হিজরি সনের ১২তম মাস হলো জিলহজ্জ মাস। এই মাস হজরত ইব্রাহিম আ:-এর স্মৃতিবিজরিত এক অনন্য মাস। যখন হজরত ইব্রাহিম (আ:) কে হজ্জ ফরজ হওয়ার কথা ঘোষণা করার আদেশ দেয়া হয়, তখন তিনি আল্লাহর কাছে আরজ করলেনঃ এখানে তো জনমানবহীন বন্য প্রান্তর ; ঘোষণা শোনার মতো কেউ নেই। যেখানে জনবসতি আছে সেখানে আমার আওয়াজ কীভাবে পৌঁছবে? আল্লাহতায়ালা বললেন, তোমার দায়িত্ব শুধু ঘোষণা করা। বিশ্বের কাছে তা পৌঁছানোর দায়িত্ব আমার।
অত:পর হজরত ইব্রাহিম (আ:) মাকামে ইব্রাহিমে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলে আল্লাহতায়ালা তা উচ্চ করে দেন। কোনো কোনো বর্ণনায় আছেঃ তিনি আবু কোবাইস পাহাড়ে আরোহণ করতঃ দুই কানে অঙ্গুলি রেখে ডানে-বামে এবং পূর্ব-পশ্চিমে মুখ ফিরিয়ে ঘোষণা করেছিলেনঃ “লোক সব, তোমাদের পালনকর্তা নিজের গৃহ নির্মাণ করেছেন এবং তোমাদের ওপর এই গৃহের হজ্জ ফরজ করেছেন। তোমরা সবাই পালনকর্তার আদেশ পালন করো” এই বর্ণনায় আরো বলা হয়েছেঃ ইব্রাহিম আ:-এর এই আওয়াজ আল্লাহতায়ালা বিশ্বের সবখানে পৌঁছে দেন এবং শুধু তখনকার জীবিত মানুষ পর্যন্তই নয়, বরং ভবিষ্যতে কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ আগমনকারী ছিল তাদের সবার কান পর্যন্ত এই আওয়াজ পৌঁছে দেয়া হয়। যার যার ভাগ্যে আল্লাহতায়ালা হজ্জ লিখে দিয়েছেন, তাদের প্রত্যেকেই এই আওয়াজের জবাবে “লাব্বায়িকা আল্লাহুম্মা লাব্বায়িক” বলেছে অর্থাৎ হাজির হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। হজরত ইবনে আব্বাস বলেন, ইব্রাহিমের (আ:) আওয়াজের জবাবই হচ্ছে ‘লাব্বায়িকা’ বলার আসল ভিত্তি।
হজ্জ-এর বিভিন্ন আচার-কায়দা আদি পয়গম্বর ইব্রাহিম (আঃ)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত। হজ্জের সাথে জড়িত রয়েছে আল্লাহ্র কাছে তাঁর আত্মসমর্পণ, জিহাদ জয়ের ইতিহাস। ইব্রাহিম (আ:) আল্লাহর নির্দেশে তাঁর বিবি হাজেরাকে নির্জন মরুভূমিতে রেখে এসেছিলেন। সেখানে, ক্বাবা শরীফের অদূরে, বিবি হাজেরা নবজাত শিশু ইসমাইলকে (আ:) নিয়ে মহাবিপদে পড়েছিলেন। সাহায্যের জন্য কাকেও না পেয়ে তিনি পানির তালাশে সাফা-মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করেছিলেন। কিন্তু কোথাও পানি না পেয়ে সন্তানের কাছে ফিরে এসে দেখলেন, সেখানে নবজাত শিশুর পদাঘাতে এক পানির উৎসের সৃষ্টি হয়েছে. এটিই জমজম কূপ।
আরাফাতের ময়দানে উপস্খিতি হজরত আদম (আ:) ও হাওয়া (আ:)-এর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বেহেশত থেকে আদম (আ:) ও হাওয়া (আ:) কে যখন দুনিয়াতে পাঠিয়ে দেয়া হয়, তারা পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। অত:পর উভয়ে আরাফাত ময়দানে এসে মিলিত হন। তাঁদের দোয়া আল্লাহতায়ালা এখানে কবুল করেন। এ জন্য আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ হজরত আদম (আ:)-এর বংশধর দুনিয়ার সব মুসলিম আরাফাতের ময়দানে এসে উপস্খিত হয়ে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে ইবাদতে মগ্ন হন।
একটি সুনির্দ্দিষ্ট ধারাবাহিকতায় হজ্বের আবশ্যকীয় আচারসমূহ পালন করতে হয়।
হজ্বের ফরজ তিনটি:
- ১. নিয়ত করা
- ২. জিলহজ্বের ৯ তারিখে আরাফার ময়দানে অবস্থান করা
- ৩. তাওয়াফে জিয়ারত করা
হজের ওয়াজিব ছয়টি:
- ১. ১০ জিলহজ রাতে সুবহে সাদিকের পর মুয্দালিফায় অবস্থান করা।
- ২. সাফা ও মারওয়া নামক পাহাড়দ্বয়ের মধ্যবর্তী স্থানে সাতবার সাঈ করা।
- ৩. মিনায় জামরাসমূহে (শয়তানের চিহ্ন) বেষ্টনীর মধ্যে রমি বা কঙ্কর নিক্ষেপ করা।
- ৪. হজে কিরান ও তামাত্তু পালনকারীর জন্য কোরবানি করা।
- ৫. মাথার চুল মুণ্ডানো বা ছাঁটার মাধ্যমে ইহরাম খোলা।
- ৬. বহিরাগতদের জন্য অর্থাত্ মিকাতের বাইরের লোকদের জন্য তাওয়াফে বিদা (বিদায়কালীন তাওয়াফ) সম্পন্ন করা। মনে রাখতে হবে যে যদি ওয়াজিবসমূহের কোনো একটি বাদ পড়ে যায় বা কোনো প্রকার ভুল হয়ে যায় তবুও হজ আদায় হয়ে যাবে, চাই ইচ্ছাকৃত হোক বা অনিচ্ছাকৃত হোক বা ভুলক্রমে হোক। তবে সে ক্ষেত্রে কোরবানি বা সদকার দ্বারা তার ক্ষতিপূরণ ওয়াজিব হবে।
এখন আপনি চাইলেই কম্পিউটারে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মক্কা ও মদীনা শরীফ থেকে লাইভ দেখতে পারবেন পবিত্র হজ্ব।
মক্কা শরীফ লাইভ দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
মদীনা শরীফ লাইভ দেখতে এখানে ক্লিক করুন
[[ আপনি জানেন কি? আমাদের সাইটে আপনিও পারবেন আপনার নিজের লেখা জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বা আপনার এলাকার খবর তুলে ধরতে এই লেখায় ক্লিক করে জানুন এবং তুলে ধরুন। নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান। আর আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে রয়েছে অনেক মজার মজার সব ভিডিও সহ আরো অনেক মজার মজার টিপস তাই এগুলো থেকে বঞ্চিত হতে না চাইলে এক্ষনি আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে লাইক দিয়ে আসুন। এবং আপনি এখন থেকে প্রবাস জীবনে আমাদের সাইটের মাধ্যমে আপনার যেকোনো বেক্তিগত জিনিসের ক্রয়/বিক্রয় সহ সকল ধরনের বিজ্ঞাপন ফ্রিতে দিতে পাড়বেন। ]]