নোভা মেনাসাস ক্যাম্পাসে খোলা পরিসরে বসেছিল বাঙালির প্রানের উৎসব। যদিও গত তিনদিন আগেও দ্বিধা ছিল, সেই সাথে পুর্বাভাশ ছিল বৃষ্টি হবার , কিন্তু বহু ধর্মের বাঙ্গালী এর এই অনুষ্ঠানকে সুন্দর সমাপ্তির দাবী সৃষ্টি কর্তা শুনেছেন। দিনটি ছিল আলো ঝলমলে। আকশ ভরা সূর্য ও মৃদুমন্দ বাতাস বইছিল উত্তর দিক বেয়ে। শতরুপা বড়ুয়ার প্রাঞ্জল সঞ্চালনায় বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে শুরু হয়ে যায় বৈশাখী উৎসব। আর তারই সাথে বাংলা স্কুলের ছাত্র ছাত্রি ও অভিভাবক এক সাথে মঞ্চে গেয়ে উঠেন রবি ঠাকুরের গান ” এসো হে বৈশাখ এসো এসো”। নতুন বছরের আগমনী গানের সুরে আনন্দ জোয়ারে ভাসছিল প্রায় ৭ শতাধিক বাঙালী। আনন্দাশ্রু বয়ে যেতে দেখা যায় অনেকের নয়ন কোনে। কেও তা লোকাতে ও চায়নি বটে। এর পর প্রিয়াঙ্কা বোস ও আদৃতা “এদিন আজি কোন ঘরে গো খুলে দিল দ্বার” গানের সাথে প্রথম দ্বৈত নাচে সকল দর্শকের মন কেড়ে নেয়। মূর্ছনা বড়ুয়া একক নাচ পরিবেশন করেন। তার পর মঞ্চে আসে মনিশা, পিটার ও রিতি “মধুকর গুঞ্জরি বাজে” নজরুলের অপূর্ব সৃষ্টি এই গানটির তালে তালে নৃত্য পরিবেশনায়।
বাংলা স্কুলের গানের শিক্ষক নাসের চৌধুরী বাংলা স্কুল মিউজিক একাডেমীর সকল ছাত্র ছাত্রিবৃন্দ নিয়ে পরিবেশন করেন গানের ডালী। দর্শক শ্রোতা সকলেই মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মের গান কে উৎসাহিত করেন। পুরনি ও আনি বড়ুয়া বাউল গানের তালে তালে নাচ প্রদর্শন করে।
একতারার “মহুয়া” ও বাই এর “ঢেউ” এই দুই আগামি অনুষ্ঠানের কলাকুশলি গন মঞ্চে তাদের ভবিতব্য অনুষ্ঠানের অংশবিশেষ প্রদর্শন করে তাদের অনুষ্ঠানে সকল কে আসবার তরে করেন উৎসাহীত।
বাংলা স্কুলের অভিভাবক সহ অনেক গুণী শিল্পীর সমন্নয়ে করা হয় গণসংগীতের আসর। এ পর্বটি সঞ্ছালনায় ছিলেন ফকির সেলিম। একে একে গান পরিবেশন করেন নাসের চৌধুরী, মেরিনা রহমান, শারমিন জাহাঙ্গীর দিনার মনি ও উৎপল বড়ুয়া। পরে প্রিয়াঙ্কা বোস নিয়ে আসে তার একক নৃত্যকলার সাবলিল উপহার। বাংলা স্কুল ড্যান্স একাডেমীর সকল ছাত্র ছাত্রি মনমুগ্ধ নৃত্ত কলার আসর বসে বনানী চৌধুরীর আয়োজনে। তিনি বাংলাস্কুলের নাচের শিক্ষয়িত্রী। সকলের মন প্রান কেড়ে নেই এই উপস্থিত সকলেরই। বাংলা স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রি ও প্রাক্তন গানের শিক্ষয়িত্রী কাউরীর নাচ সকল কে দিয়েছে অপার আনন্দ।
অনুষ্ঠানের মাঝে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব জিয়া উদ্দিন ও বাংলাদেশ দুতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ। সন্ধ্যা গড়িয়ে অন্ধকার আসলেও মঞ্চে বয়ে যায় আলোর ধারা। রুমা ভৌমিকের আয়োজনে চলে বিশেষ অনুষ্ঠান তাতে দর্শকরা ও অংশ গ্রহন করেন।
সবশেষে মঞ্চে আসে “আরিচা ঘাট” এ অঞ্চলের পরিচিত ব্যান্ড দল। মিরো জঙ্গি এর ভরাট কণ্ঠের গানের তালে তালে উপস্থিত দর্শকরা ও যোগ দিন নাচে গেয়ে আনন্দ অনুষ্ঠানে। আরিচা ঘাঁট এর গানের অনুষ্ঠান ছলে রাত ১০ তা অব্দি। সারা দিন শেষ রাত গভীর তথাপি যেন মন যেতে নাহি চায় ছেড়ে এমন আনন্দ অনুষ্ঠান। তথাপি যেতেই যে হবে। এভাবেই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানেন বাংলা স্কুলের প্রধান শামিম চৌধুরী। আগামীতে বাংলাদেশে সাথে একি দিনে বাংলা নববর্ষ পালনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের গ্র্যান্ড স্পসর ছিলেন ডাটা এন টেক।