জুরিখ বাংলা স্কুল আয়োজিত বই বিতরন উৎসবে প্রবাসী শিশুদের হাতে প্রথম বারের মতো পাঠ্য বই তুলে দিলেন সুইজারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাস্ট্রদূত শামীম আহসান। দেরিতে হলে ও গত শনিবার বাংলা পাঠ্যবই হাতে নিয়ে বই উৎসব পালন করলো বাংলা স্কুল জুরিখ, সুইজারল্যান্ড। দীর্ঘ দিনের প্রবাসী সন্তানদের এই দাবি পূরণে এগিয়ে আসলেন সুইজারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাস্ট্রদূত শামীম আহসান। তিনি জেনেভা থেকে জুরিখে এসে প্রথমবারের মতো বই বিতরন করেন বাংলা স্কুল জুরিখের ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে।
এ সময়ে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুইজারল্যান্ডের জাতীয় সংসদের এমপি এ্যানজেলো বারিলে, বাংলাদেশের সাহায্য সংস্থা হেকসের কর্মকর্তা যিনি বাংলা স্কুল সহ বাংলাদেশের উন্নয়নে নেয়া বিভিন্ন প্রজেক্টের সমন্বয়কারী মি. মাথিয়াজ হাউপ্ট, শ্রী চিন্ময় সেন্টারের নির্বাহী প্রনাম হর্লবাগ, বাংলাদেশ মিশনের ১ম সচিব, মোহাম্মাদ হোসেন সরকার সহ প্রবাসী কমিউনিটি নেত্রীবৃন্দের মধ্যে জহিরুল ইসলাম, কাজী আসাদ এবং আরো অনেকে।
এ সময়ে ফুল দিয়ে জাতীয় সংগীত বাজিয়ে অতিথিদেরকে বরন করে নেয়া হয়। স্কুলের শিক্ষিকা সুলতানা খান তানজিনের সঞ্চালনায় আয়োজিত সংক্ষিপ্ত আলোচনাতে মান্যবার রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যতে প্রবাসীদেরকে বাংলা শিক্ষা এবং সংস্কৃতি বিকাশে সবাইকে দলমত নির্বিশেষে এগিয়ে আসতে বলেন। তিনি বাংলা স্কুলের সাথে জুরিখের স্থানীয়দের এই মিল মিশের সেতুবন্ধনের ভূয়শী প্রশংসা করেন। তিনি আগামী জানুয়ারীতেই যাতে করে প্রবাসের শিশুরা বই পেতেপারে সেজন্য সবাইকে আগে বাগেই ছাত্র ছাত্রীদের নামের তালিকা দুতাবাস গুলোতে পাঠিয়ে যোগাযোগ করতে বলেন। মাননীয় রাস্ট্রদূত এ সময়ে বৈধপথে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য সকল প্রবাসীদের আহবান জানান।
বাংলা স্কুল সহ বাংলাদেশের উন্নয়নে নেয়া বিভিন্ন প্রজেক্টের সমন্বয়কারী মি. মাথিয়াজ হাউপ্টু যিনি গত বছর ও ৫ মাসের ও উপর বাংলাদেশে থেকে এসেছেন তিনি গর্বের সাথে বলেন , “ একটুকরো বাংলাদেশ আমার বুকে বাসা বেঁধে আছে সবসময়ের জন্য “ ।তিনি বাংলা স্কুলের সাথে সব সময় আছেন এবং থাকবেন।
স্থানীয় জাতীয় পরিষদের সংসদ সদস্য এ্যানজেলো বারিলে এ সময়ে দ্বৈত সাংস্কৃতি বিকাশে সব সময়েই বাংলা স্কুল জুরিখের পাশে থাকার কথা ব্যক্ত করেন। তিনি শিশু এবং যুবকদের মাঝে ,সাংস্কৃতির বিকাশ ঘটিয়ে বিভিন্ন নেশা থেকে সরিয়ে রাখার জন্য বাংলা স্কুলের বিশেষ প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বই বিতরন উৎসবে দেশাত্ববোধক গান গেয়ে উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধকরে শ্রী চিন্ময় সেন্টারের বিদেশী বন্ধুরা, স্কুলের ছাত্র ছাত্রী এবং অভিবাবক বৃন্দ।
প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল প্রতিটি শিশুদের হাতে যেন নূন্যতম একটি বই, বাংলাদেশের স্কুলগুলোর বই উৎসবের মতো জানুয়ারীর প্রথম দিনেই প্রবাসের বাংলা স্কুলগুলোতে পৌঁছে দেয়া হয়। টেক্সট বইগুলো যেহেতু বাজারে কিনতে পাওয়া যায় না, সেহেতু সরকারকে কোন না কোন মাধ্যমে এই কাজটি সম্পন্ন করার জন্য জোর তাগিদ জানানো হচ্ছিল প্রবাসের বাংলা স্কুলগুলোর পক্ষ থেকে। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে বছরের মাঝামাঝি সময় হলে ও মান্যবর রাস্ট্রদূত শামীম আহসানের বিশেষ চেষ্টায় এই প্রথমবারের মতো বাংলা স্কুল জুরিখের ছাত্র ছাত্রীদের মাঝে পাঠ্যপুস্তক বিতরন করা হয়। প্রবাসে বাংলা শিক্ষা এবং সাংস্কৃতি বিকাশে শিশুদেরকে উৎসাহিত করার এই পদক্ষেপ যেন এখন সারা বিশ্বের প্রবাসী শিশুদের জন্য গ্রহন করা হয়- এমন দাবিই এখন সবার।
প্রবাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলা স্কুল এবং বাংলা কমিউনিটির মাধ্যমেই প্রতিটি দেশের দুতাবাস ই এই মহৎ উদ্যোগটি গ্রহন করবেন এমনটিই আশা করছেন উপস্থিত সবাই।