নাজমুল হোসেন,ইতালি থেকে ……………….প্রবাসী বাঙালি এক নারী শিক্ষক ও লেখিকা তার কলম দিয়ে নিরবে কাজ করে যাচ্ছেন। কিছু দিন পূর্বে তিনি ইতালির মিলানে তার এক বোনের বাসায় বেড়াতে আসলে আমার সাথে পরিচয় হয়। বাংলা ভাষার শিক্ষকতা করেন শুনে আলাপচারিতার মধ্য দিয়ে কিছু কথা লিখে রাখলাম। সেই আলাপচারিতার কিছু পাঠকদের জন্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি ।
সুইডেনের স্টকহলম শহরে স্থায়ী বসবাস। ১৯৮৯ সালে পারি দেন প্রবাসে। প্রবাস জীবন যাপন করে ও স্বাধীন বাংলা ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের ভাষা কে এবং দেশের মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই ভাষার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন এই প্রবাসী নারী।প্রবাসে ভাষা শিক্ষা গ্রহনকরেন এবং ১৯৯৫ সাল থেকে বাংলা ভাষা শিক্ষার উপর শিক্ষকতা শুরু করেন। সরকারী ভাবে ভাষা শিক্ষা কেন্দ্রে প্লে গ্রুপ থেকে কলেজ পর্যন্ত প্রায় কয়েক হাজার ছাত্র ছাত্রী ভাষা শিক্ষা গ্রহন করছে। ৬২ টি ভাষার উপর ৩৫৫ জন শিক্ষক এই শিক্ষা কেন্দ্রে কাজ করে থাকেন। বাংলাদেশী প্রবাসী ছেলে মেয়ের সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক। প্রবাসে শিক্ষকতার পাশা পাশি তিনি কবিতা লেখালেখির সাথে জড়িত। ইতিমধ্যে তিনি একটি কবিতার বই তোমার ভালবাসা নামে বাংলাদেশের ৩৫ তম একুশের বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে রাজনীতির সাথে তার যোগাযোগ ছিল বেশ ঘনিষ্ঠ। মূলত সেই কারণেই তার লেখায় সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন অসঙ্গতি বিষয়ে প্রতিবাদী মনোভাব স্পষ্ঠ হয়ে ফুঠে ওঠে। ইউরোপে বসবাসের সুবাদে সেখানকার গণতান্ত্রিক চিন্তা চেতনার পাশা পাশি স্বদেশের রাজনৈতিক দৈনতা তাকে পীড়া দেয়। আর এই বোধ থেকে তিনি রাজনৈতিক অসঙ্গতিগুলো ব্যাঙ্গাত্মক কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ করেন। এছাড়া ও তিনি মানুষের প্রেম ভালবাসা বিষয়ক কিছু কবিতা লিখে থাকেন ,যা মূলত দেশ ও মানুষের জন্য। সেই কারণেই তিনি তার প্রথম কবিতার কাব্যগ্রন্তের নাম দিয়েছেন তোমার ভালবাসা।
লেখিকার পুরো নাম মালিহা ফেরদৌস হক। পিতার নাম সৈয়দ মহিউদ্দিন দেওয়ান। মাতার নাম সৈয়দা আসিয়া খাতুন। ১৯৬৫ সালে ১ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে জন্ম। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সবে মাত্র স্কুলে যাওয়া শুরু করেন। বাবা মায়ের সপ্তম সন্তানের মধ্যে তৃতীয় সন্তান হিসাবে ভালই ভালবাসা পেয়ে বড় হয়েছেন। বাবা সরকারী কর্মকর্তা হওয়ার সুবাধে দেশের বিভিন্ন জেলায় ৭ বোনের সাথে কলরব পরিবেশে বড় হয়ে উঠেছেন। তিনি ছোট বেলা থেকেই সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক এর সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। প্রাথমিক শিক্ষা জীবন ঢাকায়,তারপর খুলনা এবং যশোর গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি,যশোর মহিলা কলেজ থেকে এইসএসসি পাশ করেন। ১৯৮৯ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে মাস্টার্স শেষ করেন। তারপরে থেকে তিনি ইউরোপ এ চলে আসেন। উনার স্বামী একজন সাংবাদিক। নাম মোনাজ হক। তিনি জার্মানির একটি পত্রিকার সাউথ এশিয়ান প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করছেন। পাশা পাশি তিনি জার্মানিতে সাপ্তাহিক আজকের বাংলা নামে একটি পত্রিকার সম্পাদক হিসাবে আছেন। পারিবারিক জীবনে ৩ কন্যা সন্তানের জননী মালিহা হক।
প্রবাসী ছেলে মেয়েদের কাছে বাংলা ভাষা সম্পর্কে তিনি বলেন,বেশ আগ্রহ আছে তাদের মধ্যে। তারা শিখতে আগ্রহী,তাদের কে আরো উত্সাহিত করতে তিনি তাদের জন্য বাংলা ভাষার উপর ৩ টি সহজতর বই বের করেছেন। বইগুলো হচ্ছে – ১) লেখাপড়া ২ ) হাতে শিক্ষা ৩ ) বর্ণমালা বাংলা ও গণিত। এর মধ্যে আমার বাংলা প্রথম,দ্বিতীয় ও তৃতীয় খন্ড। তিনি তার শিক্ষকতায় প্রবাসী ছেলে মেয়েদের সহজ পদ্ধতিতে বাংলা ভাষা শিক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই ছেলে মেয়েরা যা তে করে তাদের বাসায় গিয়ে ও বাংলা বলতে ও শিখতে পারে সেই জন্য তাদের পরিবার গুলোকে বাংলা ভাষায় কথা বলার চর্চা করে যাচ্ছেন। তিনি মনে করেন এই ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের আত্মার সন্তুষ্টি আসবে তার ভাষার শিক্ষার কাজ ও কর্মের মাধমে।
প্রথম কবিতার বই সম্পর্কে বলেন,ইউরোপে থাকে সুইডেন ও জার্মানির বাঙালি সমাজে এক সৃজনশীল উঠতি কবি ।বহুদিন থেকেই কবিতা লেখে এবারই ওঁর প্রথম কবিতার বই “তোমার ভালবাসা” নন্দিত প্রকাশন থেকে প্রকাশিত হলো। তোমার ভালবাসা কবিতার বইটিতে ৮০ টি কবিতা স্থান পেয়েছে (মুল্য ১৫০ টাকা) বেশির ভাগ কবিতা একইসাথে ভালবাস ও কঠোর বাস্তবতার নিরিখে লেখা, ওঁর ভালোবাসার কবিতায় মাঝে মধ্যে কোথায় যেন একটা অনিশ্চয়তা নিরবধি এমনকি দারুন রহস্যের চাপ ও রয়েছে । এছাড়াও অনেক কবিতায় বিদ্রোহের চাপ লক্ষনীয় হয়তবা ওঁর ছাত্রজীবনের সচেতন বামপন্থী রাজনীতি এর জন্যে দায়ী । সমাজকে কটাক্ষ করা কবিতার আর ভালবাসার সন্ধানে এই কাবগ্রন্থ টি একটি এক্সপেরিমেন্টাল পদক্ষেপ বৈকি। ওঁর কবিতাগুলি নাতিদীর্ঘ, আর তাই হয়তবা পাঠককে সহজেই ধরে রাখতে পারে,আর অবচেতন মনে পাঠককে কবিতার ভাবসম্প্রসারণ করতে বাধ্য করে।
[[ আপনি জানেন কি? আমাদের সাইটে আপনিও পারবেন আপনার নিজের লেখা জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বা আপনার এলাকার খবর তুলে ধরতে জানতে “এখানে ক্লিক করুণ” তুলে ধরুন নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান। ]] আর আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে রয়েছে অনেক মজার মজার সব ভিডিও সহ আরো অনেক মজার মজার টিপস তাই এগুলো থেকে বঞ্চিত হতে না চাইলে এক্ষনি আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে লাইক দিয়ে আসুন। আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে যেতে এখানে ক্লিক করুন। এবং আপনি এখন থেকে প্রবাস জীবনে আমাদের সাইটের মাধ্যমে আপনার যেকোনো বেক্তিগত জিনিসের ক্রয়/বিক্রয় সহ সকল ধররেন বিজ্ঞাপন দিতে পাড়বেন। জানতে এখানে ক্লিক করুন।