• u. Nov ২১, ২০২৪

আমিওপারি ডট কম

ইতালি,ইউরোপের ভিসা,ইম্মিগ্রেসন,স্টুডেন্ট ভিসা,ইউরোপে উচ্চ শিক্ষা

অস্ট্রিয়া-জার্মানীতে আসা বাংলাদেশীদের খবর দূতাবাস রাখলেই বিপদ

ByLesar

Sep 8, 2015

মাঈনুল ইসলাম নাসিম : ইউরোপে বহুদিনের চলমান রিফিউজি ক্রাইসিসেস সব হিসেবনিকেশ তিন বছরের শিশু আয়লান কর্তৃক ওলটপালট করে দেয়ার বেশ আগ থেকেই সড়কপথের অবৈধ রুটে অস্ট্রিয়া ও জার্মানীতে চলছিল বাংলাদেশীদের অনুপ্রবেশ। লিবিয়া ও গ্রীস সহ অন্যান্য দেশ থেকে তাঁরা প্রচলিত বিভিন্ন হিউম্যান ট্রাফিকিং চ্যানেলে একের পর এক সীমান্ত অতিক্রম করে গত এক বছর ধরেই ভাগ্যান্বেষণে বেছে নিচ্ছে সেন্ট্রাল ইউরোপকে। ধরপাকড়ের ঝুঁকি এড়াতে তাদের বেশির ভাগেরই মূল গন্তব্য যদিও ইতালী, তথাপি তুলনামূলক কম সময়ে বৈধতার আশায় অনেকে পাড়ি দিচ্ছেন সুদূর পর্তুগালেও।

অতি সম্প্রতি হাজার হাজার সিরীয় উদ্বাস্তুদের সাথে কয়েকশ’ বাংলাদেশী অস্ট্রিয়া ও জার্মানীতে এসেছেন বা আরো অজানাসংখ্যক হাঙ্গেরীর পথে রয়েছেন, এমন সংবাদ বেশ ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমে। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, বিভিন্ন সংবাদপত্র সহ অনলাইন পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা অনেকেই ভিয়েনা বা বার্লিনের বাংলাদেশ দূতাবাসে নক করছেন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বাংলাদেশী নাগরিকদের বিষয়ে। দূতাবাস তাদের ব্যাপারে কি করছে বা করতে পারে এমন প্রশ্নও রাখা হচ্ছে দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রদূত বা দূতাবাস কর্মকর্তাদের নিকট, পরিস্থিতির আলোকে যা হয়ে যাচ্ছে অনেকটা ‘আত্মঘাতী’ সংবাদ পরিবেশন। মধ্যপ্রাচ্য-মালয়েশিয়া আর ইউরোপ যে এক নয় এই ইস্যুতে, তা ভুলে যাচ্ছেন অনেকেই।

ইউরোপের রিফিউজি ম্যাকানিজমের আদ্যোপান্ত অবগত না থাকার কারণে তথা স্বীকৃত ‘ইকোনমিক রিফিউজি’ হিসেবে স্ট্যাটাস পেতে বাংলাদেশীদের যেভাবে দিনকে রাত বানাতে হয় দেশে দেশে, সেই সাথে উক্ত রিফিউজি মেকানিজমের সাথে বাংলাদেশ দূতাবাস সমূহের ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা মানেই যে আশ্রয়প্রার্থী ঐ বাংলাদেশীর সমূহ বিপদের হাতছানি, তা জানা না থাকার কারণে দূতাবাস বা রাষ্ট্রদূতের রেফারেন্স দিয়ে সংবাদ পরিবেশনের ‘আত্মঘাতী’ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে গত কয়েক দিন ধরেই। দেশ থেকে দেশান্তরে জীবনবাজী রেখে আসা লোকজন বাংলাদেশের নাগরিক এটা যেমন সত্য, তার চাইতে বড় সত্য হচ্ছে তাদের খবর এই মুহূর্তে দূতাবাস নিতে যাওয়াই মানে বাংলাদেশে ফেরত যাবার রাস্তা তৈরী করে দেয়া।

‘জব ডেসক্রিপশন’ অনুসারে বাংলাদেশ দূতাবাস অবশ্যই সংশ্লিষ্ট দেশের অভ্যন্তরে বৈধ-অবৈধ সব বাংলাদেশীদের ভালোমন্দের অংশীদার হবে, সুখ-দুঃখের সাথী হবে এমনটাই স্বাভাবিক। কিন্ত হাঙ্গেরীর পথে বা অস্ট্রিয়া ও জার্মানীর ভৌগলিক সীমারেখায় বা দেশ দু’টির অভ্যন্তরে এখন যা ঘটছে বা আগামী দিনগুলোতে যা ঘটবে, তার আলোকে যে কোন পন্থায় প্রবেশ বা অনুপ্রবেশকারী যে কোন বাংলাদেশীর খোঁজখবর দূতাবাস যত কম রাখবে, ততোই মঙ্গল নবাগতদের। বলার অপেক্ষা রাখে না, আগত এই বাংলাদেশীরা অস্ট্রিয়া বা জার্মানীতে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলেও বাংলাদেশে তেমন কোন সমস্যা চলমান না থাকায় শুধুমাত্র সময়ক্ষেপণ শেষে প্রায় সবাইকেই যথাসময়ে বেছে নিতে হবে ইতালী বা পর্তুগালের মতো দেশ।

সঙ্গত কারণে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করা (যারা করবেন) এবং খুব সহসাই কেস রিজেক্ট হওয়া সহ ফিঙ্গার প্রিন্ট যখন কথা বলতে শুরু করবে, তখন অস্ট্রিয়া বা জার্মানী ছেড়ে নিরাপদ দেশের সন্ধান করার আগ অবধিও নিরাপদ থাকতে হবে সবাইকে। ট্রানজিট এই পিরিয়ডে তাই দূতাবাসের নাম উচ্চারণ করাও বিপদ। এতো জীবনযুদ্ধ সত্বেও লিবিয়া-তুরষ্ক-গ্রীস সহ বিভিন্ন দেশের বনে-জঙ্গলে পাহাড়ে-পর্বতে এমনকি সাগরে ভাসার চাইতে বাংলাদেশীরা অবশ্য অনেক ভালো থাকবেন ইউরোপের যে কোন দেশে, যত অর্থনৈতিক মন্দাই চলমান থাকুক না কেন এখানে। ইউরোপের রিফিউজি মেকানিজমের ‘বাংলাদেশ চ্যাপ্টার’ যেহেতু ঠিক এরকমই, তাই বৃহত্তর স্বার্থে নবাগত বাংলাদেশীদের সাথে দূতাবাসের সংশ্লিষ্টতা এড়িয়ে চলাকেই সর্বোত্তম পন্থা মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Lesar

আমিওপারি নিয়ে আপনাদের সেবায় নিয়োজিত একজন সাধারণ মানুষ। যদি কোন বিশেষ প্রয়োজন হয় তাহলে আমাকে ফেসবুকে পাবেন এই লিঙ্কে https://www.facebook.com/lesar.hm

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version