ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নাগরিকরা বৃটেনে এসে অবৈধভাবে যথেচ্ছভাবে বেনিফিট ক্লেইমসহ নানান সুযোগ সুবিধা নিয়ে থাকেন। এ ধরনের নানান অজুহাতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে খুব খারাপ সম্পর্ক যাচ্ছে বৃটেনের। সম্পর্ক রাখা না রাখা নিয়ে ২০১৭ সালের ভেতরে রেফারেন্ডাম হচ্ছে। ইস্যুটি নিয়ে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামরন ইউরোপ সফরে রয়েছেন। এরই মাঝে বিপুল সংখ্যক ইতালি পাসপোর্সধারী বাংলাদেশীর হাউসিং বেনিফিট প্রতারক চক্রকে পাকড়াও করেছে ডিপার্টমেন্ট ফর ওয়ারর্ক এন্ড পেনসন সংক্ষেপে ডিডাব্লিউপি এবং মেট পুলিশ।
বৃটিশ আইন অনুযায়ী ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত যে কোনো দেশের নাগরিক বৃটেনে এসে যদি এখানে কাজ করছেন বলে প্রমাণ করতে পারেন তাহলে তিনি হাউসিং বেনিফিটের জন্য আবেদনের সুযোগ পান। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিপুল সংখ্যক ইতালি পাসপোর্টধারী বাংলাদেশী প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে হাউসিং বেনিফিট ক্লেইম করছেন বলে রেডব্রিজ কাউন্সিল থেকে সন্দেহ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে রেডব্রিজ কাউন্সিল, এসেক্স পুলিশ এবং ডিডাব্লিউপি যৌথভাবে অভিযানে নামে। এ অভিযানে নেমে টাওয়ার হ্যামলেটসের বো এলাকার একটি ঠিকানা ব্যবহার করে প্রায় ৪শ ইতালিয়ান পাসপোর্টধারী বাংলাদেশী ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স নাম্বার সংগ্রহ করেছেন বলে প্রমাণ পায় ডিডাব্লিউপি। আর গত ২১ মে, মঙ্গলবার টাওয়ার হ্যামলেটসের মাইলএন্ড রোডের কথিত একটি জব সেন্টারে অভিযান চালিয়ে বিপুল সংখ্যক আলামত জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে জব সেন্টার সংশ্লিষ্ট একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ জব সেন্টার থেকেই একই ঠিকানা ব্যবহার করে ৪শ জনের নামে ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স নাম্বার প্রাপ্তীতে সহযোগিতা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এসেক্স পুলিশ জানিয়েছে, গত বছর একই দিনে বিপুল সংখ্যক ইতালি পাসপোর্টধারী বাংলাদেশী স্ট্যানস্টেড এয়ারপোর্ট হয়ে লন্ডনে আসেন। তারা ন্যাশনাল ইন্স্যুারেন্সের জন্য জব সেন্টারে স্বাক্ষাতকার শেষ একই দিনে রিটার্ন ফ্লাইটে ইতালি ফিরে যান। ভূঁয়া পে স্লীপ তৈরী করাসহ প্রতারণার মাধ্যমে হাউসিং বেনিফিট ক্লেইমে সহযোগিতার অভিযোগে ইলফোর্ড এলাকার একটি চ্যারিটি সংস্থার একজন অফিসার এবং ইস্ট লন্ডনের বো এলাকার একটি জব সেন্টার থেকে অপর একজনকে গ্রেফতার করেছে। তারা আপতত বেইলে মুক্ত থাকলেও বুধবার তাদেরকে রেডব্রিজ মেজিস্ট্রেইট কোর্টে হাজির করা হবে। হাউসিং বেনিফিট প্রতারণার অভিযোগে এ তদন্তের অংশ হিসাবে এ দুজনসহ মোট ১৩জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের বিরুদ্ধে আরো তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে ডিডাব্লিউপি। গত ৩ বছরের বেশি সময় ধরে ইতালি পাসপোর্টধারী বাংলাদেশী নাগরিকরা প্রতারণার মাধ্যমে হাউসিং বেনিফিট ক্লেইম করে আসছেন বলে মনে করছে ডিডাব্লিউপি। তারা ইউকের ভুয়া ঠিকানা এবং পে স্লীপ ব্যবহার করে ইতালিতে বসে বসে ইউকে হাউসিং বেনিফিট ক্লেইম করেন। এ ঘটনাকে সম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচাইতে বড় হাউসিং বেনিফিট প্রতারণা বলে জানিয়েছে ডিডাব্লিউপি। এ চক্রের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। সুত্রঃ এখানে ক্লিক করুন।