সুইজারল্যান্ড থেকে রফিকুল ইসলাম আকাশ, ৩১ মার্চ ২০১৪ : মঙ্গলবার জেনেভার ইকুমেনিকেল সেন্টারে কমিশন অব দি চার্চেস অন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, ওয়ার্ড কাউন্সিল অব চার্চেস ও বাংলাদেশ মাইনরিটি কাউন্সিলের উদ্যোগ এ আয়োজিত মানবাধিকার ও মানব নিরাপত্তা নিরাপত্তা বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে আগত আলোচক বৃন্দ দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রমের উপর আলোকপাত করেন ঘাদানিক নেতা শাহরিয়ার কবির। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে পশ্চিমা বিশ্বের কোন কোন দেশ, সংস্থা এবং গণমাধ্যমে নেতিবাচক ভুমিকার সমালোচনা করে বলেন, অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে নিজস্ব আইনের আওতায় একাত্তরের আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করলেও উদ্দেশ্য মূলক ভাবে একে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রবনতা দুর্ভাগ্যজনক। তিনি সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলেন, যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে জামায়াত ইসলামী দেশে যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে নানান অপচেষ্টায় লিপ্ত। এই সংগঠন টি সন্ত্রাসের হোতা এবং অবিলম্বে একে নিষিদ্ধ ছাড়া দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি জামাতে ইসলামী কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহব্বান জানান।
গোলটেবিলে মানবাধিকার নেত্রী রজালিন ডি কস্টা বাংলাদেশের সামাজিক,রাজনইতিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, দেশে ধর্মের নামে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসন যন্ত্রের অভ্যন্তরে ঘাপটি মেরে থাকা বহিরাগত অপরাধীদের মদদ দিচ্ছে যা অত্যন্ত ন্যাকারজনক। একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি বিদেশী বন্ধুদের সহযোগিতা কামনা করেন।
সুইডেনে হিন্দু, বৌদ্ধ,খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা তরুণ কান্তি তার বক্তব্য সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের ধারাক্রম তুলে ধরেন এবং অবিলম্বে সংখ্যালঘুদের রক্ষার ব্যাপারে সরকার ও আন্তর্জাতিক মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।
বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সভাপতি এডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা ও নারী নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে এজন্য ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠী সন্ত্রাসী গ্রুপ ও সরকারের অভ্যন্তরস্থ গনবিরুধি কুচক্রি মহলকে দায়ী করেন। তৃণমূল থেকে সংগৃহীত সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের অনেক উদাহরন উপস্থাপনের মাধ্যমে তিনি এর প্রতিকার দাবী করেন।
একাত্তর টিভি চ্যানেলের সিইও এবং চলচিত্র নির্মাতা সামিয়া জামান তার বক্তব্য এ সংখ্যালঘু নির্যাতন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ভণ্ডুল প্রয়াসে বিএনপি জামায়াত ও হেফাজতিদের সাম্প্রতিক তাণ্ডবের বিস্তারিত বর্ণনা দেন এবং এর ক্ষেত্র প্রস্তুতে কতিপয় সংবাদ মাধ্যমের গনবিরুধি ভুমিকা তুলে ধরেন। তার বক্তব্য এর সমর্থনে দুটি প্রামাণ্য চিত্র ও প্রদর্শন করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, সেমিনারের অন্যতম উদ্যোক্তা ও সংগঠক-জেনেভা প্রবাসী মানবাধিকার কর্মী রহমান খলিলুর, প্রজন্ম একাত্তরের সভাপতি শাহিন রেজা নূর, অভিনেতা ও নির্দেশক এবং মানবাধিকার কর্মী আল নোমান, ইন্টারন্যাশনাল পীচ ব্যুরোর সেক্রেটারি জেনারেল কলিন আচার, মাইনরিটি সভাপতি অরুন বড়ুয়া। সভাপতিত্ব করেন পর্যায়ক্রমে আয়োজন সংস্থা ডব্লিউসিসির সহকারী সেক্রেটারি ক্রিস্তিন ও পাটরিছিয়া বাউজার।