দীর্ঘ ছয় বছর অসুস্থাবস্থায় হাজী আনোয়ারা বেগম পরলোকগমন করেন। ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন। স্বামীর নাম মৃত হাজী সৈয়দ জয়নাল আবেদিন , গ্রাম ও পোঃ- আলিমাবাদ, থানাঃ-মুলাদি, জেলাঃ-বরিশাল। তিনি পাঁচ ভাই, তিন বোন, পঁচিশ নাতি, চার নাতনী এবং অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। পরিবারের প্রায় পঁচিশ জন জার্মান ও ইতালীতে বসবাস করেন।
এর মধ্যে একজন ইতালির নগরী ভেনিসের ভেনিস বাংলা স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমানের সভাপতি “সৈয়দ কামরুল”। বরিশালের মুলাদিতে জন্ম। গ্রামে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে ঢাকার তিতুমীর কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় পাড়ি জমান প্রাচ্যের দেশে। ১৯৮৫ সালে জার্মানিতে আসেন। জানাযায় সেখানে তিনি দাউদ নামে পরিচিত ছিলেন। ১৯৮৬ সালে পাড়ি জমান সুইজারল্যান্ডে। কঠোর অভিবাসন নীতির কারনে ৬ মাস পরেই বাধ্য হন সুইজারল্যান্ড ত্যাগ করতে। চলে আসেন ইতালিতে। এখানে পরিচিত হন সরোয়ার নামে। রোমে শুরু করেন সোনার বাংলা নামে একটি বাংলা হোটেল। দুই বছর পরে মত পাল্টে চলে যান পেরুজায়, কাজ করেন তামাক ক্ষেতে। সেখানেও বেশি দিন মন টেকাতে না পেরে চলে যান বোলজানোয়। সেখানে টানা ১০ বছর ওয়েটার এবং শেফের কাজ করেন। ২০০১ সালে চলে আসেন ভেনিসে। এর মধ্যে ইতালিয় ললনা লোপেজ লিদিয়ার প্রেমে পড়েন। ২০০৩ সালে তারা বিয়েও করেন। এখন তারা তিন সন্তানের সুখি দম্পতি। তার মাথায় আসে একটি স্কুল করার কথা যেখানে প্রবাসী বাংলাদেশী ছেলে মেয়েরা বাংলা ভাষায় পড়তে ও লিখতে পারবে। তার এই চিন্তার সফল রুপ দিতে সহযোগিতার হাত বারিয়ে অবশেষে ২০০৬ সালে মাত্র ৩৫ জন ছাত্র ছাত্রী এবং ৬ জন শিক্ষক নিয়ে যাত্রা শুরু করে ভেনিস বাংলা স্কুল। অনেক বন্ধুর পথ মাড়িয়ে ইতালির ভেনিসে মাথা উচু করে নিজের উপস্থিতি জানান দেয় বাংলা স্কুল। বর্তমানে এর ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৩০ জন। শিক্ষক আছেন ৩ জন। সৈয়দ কামরুল ভেনিস বাংলা স্কুল পরিচালনার পাশাপাশি মেস্ত্রে জামে মসজিদ কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। আর সেই মানুষটির মা গত পরশু মৃত বরন করে। কাজেই আমরা সবাই তার মার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ আপনারা সবাই তার মার জন্য দোয়া করবেন।