তি ঠিকই সঞ্চিত থাকবে। শক্তি সরবরাহ কখন চালু বা বন্ধ হচ্ছে, চালক সেটি বুঝতেও পারবেন না। মাইক্রোকন্ট্রোলার দিয়ে রিকশার একটা নির্দিষ্ট গতিও নির্ধারণ করে দেওয়া যায়। এতে চালক ইচ্ছা করলেও বেশি গতি তুলতে পারবেন না।’ এ প্রসঙ্গে আরেক গবেষক আবু রায়হান মো. সিদ্দিক বললেন, ‘গবেষণার মাধ্যমে এর কার্যকারিতা আরো বাড়ানো সম্ভব। আমরা প্রথমবারের মতো রিকশায় মাইক্রোকন্ট্রোলার সফলভাবে ব্যবহার করতে পেরেছি। মাইক্রোকন্ট্রোলারের মাধ্যমে মোটরের এনার্জি ইনপুট নিয়ন্ত্রণ করে ব্যাটারি চার্জের স্থায়িত্ব আরো বাড়ানো সম্ভব। তখন হয়তো টানা ১০ থেকে ১২ ঘণ্টাও চালানো যাবে।’ এখন সৌরশক্তিচালিত রিকশাগুলো চার্জের পর টানা সাত থেকে আট ঘণ্টা চলে।
কয়েক দিন যদি টানা কুয়াশা থাকে, সূর্যের মুখ দেখা না যায় বা মুষলধারে বৃষ্টি নামে, তাহলে কিভাবে ব্যাটারিতে চার্জ হবে- এ প্রশ্নের জবাবে ড. কায়ছার জানালেন, ‘এ সমস্যার কথা মাথায় রেখেই জরুরি অবস্থায় বিদ্যুতের মাধ্যমে ব্যাটারি চার্জ দেওয়ার সুবিধা রাখা হয়েছে। ফলে এ উপায়ে সৌরশক্তির পাশাপাশি প্রচলিত পদ্ধতিতেও বাটারি চার্জ করা যাবে।’ তাহলে কি সৌরশক্তির ওপর ভরসা না করে বিদ্যুতে চার্জ দিতে আগ্রহী হবেন না চালকরা- এ প্রশ্নের জবাবে আবু রায়হান মো. সিদ্দিক বললেন, ‘বিদ্যুতে নিয়মিত চার্জ দিলে খুব দ্রুত ব্যাটারি নষ্ট হয়। ফলে নিজের স্বার্থেই চালকরা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিদ্যুতের আশ্রয় নেবেন না।’
[[ আপনি জানেন কি? আমাদের সাইটে আপনিও পারবেন আপনার নিজের লেখা জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বা আপনার এলাকার খবর তুলে ধরতে এই লেখায় ক্লিক করে জানুন এবং তুলে ধরুন। নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান। আর আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে রয়েছে অনেক মজার মজার সব ভিডিও সহ আরো অনেক মজার মজার টিপস তাই এগুলো থেকে বঞ্চিত হতে না চাইলে এক্ষনি আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে লাইক দিয়ে আসুন। এবং আপনি এখন থেকে প্রবাস জীবনে আমাদের সাইটের মাধ্যমে আপনার যেকোনো বেক্তিগত জিনিসের ক্রয়/বিক্রয় সহ সকল ধরনের বিজ্ঞাপন ফ্রিতে দিতে পাড়বেন। ]]