মাঈনুল ইসলাম নাসিম : ৫৭ ধারা যে দেশে কখনো কখনো ১১৪ বা ২২৮ ধারায় রূপ নেয়, মতপ্রকাশের অবাধ(?) স্বাধীনতার সেই দেশে নাকি অনেক কিছুই চেপে যেতে হয়। দেশ এবং জাতির জন্য লজ্জাজনক বিষয়াদিও নাকি মাঝেমধ্যে ‘ইগনোর’ করতে হয় লেখক-সাংবাদিক হয়েও। শত সহস্র ছবির ভিড়ে এই ছবিটি নিয়ে বিশেষ শ্রেনীর চাটুকারদের অবসার্ভেশন এমন হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। চাটুকারিতার পাইপলাইন ক্লিয়ার রাখতে এবং প্রবল ক্ষমতাধর আইসিটি মন্ত্রনালয়ের রোষানলে পড়তে চান না বলেই হয়তো অনেকেই রুচি ও বিবেকবোধের মাথা খেয়ে ছবিটি দেখেও না দেখার ভান করেছেন। প্রবাসীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি ছাড়াও বাংলাদেশের সাথে বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে মাথা ঘামাই বলে লিখতে হলো ‘অপ্রিয়’ এই ইস্যুতেও।
স্যোশাল মিডিয়া সহ বাংলাদেশের গনমাধ্যমে ইতিমধ্যে প্রকাশিত এই ‘নেক্কারজনক’ ছবিটি ক্যামেরাবন্দী করা হয় গত সপ্তাহে বেইজিংয়ে। চীনা অর্থায়নে বাংলাদেশে চলমান ও পরিকল্পনায় থাকা বিভিন্ন প্রকল্পের অগ্রগতি এবং সার্বিক দিক নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকা থেকে এখানে এসেছিলেন বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। ২৭ আগস্ট বৃহষ্পতিবার বেইজিংয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি মিলিত হন চীনের ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড আইটি মন্ত্রনালয়ের ডেপুটি মিনিস্টার লিউ লিহুয়ার সাথে। জুনাইদ আহমেদ পলক এবং লিউ লিহুয়া দু’জনেই প্রতিমন্ত্রী তথা সমান মর্যাদাসম্পন্ন হলেও একজনের বসার স্টাইল বাইল্যাটেরাল শিষ্টাচার বহির্ভূত হওয়ায় দৃষ্টিকটু ঠেকেছে খোদ চীনাদের কাছেই।
চীনা ডেপুটি মিনিস্টারের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সেদিন বাংলাদেশের ‘ইয়ঙ্গেস্ট’ ডেপুটি মিনিস্টার তার চাইনিজ কাউন্টারপার্টের ‘বডি ল্যাংগুয়েজ’ আমলে না নিয়ে ‘প্রচলিত শালীনতা’র গন্ডি পেরিয়ে একতরফাভাবে ‘পায়ের উপর পা’ তুলে বসে কথা বলেছেন। বৈঠকে পা তুলে বসতেই পারেন যে কেউ কিন্তু সেটা অবশ্যই নির্ভর করবে সমকক্ষ কাউন্টারপার্টের ওপরও। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের ‘বডি ল্যাংগুয়েজ’ চীনা মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তাদের নিকট ‘দৃষ্টিকটু’ লাগার বিষয়টি বেইজিং থেকে এই প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র। সাইকোলজি এবং বডি ল্যাংগুয়েজ যেখানে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে একে অপরের পরিপূরক, সেজন্য বিষয়টিকে ছোট করে না দেখে বাংলাদেশের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা আগামীতে আরো সতর্ক হবেন, এমন পরামর্শ চীনা মিনিস্ট্রি অব ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড আইটি’র সাথে সংশ্লিষ্ট জনৈক বাংলাদেশী এক্সপার্টের।