• Fri. Nov ২২, ২০২৪

আমিওপারি ডট কম

ইতালি,ইউরোপের ভিসা,ইম্মিগ্রেসন,স্টুডেন্ট ভিসা,ইউরোপে উচ্চ শিক্ষা

ভূয়া রিফিউজি ! কোরিয়াতে হুমকির মুখে বাংলাদেশের শ্রমবাজার

ByLesar

Oct 5, 2015

মাঈনুল ইসলাম নাসিম : ১৫ হাজার বাংলাদেশী অধ্যুষিত দক্ষিণ কোরিয়াতে প্রায় হাজার খানেক বাংলাদেশী ভূয়া রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করায় দেশটিতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার হুমকির মুখে পতিত হয়েছে। এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেম (ইপিএস) স্কিমের আওতায় নির্ধারিত সময়ের কাজের কন্ট্রাক্টে বাংলাদেশীরা এখানে আসার পর যথাসময়ে ফিরে না যাবার পরিণতিতে সৃষ্টি হয়েছে এই সংকট। মিথ্যা ‘পলিটিক্যাল এসাইলাম’ সিক করার প্রবণতা এদেশে গত কয়েক বছর ধরেই লক্ষ্য করা গেলেও ইদানিং তা আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মোটা দাগে দেশটিতে শ্রমবাজার হারাবার ঝুঁকির মুখে এখন বাংলাদেশ।

অনুসন্ধানে জানা যায়, থাকা-খাওয়া ফ্রি’র পাশাপাশি মাসে গড়পড়তায় প্রায় ১৫শ’ থেকে ১৭শ’ ইউএস ডলার বেতনে যেসব ইপিএস কর্মীরা বাংলাদেশ থেকে কোরিয়াতে এসেছেন বিগত দিনে, তাদের একটি বিশেষ অংশ কাজের কন্ট্রাক্ট তথা চুক্তির শর্ত পূরণ না করে ৪ বছরের মাথায় দেশে ফিরে যাননি, যাচ্ছেনও না অনেকে। অথচ বিধি মোতাবেক যথাসময়ে দেশে ফিরে গিয়ে পুনরায় কোরিয়াতে ব্যাক করার সুযোগ থাকা সত্বেও এই শ্রেনীর বাংলাদেশীরা শতভাগ মিথ্যা গল্প তৈরী করে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন, এখনও করছেন। কল্পকাহিনী নির্ভর আবেদনে তারা একেক জন নিজেকে দেশে থাকাকালীন বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডার ছিলেন বলে দাবী করছেন।

কোরিয়াতে ইতিমধ্যে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশী মিথ্যা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন, যাদের শতকরা ৯৯ ভাগই বাংলাদেশে থাকাকালীন বিএনপি-জামায়াতের ক্যাডার দূরে থাক, কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের যে কোন প্রকার কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিলেন না। অথচ মিথ্যার উপর ভিত্তি করে ‘পলিটিক্যাল এসাইলাম’ পেতে তারা কোরিয়ান সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখেছেন, “বাংলাদেশে ফিরে গেলে বর্তমান সরকারের রোষানলে পতিত হবার পাশাপাশি বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডেরও শিকার হতে পারেন”। কোরিয়ান স্বরাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রনালয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এই প্রতিবেদককে জানিয়েছে, বাংলাদেশীদের এই ভূয়া আবেদনের হিড়িকের বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষ পুরোপুরি অবগত থাকায় উপরোক্ত হাজার খানেক বাংলাদেশীর মাঝে সত্যিকারের ‘রিফিউজি স্ট্যাটাস’ পেয়েছেন হাতে গোনা মাত্র ১০ জনেরও কম।

আইন মোতাবেক এক্ষেত্রে কোরিয়ান অথরিটি রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করা বাংলাদেশীদের প্রায় সবাইকেই ৬ মাস করে ‘জি-ওয়ান’ টেম্পোরারি পারমিট দিচ্ছে দেশটিতে বৈধভাবে অবস্থানের নিমিত্তে। নবায়নযোগ্য এই ‘জি-ওয়ান’ সর্বোচ্চ ৪ বার রিনিউ করার পর অর্থাৎ ২ বছর পার হলে বৈধভাবে অবস্থানের আর কোন রাস্তা খোলা রাখা হয়নি বিদ্যমান আইনে। বলার অপেক্ষা রাখে না, কোরিয়াতে ১৫ হাজার বাংলাদেশীর মধ্যে প্রায় ১৩ হাজারই ইপিএস স্কিমের অধীনে আসা। নিয়ম মোতাবেক কেউ একই মালিকের অধীনে টানা ৪ বছর কাজ করে বাংলাদেশে ফিরে গেলে মাত্র ৩ মাসের মধ্যেই সসম্মানে আবার কোরিয়াতে ফিরে আসতে পারে।

দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, মালিকের ব্যবস্থাপনায় থাকা-খাওয়ার সুবিধার পাশাপাশি মাসে ১৫শ’ থেকে ১৭শ’ ডলার বেতন পাবার পরও ‘অতি লোভে তাঁতী নষ্ট’ করা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী একই মালিকের অধীনে না থেকে মাত্র শ’খানেক ডলার বেশি বেতন পেতে ৪ বছরের মধ্যে ২-৩ বার কোম্পানি পরিবর্তন করেছে বিগত দিনে। এই ধারা এখনও অব্যাহত থাকায় দিনে দিনে বাড়ছে অবৈধ বাংলাদেশীর সংখ্যা। কারণ ইপিএস-এর নিয়ম মোতাবেক যারা কোরিয়াতে আসার পর মালিক পরিবর্তন করেন, ৪ বছরের মাথায় বাংলাদেশে ফেরার পর তাদের পুনরায় পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হবার পাশাপাশি ৬ মাস থেকে ১ বছর বা আরো বেশি অপেক্ষা করতে হয় কোরিয়াতে পুনরায় আসার জন্য।

লোভাতুর এই বাংলাদেশীরা এদেশে বারে বারে বেহুদা মালিক তথা কোম্পানি পরিবর্তনের কারণে চান না দেশে ফিরে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হবার পাশাপাশি বাড়তি ভোগান্তি মাথা পেতে নিতে। ফলে যথাসময়ে দেশে ফিরে না গিয়ে ভূয়া রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা তথা মিথ্যা ‘পলিটিক্যাল এসাইলাম’ সিক করাকেই শ্রেয় মনে করে থাকেন তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানাচ্ছে, কোরিয়ান স্বরাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তারা বাংলাদেশীদের এই ‘ম্যাকানিজম’ ইতিমধ্যে ধরে ফেলেছেন, যার পরিণতিতে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের কড়াকড়ি আরোপ সহ প্রয়োজনে বাংলাদেশের ইপিএস কোটা স্থগিতের বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় রেখেছেন তাদের দেশের শ্রমবাজারে শৃঙ্খলা ধরে রাখতে।

এদিকে ভূয়া রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার হিড়িকের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মুখচেনা কিছু বাংলাদেশী দালালদের তৎপরতা লক্ষ করা যাচ্ছে রাজধানী সিউল সহ কোরিয়ার বিভিন্ন শহরে। সো-কল্ড পলিটিশিয়ান বা ব্যবসায়ী পরিচয়ে ভদ্রতার মুখোশে বাংলাদেশী কমিউনিটির সাথে মিশে থাকা এসব দালালরা অবৈধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশীদের ‘মিথ্যা কেস’ সাজিয়ে দেয়া সহ প্রয়োজনীয় কাজ করে দেয়া বাবদ জনপ্রতি ১০ লাখ কোরিয়ান ওন (প্রায় সাড়ে ৮শ’ ইউএস ডলার) নিয়ে থাকে এককালীন। সিউলে ৫ জন সহ বিভিন্ন শহরে আরো প্রায় ১০ জন আত্মস্বীকৃত দালাল তাদের ব্যবসা জমজমাট করে তুলেছে, যাদের কয়েকজনের গতিবিধি রয়েছে স্থানীয় পুলিশের নজরে। কোরিয়াতে বাংলাদেশের শ্রমবাজার ধ্বংস করতে তৎপর এই দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন বিভিণ্ন শহরের সচেতন বাংলাদেশীরা।

Lesar

আমিওপারি নিয়ে আপনাদের সেবায় নিয়োজিত একজন সাধারণ মানুষ। যদি কোন বিশেষ প্রয়োজন হয় তাহলে আমাকে ফেসবুকে পাবেন এই লিঙ্কে https://www.facebook.com/lesar.hm

One thought on “ভূয়া রিফিউজি ! কোরিয়াতে হুমকির মুখে বাংলাদেশের শ্রমবাজার”
  1. Hlw sir, I am from Bangladesh. I want to know about MBA programme in south Korea. Can you help me by sharing information like MBA cost, visa processing system etc. Thank you

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *