মাঈনুল ইসলাম নাসিম : আজ ৩০ জুলাই। ইতালীর অভিবাসী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ইতালীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি লুৎফর রহমান খানের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৯ সালের আজকের এই দিনে হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাঁদিয়ে তিনি চলে যান না ফেরার দেশে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজণিত কারণে রাজধানী রোমের একটি হাসপাতালে অনেকটা অকালেই মৃত্যুবরণ করেন লুৎফর রহমান খান। জন্মস্থান বাংলাদেশের পাবনার বেড়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয় তাঁর।
লুৎফর রহমান খান ছিলেন ইতালীর বাংলাদেশ কমিউনিটির ‘পাইওনিয়ার’। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সর্বোচ্চ ডিগ্রী নেয়া শেষে আশির দশকের মাঝামাঝি তাঁর ইতালী আগমন। ঐ সময় দেশটিতে ছিল সীমিত সংখ্যক বাংলাদেশীর বসবাস। অভিবাসীরা যখন নিজ নামে লাইসেন্স করে বৈধ ব্যবসা-বানিজ্য করার অনুমতি পেতো না ইতালীতে, তখন লুৎফর রহমান খান ইতালীয় পার্লামেন্ট হাউজের সামনে টানা ১৭ দিন অনশন ধর্মঘট করে ন্যায়সঙ্গত দাবী আদায় করতে সক্ষম হন। তাঁর সংগ্রামী আন্দোলনের সোনালী ফসল হিসেবেই বাংলাদেশীরা তখন নিজ নামে বৈধ ‘বিজনেস’ শুরু করে ইতালীতে।
মেহনতী প্রবাসীদের সবচাইতে কাছের মানুষ লুৎফর রহমান খান বরাবরই সাদামাটা জীবন যাপন করেছেন ইতালীতে। যে কোন লোভ-লালসার উর্ধ্বে থেকে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন প্রবাসীদের কল্যানে। এই মহান মানুষটির মৃত্যুবার্ষিকীতে রোমে দায়িত্বরত রাষ্ট্রদূত শাহদৎ হোসেন মরহুমের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেছেন। এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন কমিউনিটির উন্নয়নে লুৎফর রহমান খানের আসামান্য অবদানের প্রতি। এদিকে তাঁর স্মরণে বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানী রোমে বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ইতালীর সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী বাচ্চু। লুৎফর রহমান খানের অবদান ইতালী প্রবাসী ২ লাখ বাংলাদেশী আজীবন মনে রাখবে, এমন আশাবাদ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের।