বাংলা স্কুল জুরিখের আয়োজনে আয়োজিত গত ১৫ই নভেম্বর শনিবারের এরসেল নাক্ট বা লেজে নাক্ট এর এই কর্ম সুচিতে সুইজারল্যান্ড প্রবাসী বাংলাদেশী শিশু এবং অভিভাবক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পুরো সন্ধা রাত জুড়ে বই পড়া, গল্প করা আর সমবেত কন্ঠে গান ও শিশুদের খেলা ধুলা দিয়ে ভরপুর ছিল সুইজারল্যান্ডের শিক্ষাব্যাবস্থায় বিশেষ ভাবে স্থান করে নেয়া এই দিবসের আড্ডাটি। এরসেল নাক্ট বা লেজে নাক্ট ( বই পড়া বা গল্প বলা) , বই পড়তে সবাইকে উৎসাহিত করাই এই দিবসটির লক্ষ্য। গ্রীস্মের শেষে শীতের আগমনে লম্বা সন্ধা অবহেলায় সময় না কাটিয়ে জ্ঞান অর্জনের স্বার্থে ঘরের মাঝখানে আগুন জ্বালিয়ে চারপাশে সবাই গোল হয়ে বসে বই পড়তেন এবং শীতের প্রকোপ থেকে নিজেদের বাচাঁতেন। বেচেঁ থাকার সংগ্রাম এবং শিক্ষার এই সংস্কৃতি সুইজারল্যান্ডের ইতিহাসে প্রায় হাজার বছর ধরে চলতে চলতে আজ লেজে নাক্ট নামে বিশেষ দিবসে পরিনত হয়েছে। দিবসটি অতি গুরুত্বের সাথে পালন করছে দেশটির সকল পাঠাগার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সুইজ প্রবাসী বাংলাদেশীদের নতুন প্রজন্মের মাঝে নিজ দেশের শিকড়ের গল্প জানার আগ্রহ তৈরি করতেই একটু বিশেষ আড্ডার মাধ্যমে জুরিখ বাঙলা স্কুল বরাবরের মতো এবারো তাই আয়োজন করে খেলাধুলা এবং গল্প বলার আসর। এবারের এই দিবসটির শ্লোগান ছিল – প্রতিটি শিশুর রয়েছে খেলার অধিকার। জুরিখের স্থাণীয় বুলিংগার কিন্ডারট্রেপ হলে মিশু এবং অভিভাবকদের মিশ্রনে গড়া এই বই পড়া তথা গল্প বলার আড্ডায় উঠে আসে বাংলা ভাষার রম্য লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীর কথা। যিনি ১৮ টি ভাষায় অনবরত কথা বলতে পারতেন।বন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নেবার সময় মাত্র দুই বছরে তিনি জার্মান আন্চলিক ভাষা এমন ভাবে রপ্ত করেছিলেন যে এই ভাষায় তিনি গল্প বলা প্রতিযোগীতায় সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ২য় স্থান দখল করে নিয়েছিলেন। উপস্থিত বক্তরা বলেন- আমরা যেন বিশিষ্ট রৌম্য লেখক আমাদের বাংলা সাহিত্যের গর্ব পন্ডিত মুজতবা আলীর উপদেশ না ভুলি। তার কথা–
” বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না ” ।মাসের আয় থেকে কিছু দিয়ে অন্তত বই কিনুন। বর্তমান ডিজিটাল যুগের বিভিন্ন নেতিবাচক দিকের বিষয় উল্লেখ করে বক্তারা আরো বলেন- আমাদের শিশুদেরকে কম্পিউটার আর বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিকস খেলাধুলার আসক্তির বিপরীতে এক জ্ঞান অর্জনের একমাত্র উত্তম ব্যাবস্থা হল শিশুদেরকে বই পড়ার প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধিকরা এবং শিশুদের জন্মদিনে অন্যসব উপহারের সাথে যেন একটি বই ও উপহার দেয়া হয়।