প্রিয় আমিওপারির সম্মানিত পাঠক বৃন্দ শুরুতেই মহান সৃষ্টি কর্তার নাম নিয়ে শুরু করছি।আশা করি আপনারা মহান আল্লাহ্র অশেষ রহমতে ভালোই আছেন। যারা ইতালি ও ইউরোপের ইমিগ্রান্ত থেকে শুরু করে যেকোনো বিষয়ের তথ্য তথা কিভাবে কি করবেন? ইউরোপের আপনার সমস্যা ও তার সমাধানের জন্য ভিজিট করুন আমিওপারির ওয়েব সাইট। (www.amiopari.com) যেখানে ইউরোপ সংক্রান্ত সকল তথ্য রয়েছে, যা ইউরোপে আপনার জীবনকে আরও সহজ ও গতিময় করে তুলতে সাহায্য করবে।
গত বেশ কিছু দিন ধরেই ইতালি সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশী প্রবাসীদের মুখে মুখে একটি কথা শুনা যাচ্ছে। যে, আগামী ১৩ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর ২০১৪ তে নাকি ইতালিতে অবৈধ অভিবাসীদের ধরে ধরে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তাহলে আসুন জেনে নেই এই সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু তথ্য।
সবার আগে কিছু কথা না বললেই নয়। যে ইতালিতে আমাদের মধ্যে কিছু ধরনের প্রবাসী রয়েছেন, যারা নিজেরা ভালো ইতালিয়ান বলতে পারেন না অথবা তেমন কোন ধারণা রাখেন না ইউরোপের আইন সম্পর্কে। আর তাই এরকম কিছু সংখ্যক ব্যক্তিবর্গ কোন কিছু বুঝে না বুঝে নিজে থেকেই বানিয়ে নানা ধরণের প্রচারণা শুরু করে দেন যেমন শুনেছে (১) এটাকে বাড়িয়ে (১০০) বানিয়ে ফেলেন। কাজেই আমরা সকলের কাছে অনুরোধ করবো আপনারা এসকল ব্যক্তিদের কথায় কান দিবেন না? কারন একটি কথা রয়েছে যে, অল্প বিদ্যা ভয়ংকর। আর এখানে তারা তাদের সেই অল্প বিদ্যার পূঁজিতে নিজে নিজে যা বুঝে, তাই দিয়েই আপনাদের মাঝে এরকম বিভ্রান্ত মূলক তথ্য গুলো তুলে ধরে। যেমন কিছু দিন আগে গুজব ছড়েছিলো!! যে, ইতালির নরমান ওয়ার্ক পারমিট তথা যেসকল কাগজের গায়ে লাভোরো উনিকো লেখা রয়েছে তারা নাকি সেই কাগজ দিয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশে কাজ করতে পারবে? যেটা সম্পূর্ণ বানানো একটি তথ্য ছিল যা নিয়ে আমরা বিস্তারিত একটি পোস্ট করেছিলাম সেই লেখাটি পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করে পড়ে নিতে পারেন।
এবার আসুন ১৩ থেকে ২৬ অক্টোবর ২০১৪ এর প্রসঙ্গে।
শুধু ইতালি নয় সমগ্র ইউরোপ জুড়েই ১৩ থেকে ২৬ অক্টোবর এর জন্য ইউরোপিয়ান পুলিশ মিলে একটি মিশনে নামছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে “Operation Mos Maiorum”। যার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে। কিভাবে ইতালি সহ ইউরোপে অবৈধ অভিবাসীরা প্রবেশ করছে তথা অনুপ্রবেশ পয়েন্ট সনাক্ত করা। এবং কিভাবে তারা সেঞ্জেনভুক্ত এলাকায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবেশ করছে? এবং কে বা কারা এদের সাহায্য করছে? মানে পাচারকারীদের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা ও এদের গ্রেফতার করাই এই অপারেশনের মূল উদ্দেশ্য। এবং ১৩ অক্টোবর থেকে ইতালি সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সাধারণ পুলিশের তুলনায় অনেক বেশি পুলিশের আলাদা আলদা গ্রুপ দেখা যাবে।কাজেই যারা অবৈধ রয়েছেন হতে পারে তাদের পুলিশ ধরে কোন ধরণের প্রশ্ন করতে পারে, বা আপনাকে ওদের টার্গেট হিসেবে কাজে লাগাতে পারে। কিন্তু তার মানে এই না যে আপনাকে ধরে দেশে পাঠিয়ে দিবে। কাজেই এই বিষয় নিয়ে, অযথা ঘাবড়ানোর তেমন কোন কারন নেই। তবে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এই কয়দিন নিজেকে একটু সাবধানে রাখা বা চলাচল করাই ভালো, কেননা তারা হয়তো আপনাকে ধরে শুধু শুধুই হয়রানী করবে। তবে যদি আপনাকে নিয়ে কোন সমস্যা করেই ফেলে? তখন আপনি পলিটিকাল এসাইলাম(রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ) বা হিউমান রাইটস( মানবাধিকার এর আইনে আশ্রয়) নিতে পারবেন।
পলিটিকাল এসাইলাম বা রাজনৈতিক আশ্রয় কি?
মনে রাখবেন জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা’র মতে প্রতিটি মানুষের অধিকার রয়েছে নিধন থেকে নিজেকে বাঁচাবার জন্য অন্য দেশে বসবাস করবার আশ্রয় প্রার্থনা করবার। যারা এই পথে আসেন তাদের ‘রেফুজি’ স্ট্যাটাস দিয়ে তাদের এসাইলাম আবেদন বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়। ১৯৫১ সালের জাতিসংঘ সম্মেলনে ‘রেফুজি’ বলতে ‘নিজ দেশে জাতি, বর্ণ, গোত্র অথবা রাজনৈতিক মতামত জনিত কারণে নিরাপত্তা পেতে ব্যর্থ অথবা ভীত হয়ে অন্য দেশে আসা’ কাউকে বোঝানো হয়। এই ভীত ব্যক্তি শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু দেশে উপস্থিত হয়ে বলতে হয়, “দেখো, আমার লাউ কেড়ে নিয়েছে, আমাকে বকেছে এবং সর্বোপরি আমাকে গুম করে দেবার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, আমাকে বাঁচাও”।আর এটাই হচ্ছে রাজনৈতিক আশ্রয়। কাজেই এই ক্ষেত্রে আপনার ভয় পাওয়ার কিছুই নেই।
আমরা আবারও সবার উদ্দেশ্যে লক্ষ্য করে বলছি যে, ১৩ থেকে ২৬ অক্টোবর ২০১৪ তে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পুলিশ শুধু কিভাবে অবৈধরা ইতালি সহ ইউরোপে প্রবেশ করে তার বিস্তারিত তথ্য ও এই ক্ষেত্রে পাচারকারী চক্রকে সনাক্ত করাই তাদের মূল লক্ষ্য। আপনাকে ধরে দেশে পাঠানো নয়!!
আর যদি আপনাদের কোন সমস্যা বা মনে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে সরাসরি আমিওপারি টিম এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আর আমাদের সাথে যোগাযোগ করার বিস্তারিত জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন।
আর যারা আপনাদের ফেসবুকে আমাদের সাইটের প্রতিটি লেখা পেতে চান তারা এখানে ক্লিক করে আমাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গিয়ে লাইক দিয়ে রাখতে পারেন।তাহলে আমিওপারিতে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা আপনার ফেসবুক নিউজ ফিডে পেয়ে যাবেন। ধন্যবাদ।