রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম আরো বলেন, “আরএমজি সেক্টরে আমাদের সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে বিদেশে অবশ্যই যে কোন প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মেলায় অংশগ্রহন করতে হবে। ফ্রান্সে বা অন্য যে কোন দেশে নিজেদের উদ্যোগে স্বাতন্ত্রভাবে কিছু করতে হলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই স্থানীয় লবিস্ট ও কনসালটিং ফার্মের সহযোগিতা নিতে হবে”। উল্লেখ্য, বাটেক্সপো’র বিগত ২৪টি এডিশন বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠিত হলেও এবারই প্রথম দেশের বাইরে তা আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়। ১৬-১৮ সেপ্টেম্বর ফ্রান্সের রাজধানীতে বিজিএমইএ কর্তৃক নিজস্ব উদ্যোগে ভাড়া নেয়া স্থানে ক্রেতা বা বায়ারশূন্য পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় এবারের নিষ্ফল বাটেক্সপো।
ব্যর্থতার ষোলকলায় ভরপুর এই ইভেন্টের পেছনে প্রাইভেট সেক্টরের কোটি কোটি টাকা ঢালা হয় জলে। বাংলাদেশ থেকে শতাধিক প্রতিষ্ঠানের অংশ নেয়ার কথা থাকলেও শেষতক অংশগ্রহন ছিল পঞ্চাশটির কিছু বেশি প্রতিষ্ঠানের। ফরাসী ব্যবসায়ী মহল দূরে থাক, প্যারিসের কাকপক্ষীও জানতে পারেনি বিজিএমইএ-এর এই বেহুদা ইভেন্টের খবর। তবে প্যারিস বাটেক্সপো’র ব্যানারে বাংলাদেশ থেকে কয়েক ডজন ‘আদম’ নিরাপদে আইফেল টাওয়ারের দেশ হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অনুপ্রবেশ করেছে, এমনটা কানাঘুঁষা চলছে এখন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে।
ফ্রান্সের বাংলাদেশ দূতাবাসকে অনেকটা অন্ধকারে রেখে তথা কোনভাবেই সম্পৃক্ত না রেখে বিজিএমইএ-এর নেক্কারজনক আনাড়িপনার খবর ইতিমধ্যে পৌঁছে গেছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে, যারা প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের পোষাক আমদানি করে থাকে। এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট সূত্র এই প্রতিবেদককে জানায়, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি পরবর্তী বাংলাদেশের যেখানে উচিত যে কোন পদক্ষেপ পরিকল্পনামাফিক নেয়া, সেখানে প্যারিসের খালি ময়দানে বাটেক্সপো’র নামে বিজিএমইএ-এর এই ‘অলস ইভেন্ট’ আন্তর্জাতিক মহলে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে।
ওদিকে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (ইপিবি)’র দেয়া তথ্য মোতাবেক, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে পোষাক রপ্তানি শতকরা ১৪.৮৩ ভাগ বৃদ্ধি পেয়ে ২২.১৭৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো’র পরিসংখ্যান থেকে আরো জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ফ্রান্সের বাজারে বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস সামগ্রী এসেছে ১.৩৯৬ বিলিয়ন ইউএস ডলারের, যার মধ্যে ৮৬৯ মিলিয়ন নীটঅয়্যার এবং বাকি ৫২৭ মিলিয়ন ওভেন গার্মেন্টস।