প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানান, মন্দার কবলে পড়ে গ্রিসজুড়ে এখন আতঙ্ক আর অস্থিরতা। ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি- সব কিছুতেই ধস নেমেছে। তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। রাস্তায় পর্যন্ত বের হতে পারছেন না। মন্দার জন্য অবৈধ অভিবাসীদের দোষারোপ করে গ্রিসের অভিবাসীবিরোধী পার্টির কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন। বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন দোকানে চুরি-ডাকাতির ঘটনা ঘটাচ্ছেন। চলতি বছরেই দুই শতাধিক দোকানে চুরি-ডাকাতি হয়েছে। এ কারণে অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইতালিসহ পাশের দেশে চলে যাচ্ছেন।
আর যেসব প্রবাসী এসব সহ্য করেও গ্রিসে অবস্থান করছেন, তাঁদের আয় দিয়ে খাওয়া ও বাসা ভাড়াই চলে না। দেশে পরিবার-পরিজনের কাছে টাকা পাঠানো তো দূরের কথা, এখন তাঁদের কাছ থেকে নেওয়ার মতো অবস্থা।
এদিকে গত বুধবার গ্রিস থেকে প্রবাসী ৩০ বাংলাদেশি দালালদের মাধ্যমে সাগরপথে স্পিডবোটে করে ইতালি যাওয়ার সময় ধরা পড়েন গ্রিক পুলিশের কাছে। জনপ্রতি তিন লাখ টাকার চুক্তিতে ওই সব প্রবাসী ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ওই সব যুবক এখন গ্রিসের জেলখানায় বন্দি।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানান, গ্রিসের রাজধানী এথেন্স শহরেই বাস করেন প্রায় ১৫ হাজারের বেশি বাংলাদেশি। তাঁদের বৈধ কাগজপত্র বলতে কিছুই নেই। বাংলাদেশিরা কাজ করেন গার্মেন্ট, দোকান অথবা বাসায়। আর যেসব বাংলাদেশি শরণার্থী স্বীকৃতি পান, তাঁরা ছয় মাস মেয়াদি লাল কার্ড পেয়ে থাকেন। ওই কার্ড দিয়ে সাময়িক চলাফেরাসহ কাজকর্ম করতে পারেন। কিন্তু সেই কার্ড এখন আর নবায়নের সুযোগ দিচ্ছে না গ্রিক সরকার।
বাংলাদেশ দোয়েল কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন অব এথেন্সের সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন, ‘স্বপ্নের গ্রিস এখন আর সেই গ্রিস নেই। প্রবাসী বাংলাদেশিদের এখন ঘর থেকে বের হওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে।’
ঢাকার মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকার মোকসেদ আলীর ছেলে মো. জামির আলী ১০ লাখ টাকা খরচ করে দালালদের মাধ্যমে ইরান-তুরস্ক হয়ে পাড়ি দেন গ্রিসে। সেখানে লাল কার্ড পেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ফুল বিক্রি করে দুই বছর ভালো উপার্জন করলেও এখন তিন বেলা খেতেই কষ্ট হচ্ছে। গত সোমবার বিকেলে জামির আলী মোবাইল ফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘যে স্বপ্ন নিয়ে ১০ লাখ টাকা খরচ করে গ্রিসে এসেছিলাম, সেই স্বপ্ন এখন ফিকে হতে চলছে। গ্রিসে চলাচলের জন্য যে রেড কার্ড পেয়েছিলাম সেটাও এখন নিয়ে গেছে পুলিশ। রাস্তায় বের হলেই এখন তারা মারধর করে। এমনকি স্থানীয় লোকজন আমাদের শত্রু মনে করে, অর্থনৈতিক মন্দার জন্য প্রবাসীদের দায়ী করে।’
গ্রিসে একই অবস্থার শিকার মাদারীপুরের কালকিনির আল আমিন। তিনি জানান, হেঁটে এবং কাভার্ডভ্যানে চড়ে আফগানিস্তান, ইরান এরপর তুরস্ক হয়ে গ্রিসে পৌঁছান। কিন্তু সেখানে অবর্ণনীয় দুর্দশায় কাটছে তাঁর দিনরাত্রি। সব সময় ধরা পড়ার ভয়।
প্রবাসী আসলাম হোসেন, কবির ভূইয়া বলেন, ‘গ্রিকরা আমাদের খুব ভালো নজরে দেখে না। ওরা আমাদের ঘৃণা করে। আর পুলিশও সব সময় পিছে লেগে আছে। ধরা পড়লেই সর্বনাশ। সব কিছু কেড়ে নিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেয়।’
প্রবাসী রফিকুল ইসলাম জানান, গ্রিসে চাকরিজীবী প্রবাসীদের অবস্থা অনেক খারাপ। অনেকে বাংলাদেশ থেকে টাকা এনে চলছেন। যাঁদের সামর্থ্য নেই, তাঁরা অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকের কাছে দেশে ফোন দেওয়ার মতো টাকাও নেই।
গ্রিসে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতা জয়নুল আবেদিন বলেন, অভিবাসীবিরোধী পার্টির লোকজন কর্মক্ষেত্রে, রাস্তায়, বাসে সব জায়গায় প্রবাসীদের ওপর চড়াও হয়। সূত্র কালের কণ্ঠ।
[[ আপনি জানেন কি? আমাদের সাইটে আপনিও পারবেন আপনার নিজের লেখা জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বা আপনার এলাকার খবর তুলে ধরতে এই লেখায় ক্লিক করে জানুন এবং তুলে ধরুন। নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান। আর আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে রয়েছে অনেক মজার মজার সব ভিডিও সহ আরো অনেক মজার মজার টিপস তাই এগুলো থেকে বঞ্চিত হতে না চাইলে এক্ষনি আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে লাইক দিয়ে আসুন। এবং আপনি এখন থেকে প্রবাস জীবনে আমাদের সাইটের মাধ্যমে আপনার যেকোনো বেক্তিগত জিনিসের ক্রয়/বিক্রয় সহ সকল ধরনের বিজ্ঞাপন ফ্রিতে দিতে পাড়বেন। ]]