গতকাল তথা শুক্রবার রাতে প্যারিসের বিভিন্ন স্থানের রেস্টুরেন্ট, বার ও স্টেডিয়ামসহ কমপক্ষে ছয়টি স্থানে একযোগে বন্দুক ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। উক্ত হামলায় ফ্রান্সের প্যারিসে কয়েকটি সন্ত্রাসী শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। হামলা হয়েছে থিয়েটার, স্টেডিয়াম ও রেস্টুরেন্টসহ ছয়টি স্থানে। এসময়, পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে সাত হামলাকারী। হামলার পর জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে ফ্রান্সে। বন্ধ করা হয়েছে সীমান্ত।উৎসবের শহর থেকে শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই নিস্তব্ধতার নগরীতে পরিণত হয় প্যারিস। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ভীতি আর শঙ্কা। আহত ও স্বজন হারাদের আহাজারি।
পুরো হামলাটি ছিল সংঘবদ্ধ। হামলা হয়েছে থিয়েটার, স্টেডিয়াম ও রেস্টুরেন্টের মত জনসমাগমপূর্ণ স্থানে।সবচেয়ে বড় হামলাটি হয়েছে বাটাক্ল্যান থিয়েটার হলে। এসময় একটি রক কনসার্ট চলছিল সেখানে। উপস্থিত দর্শকদের জিম্মি করে সেখানে নির্বিচার গুলি চালায় হামলাকারীরা। পরবর্তীতে পুলিশ এসে উদ্ধার করে তাদের। এসময় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় চার হামলাকারী।
আত্মঘাতি হামলা হয়েছে ফ্রান্স স্টেডিয়ামেও। ফ্রান্স ও জার্মানির ফুটবল খেলা শেষেই বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে স্টেডিয়াম। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো স্টেডিয়ামজুড়ে। এছাড়া, হামলা হয়েছে প্যারিসের চারটি রেস্টুরেন্টে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ফ্রান্সে সংঘটিত সবচেয়ে বড় হামলা।হামলার পর জরুরী ভিত্তিতে নিরাপত্তা উপদেষ্টা মন্ডলীর সঙ্গে জরুরী বৈঠক এর পর তাৎক্ষণিক জাতীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ ঘোষণা করেন জরুরী অবস্থা, তিনি বলেন নিরাপত্তার প্রয়োজনে তল্লাশি হতে পারে যেকোনো বাসায়।হামলার পর দেয়া ভাষণে হামলাকারীদের প্রতি ক্ষমাহীন জবাব দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ।ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া ওলাঁদ বলেন, “প্রিয় দেশবাসী, নজিরবিহীন সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে ফ্রান্স। শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। পরিস্থিতি ভয়াবহ। সন্ত্রাস মোকাবেলায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। নতুন করে যাতে আর হামলা না হতে পারে তা নিশ্চিত করতে কাজ করবে তারা। মন্ত্রীসভার জরুরী বৈঠক ডাকা হয়েছে।”
হামলার পর ফ্রান্সের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। হামলার নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা।যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, “ফ্রান্স আমাদের পুরনো মিত্র, ফরাসী ও আমেরিকান জনগণ অনেকবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাড়িয়েছে। আমি পরিষ্কার করে জানাতে চাই, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ বিরোধী লড়াইয়ে আমরা ফ্রান্সের পাশে আছি।”
তবে এই সন্ত্রাসী হামলায় এ পর্যন্ত কোন প্রবাসী বাংলাদেশী হতাহতের খবর এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।তবে অনেকেই রাতে বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে কাজ করার ফলে ফিরতে পারেনি নিজ নিজ বাসায়। এ ঘটনায় বর্তমানে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ইতিমধ্যে ইতালির রোম,মিলান,ভেনিস সহ বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফ্রান্স এর পর এবার এই হামলা ইতালিতে হতে পারে বলে ইতালির বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় লেখালেখি হচ্ছে।
ফ্রান্সের উক্ত ঘটনা নিয়ে প্রান্সের বাঙালি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের প্রতিনিধিদের করা ভিডিও রিপোর্টের লিঙ্ক গুলো একসাথে আপনাদের জন্য নিন্মে তুলে ধরা হল।আপনারা চাইলে প্রতিটি লিংকে ক্লিক করে করে বিভিন্ন প্রতিনিধিদের করা রিপোর্ট গুলো দেখে নিতে পারেন।
ফ্রান্সের বাংলাভিশন নিউজ এর প্রতিনিধি “ফয়সাল আহাম্মেদ দ্বীপের” করা ভিডিও রিপোর্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুণ।
ফ্রান্সের কয়েকটি বাঙালি টিভি চ্যানেলে কর্মরত প্রতিনিধি “নুরুল ওয়াহিদের” রিপোর্টটি দেখতে এখানে ক্লিক করুণ।
ফ্রান্সের চ্যানেল এস ও জমুনা টিভিতে কর্মরত প্রতিনিধি “এম এ হাসেম” এর রিপোর্ট গুলে দেখতে এখানে ও এখানে ক্লিক করুণ।
ফ্রান্সের সন্ত্রাসী হামলার পর ইতালির প্রধানমন্ত্রী “মাত্তেও রেনসির” দেওয়া ভাষণটি উনার অফিসিয়াল ফেসবুক প্রফাইলে গিয়ে দেখে নিতেপারেন।এখানে ক্লিক করুণ।