চার্টার্ড একাউন্টেন্ট আতাউর রহমান ১৯৭৭ সাল থেকে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড নগরীতে। ২০০৩ সাল থেকে এখানে বাংলাদেশের অনারারি কনসাল জেনারেলের দায়িত্বে আছেন তিনি। একান্ত আলাপচারিতায় আতাউর রহমান এই প্রতিবেদককে জানান, “প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়ার পর ইউএনডিপি’র কর্তা হিসেবে হেলেন ক্লার্ক কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ ঘুরে এসে আমাকে মেইল করে জানালেন, এটলিস্ট আমি তোমাদের বাংলাদেশ দেখে এলাম”। নিউজিল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নের গুরুত্ব এবং এর সম্ভাব্যতা নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন দেশটিতে বসবাসরত সবচাইতে প্রবীণ এই বাংলাদেশী।
অনারারি কনসাল জেনারেল আতাউর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ তো দূরের কথা, ইন্ডিয়ার মার্কেটের দিকেও এতোদিন সিরিয়াসলি তাকায়নি নিউজিল্যান্ড। এরা সবসময় কমফোর্ট ফিল করে এসেছে ‘নিশ্চিত ও প্রতিষ্ঠিত’ মার্কেট যেমন ইউএসএ, ইউরো জোন, প্যাসিফিক আইল্যান্ডস, কাতার এসবের দিকে। গত বছর দশেক ধরে নিউজিল্যান্ড বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছে তাইওয়ান ও কোরিয়ার মতো টাইগার কান্ট্রির প্রতি। ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের ধারণা ছিল এসব দেশে সবাই গরীব, অভাবের দেশ, এসব দেশ থেকে কোন প্রফিট করা যাবে না। আশার কথা, নিউজিল্যান্ডের লোকদের ইদানিং চোখ-কান খুলতে শুরু করেছে। তারা দেখছে ইন্ডিয়াতে ইনকাম বাড়ছে, একই সাথে বাড়ছে মিডল ক্লাস। উচ্চ পর্যায়ে আমি তাদের বোঝাবার চেষ্টা করি ইন্ডিয়ার মতো আমরাও উঠছি”।
অনারারি কনসাল জেনারেল আতাউর রহমান আরো জানান, “প্রব্লেম হচ্ছে বাংলাদেশ অতীতের মতো এখনো নিউজিল্যান্ডের ‘প্রায়োরিটি’ কান্ট্রি হিসেবে নেই। এরা এখন ব্যস্ত আছে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্ডিয়ার মতো দেশের সাথে ‘ফ্রি ট্রেড’ এগ্রিমেন্ট নিয়ে”। স্বাধীনতার পর গত ৪৪ বছরে বাংলাদেশের কোন সরকার প্রধানের নিউজিল্যান্ড সফর না করা প্রসঙ্গে অনারারি কনসাল জেনারেল বলেন, “আমার লাইন অব কমিউনিকেশন যেহেতু ক্যানবেরার মাধ্যমে তাই ক্যানবেরাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে তথা বাংলাদেশ সরকারকেই মূল উদ্যোগটি নিতে হবে হাই লেভেল স্টেট ভিজিটের ব্যাপারে। এখানকার মন্ত্রী-এমপিদের সাথে আমার যোগাযোগ রয়েছে। নিউজিল্যান্ড ছোট দেশ, মন্ত্রী এমপিদের পাওয়া যায় এবং যাবে। ভালো লবিও করা যাবে যদি ঢাকা ও ক্যানবেরা থেকে উদ্যোগ নেয়া হয়”।