ছয় থেকে সাত হাজার বাংলাদেশীর বসবাস অ্যাডিলেডে। প্রতারক শামীম হায়দার অত্যন্ত সুকৌশলে স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটির বিভিন্ন ফেসবুক পেজ সহ অন্যান্য মাধ্যমকে কাজে লাগায় জালিয়াতির ষোলকলা পূর্ণ করতে। বাজার গরম করা বিজ্ঞাপনে বলা হয়, “স্কুল হলিডে অবিশ্বাস্য প্লেন ফেয়ার !!! অস্ট্রেলিয়া-বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া যাতায়াত মাত্র অস্ট্রেলিয়ান ডলার ১২৫০ (সকল ট্যাক্স সহ) !!! অ্যাডিলেড সিডনী মেলবোর্ন পার্থ ব্রিসবেন থেকে যেখানে বর্তমান বাজার দাম ন্যূনতম অস্ট্রেলিয়ান ডলার ১৯৫০ থেকে ২০২৫, সেখানে আমাদের কাছ থেকে টিকিট না কিনলে এই টিকিটই অন্য কারো কাছ থেকে কিনতে হবে কমপক্ষে অস্ট্রেলিয়ান ডলার ৭০০ বেশি দিয়ে”।
হাই সিজনে কৌশলী প্রচারণার বলি হয়ে অ্যাডিলেডের খেটে খাওয়া বাংলাদেশীরা যেন অনেকটা টাস টাস করেই প্রতারক শামীম হায়দারের কাছে মাথা নোয়ালেন। বাঁশের মজাদার শিরোনামের বিজ্ঞাপন যাচাই-বাছাই না করে লোভ সামাল দিতে না পারার পরিণতিতে যা হবার তাই হলো। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশীদের কাছ থেকে প্রায় ২ লক্ষাধিক অস্ট্রেলিয়ান ডলার হাতিয়ে নিয়ে ভূয়া টিকিট ধরিয়ে দেয়া হয় জনপ্রতি। অনেকেই বিমানবন্দরে গিয়ে ফেরত আসেন, কষ্টার্জিত অর্থের সাথে খোয়ান মান-সম্মান। সুচতুর শামীম হায়দার তার প্রখর মেধাকে কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নেয়া অর্থের প্রায় পুরোটাই যথাসময়ে পাঠিয়ে দেয় ঢাকায় তার সহযোগী ট্র্যাভেল ব্যবসায়ীকে। বলা হচ্ছে এখন ভিক্টিমদের টাকা ঢাকা থেকে আস্তে আস্তে কিস্তিতে ফেরত দেয়া হবে।
টিকিট কেলেংকারিতে হারানো টাকা ফেরত পাবার সম্ভাবনা অবস্থাদৃষ্টে ক্ষীণ মনে হবার পাশাপাশি স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশীদের চরম অসতর্কতার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আলোচিত হচ্ছে দেশে-বিদেশে। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই মন্তব্য করছেন, অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ কমিউনিটিতে উচ্চশিক্ষার হার তুলনামূলকভাবে বেশি হলেও তাঁরা কেন অগ্র-পশ্চাৎ বিবেচনা না করে ব্যক্তিবিশেষের প্রলোভনে সাড়া দিয়ে বাজার দরের চাইতে ৩০ থেকে ৩৫% কমমূল্যে বিমান টিকিট পেতে মরিয়া হয়েছিলেন ? শামীম হায়দারের হাতে এমন কী ‘আলাদীনের চেরাগ’ দেখতে পেয়েছিলেন তাঁরা ? তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে প্রচলিত পন্থায় যাচাই-বাছাই করা ছিল যেখানে ওয়ান-টু’র বিষয়, সেখানে তা না করে বাঁশের বিজ্ঞাপনেই সাড়া দিয়েছিলেন অনেকেই।
দেখুন অস্ট্রেলিয়ান টিভিতে প্রচারিত নিউজ
[youtube bBvfyQe5730 nolink]