ঠিক স্বর্গ নয়, কিন্তু উপস্বর্গ বলা চলে, কেননা স্বর্গ বলতে আজও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ তবে ওইসিডি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১২ সালে জার্মানি ছিল ঈপ্সিত দেশ হিসেবে দ্বিতীয়৷ সে’বছর জার্মানিতে পাড়ি জমান চার লাখ অভিবাসী৷
অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংগঠন ওইসিডি-র বিবরণে অভিবাসনের ক্ষেত্রে জার্মানি ওইসিডি-র ৩৪টি দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে৷ ২০১২ সালে জার্মানিতে যে সব অভিবাসীদের আগমন ঘটে, তাঁদের অধিকাংশ আসেন রোমানিয়া, বুলগেরিয়া এবং পোল্যান্ড থেকে৷ এছাড়া কিছু মানুষ আসেন দক্ষিণ ইউরোপের সংকট-পীড়িত দেশগুলি থেকে৷অভিবাসনের ধারা যে কোনদিকে বইবে, তা আগে থেকে বলা শক্ত এবং তার নানা কারণ থাকতে পারে৷ ব্রিটেনে ২০১২ সালে তিন লাখ অভিবাসী নথিভুক্ত করা হয়েছে: এই সংখ্যা ২০০৩ সাল যাবৎ নিম্নতম৷ স্পেন আর ইটালিতেও অভিবাসীদের আগমনের সংখ্যা কমেছে লক্ষণীয়ভাবে: ২০১১ সালের তুলনায় যথাক্রমে ২২ ও ১৯ শতাংশ৷
ইইউ-বহির্ভূত দেশগুলি থেকে অভিবাসীদের আগমন ২০০৮ সালের বিশ্বব্যাপী আর্থিক সংকট যাবৎ কমেই চলেছে৷ অপরদিকে এই নতুন অভিবাসীদের আগমনের ফলে সরকারি তহবিলের উপর বিশেষ চাপ পড়েনি৷ অভিবাসীদের শিক্ষাদীক্ষাও মন্দ নয়, বলে জানিয়েছে ওইসিডি৷
এ সব সত্ত্বেও ইউরোপ জুড়ে অভিবাসন-বিরোধী দলগুলি সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ বর্ধিত করার ডাক দিয়ে চলেছে৷ এক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের দক্ষিণপন্থিদের ধারণা আলাদা৷ নেদারল্যান্ডসে গের্ট উইল্ডার্স-এর স্বাধীনতা দল মুসলিম দেশগুলি থেকে অভিবাসন বন্ধ করার ডাক দিয়েছে৷ ফ্রান্সের উগ্র দক্ষিণপন্থি ন্যাশনাল ফন্ট দল নতুন অভিবাসীদের সংখ্যা দশ হাজারে সীমিত রাখতে চায়৷ জার্মানির ক্ষেত্রে তার শিল্প-অর্থনীতি এবং জনসংখ্যাগত কারণে অভিবাসন অপরিহার্য: এখন যে সেই অভিবাসীরা অধিতকতর পেশাগত দক্ষতা নিয়ে আসছেন এবং আরো তাড়াতাড়ি কাজ পাচ্ছেন, তা-তে স্বভাবতই অভিবাসনের পরিমাণ এক বছরে – ২০১১ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে – ৩৮ শতাংশ বাড়া সত্ত্বেও জার্মানিতে কাউকে বিশেষ চিন্তিত দেখা যাচ্ছে না৷ এবং অন্যান্য ইউরোপের দেশ গুলোর তুলনায় বর্তমানে জার্মানিতে প্রচুর অভিবাসী আগমন ঘটেই চলেছে। এভাবে চলতে থাকলে ২০১৫ এর শেষের দিকে এর সংখ্যা ৪১ শতাংশ গিয়ে পৌছবে।