মাঈনুল ইসলাম নাসিম : লিসবনে বাংলাদেশ দূতাবাস থাকলেও ঢাকায় পর্তুগীজ দূতাবাস না থাকায় পর্তুগাল প্রবাসী বাংলাদেশীদের পরিবার-পরিজনদের দৌড়ঝাঁপ করতে হয় ভিসার জন্য সুদূর দিল্লীতে। ঢাকা থেকে দিল্লী শুধু দূর বহুদূরই নয় এক্ষেত্রে তাঁদের জন্য, অর্থ-সময়ের যাচ্ছেতাই অপচয় সেই সাথে পদে পদে পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। সীমাহীন এই কষ্টের দিন অবশ্যই একদিন শেষ হবে, এমন আশাবাদ লিসবনে দায়িত্বরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদের। দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধানকল্পে প্রবাসীদের ন্যায়সঙ্গত দাবীর প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক।
এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “এখানকার বাংলাদেশীদের পরিবার পরিজনরা যাতে কোন প্রকার ভোগান্তি ছাড়া ভিসা সংক্রান্ত যাবতীয় প্রক্রিয়া ঢাকা থেকেই সম্পন্ন করতে পারেন, সেজন্য পর্তুগীজ পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কে ৪টি অপশান আমি দিয়েছি। প্রথমতঃ ঢাকায় তাঁদের দূতাবাস খোলা। পূর্ণাঙ্গ মিশন চালু করা সম্ভব না হলে অন্ততঃ একটি কনস্যুলেট অফিস খোলা। কনস্যুলেট অফিসও যদি সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত যে সব দেশের দূতাবাস রয়েছে তাদের কাউকে এই সুযোগটা দেয়া। এতেও যদি অসুবিধা থাকে তবে ঢাকাস্থ পর্তুগীজ অনারারী কনসাল জেনারেল ও তাঁর অফিসকে কাজে লাগানো”।
অনারারী কনসাল জেনারেলের সর্বশেষ অপশানটি অচিরেই আলোর মুখ দেখবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে অভিজ্ঞ কূটনীতিক ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, “ঢাকাস্থ পর্তুগীজ অনারারী কনসাল জেনারেলকে একটু পাওয়ার দেওয়ার কথা আমি এখানকার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে বলেছি, যাতে উনি সমস্ত কাগজপত্র রিসিভ করে রাখেন এবং দিল্লী থেকে একজন ডিপ্লোম্যাট মাসে একবার বা দু’বার ঢাকায় গিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে আসেন। লিসবনে ইতিমধ্যে আমি এখানকার ডেপুটি স্পিকারের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন এতে আইনগত কোন অসুবিধা নেই এবং এভাবে এটাতো করাই যায়। পর্তুগীজ পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তরফ থেকেও নীতিগত কোন সমস্যা এক্ষেত্রে নেই, শীর্ষ কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে তা নিশ্চিত করেছেন”।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীর আসন্ন লিসবন সফরে অন্যান্য বিষয়ের সাথে এই ইস্যুটিও দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় গুরুত্ব পাবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত ইমতিয়াজ আহমেদ। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, প্রায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার বাংলাদেশীর বসবাস বর্তমানে পর্তুগালে। বৈধভাবে বসবাসের পর ইউরোপের যে কোন দেশের তুলনায় এখানেই সবচাইতে কম সময়ে ও সহজে নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ থাকায় বিগত বছরগুলোতে প্রায় হাজার তিনেক বাংলাদেশী পর্তুগীজ পাসপোর্ট নিয়ে পাড়ি জমান ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। অর্থনৈতিক সংকটের কুলকিনারা হলে অদূর ভবিষ্যতে ঢাকায় পূর্ণাঙ্গ পর্তুগীজ দূতাবাসই আলোর মুখ দেখবে, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষক মহল।