ইতালির বোলজানো থেকে,জাহাঙ্গির আলম সিকদারঃ আমড়ার চেয়ে কমলা ভাল , আমড়া কেন বিভাগ হল কথাটি এক সময় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল বাংলাদেশে । আন্দোলনের ধারাবাহিকতা ছিল সিলেট কে বিভাগ করা । কিন্তু আন্দোলনের ধারাবাহিকতা তুঙ্গে ছিল বরিশালেও । অভ্যাসগত ভাবে পত্রিকা পড়ার সকালে দেখি বরিশাল বিভাগ ঘোষণা হয়ে গেছে । সিলেট বিভাগ ঘোষণার অপেক্ষা তখনও দয়ার মোহনায় তাকিয়েছিল । ঠিক ঐ সময়কালীন পত্রিকার কলামে লেখকের এই হতাশার ডায়লগ দেখি ।
পাঠক অবাক হওয়ার কিছুই নয় প্রবাসের কলামে প্রবাসের কথাই লিখব তবে ইতালির বোলজানো শহরে বাংলাদেশী কমিউনিটির কথা । না একা থাকা যায় না একাকিত্বের যন্ত্রণা সওয়া যায় । চেষ্টাও করেছিলেন অ্যালেকজান্ডার সিল্কারক কিন্তু দুরসাগরে যখন জাহাজ দেখলেন দিশেহারা হয়ে নিজের পরনের বস্ত্র লাঠির মাথায় উড়িয়ে দিয়ে বাঁচার আগ্রহ দেখালেন চলন্ত জাহাজ কে আমাকে বাঁচাও ।
সমাজের সমাজ পতিদের রাজনীতির দাবানল থেকে রেহাই পেতেছি না কি দেশে কি বিদেশে । গায়ে মানেনা আপনি মোড়ল ঠিক এই মোড়লদের কারনে নিরীহ জনতা ইতিহাস থেকেই বোধ করি নিষ্পেষিত , যাকে বলে পাটা পুতায় ঘসাঘসি মরিচের শেষ । ঠিক এমনি উদাহরণ প্রবাসের ইতালিতে বাস্তবতা যেন একবিংশ শতাব্দীতেও আজ বোলজানো প্রভিন্সে । একতার মিউজিক বেজে উঠলেও যুগ পার হয়ে গেল অনেক আগেই কিন্তু ব্যক্তি ব্যক্তির স্বার্থে হলেও কমিউনিটির স্বার্থে আর একত্রিত হতে পারলাম না, এই পরাজয়ের গ্লানি কারো একা নয় গোটা বাংলাদেশীদের জন্য । বৃহৎ স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্র স্বার্থ ত্যাগ করা আমাদের কাগজ কলমে থাকলেও বিবেক নীতির বাস্তবতা নেই তা প্রমান করে ।
সৃষ্টি হল বাংলাদেশ সমিতি বোলজানোতে ভ্রাত্রিত্যের বন্ধন জাতিয় স্বার্থ । সিলেকশন নির্বাচিত হল কার্যকরী কমিটি সেই ২০০০ সালের কথা বলছি সভাপতি মির্জা লতিফুল হককে সভাপতি করে । ঠিক সেই সময় বুদ্ধি জীবীদের মতভেদে তছনছ করে দিল সৃষ্টি হল এক অংশ নিয়ে ।বাংলাদেশ পিপলস এসোসিয়েসন । সৃষ্টি হল গন জাগরন কে হবে বাংলাদেশ পিপলস এসোসিয়েসন এর সভাপতি ? তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিন চাই !! আর্থিক পিঞ্জরেরও ক্ষতি হল অনায়াসে নিঃসন্দেহে জয় ঝঙ্কারে বেজে উঠলো সে সময় যেন যুদ্ধের দামামা আনোয়ার হোসেন গ্রুপ আর সফিউল আলম সিরাজ সিকদারের গ্রুপ ।কিন্তু কি লাভ কমিউনিটি থেকে বিভাগ হয়ে ?
আমরা প্রবাসী তাই প্রভিন্স চায় একতার একটি সামাজিক প্রতিনিধি একটি দেশের ।আঞ্চলিক ভিত্তিক নয় জাতীয় স্বার্থে ঠিক জাতীয় কমিউনিটি ।মত ভেদ আমদের কে যে কত পিছু টানে জানিনা ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা আছে কিনা ভাবার বিষয় ছিল ।১৭৫৭ সালের পলাশীর আম্রকাননে নবাব সিরাজুদ্দউলার পরাজয়ের কারন শুধু মিস্টার জাফর আলিই অর্থাৎ মির জাফর আলীই ছিল না কিংবা ঘসেটি বেগমই ছিলেন না ছিল কিছু মাথা ফুলা লোভী মীরজাফররা ঘসেটি বেগমরাও ছিল কম কিসে ? কিন্তু কি হল ? পরাজয় শুধু সিরাজুদ্দউলার ছিলনা ছিল পুরু ভারত বর্ষের ।
বিবেকের তাড়নায় ফিরে আসতে সংকোচ রাখেনি একত্রিভুত হওয়ার মঞ্চে নির্বাচিত সভাপতি বাংলাদেশ পিপলস এসোসিয়েসন এর জনাব সফিউল আলম সিরাজ সিকদার প্যানেল গংরা । আবার মিলে মিশে এক সমিতিই থাকবে এই বিশ্বাস ও সিদ্ধান্তে প্রাক্তন সভাপতি বাংলাদেশ সমিতির মির্জা লতিফুল হকের সাথে আলাপ আলোচনা সর্বদাই চালিয়ে যান বাংলাদেশ পিপলস এসোসিয়েসন এর পক্ষ থেকে । কিন্তু আবারও মতভেদের জলাঞ্জলি দিতে হল বোলজানোতে অবস্থানরত বাংলাদেশ কমিউনিটির লোকজনদের এবং জন্ম হল জিদের বসভুতিতে আর একটি বাংলাদেশ এসোসিয়েসন এর নাম বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি । নিষ্ক্রিয় হল অনেকটাই বাংলাদেশ সমিতি এবং তিন সমিতি আবারও এক করে একটি সমিতি করার সুমতিতে ঘুরিয়ে দাড়ার চেষ্টা করল তিন সভাপতি
১ / জনাব মির্জা লতিফুল হক ।
২ / জনাব সফিউল আলম সিরাজ সিকদার
৩ / জনাব মিজানুর রহমান ।
সাথে আমরা বাংলাদেশ কমিউনিটির সাধারন জনগন সপ্নে দিন গুনছিলাম । দিন যায় ,মাস,বছর যুগ কিন্তু অপেক্ষার ফসল ধুলুয় মিশিয়ে দিল এই তিন মাথা । ধুলিস্যাত করে দিল সপ্ন দেখার প্ল্যাটফর্ম এই বোলজানো বাংলাদেশীদের । আসায় গুড়ে বালি জনতার দরদ বুদ্ধিজীবী গংদের কাছে । তাই বলে থেমে থাকেনি সমাজ আর সমাজের জনগন , নিভু নিভু করে এগিয়ে যাচ্ছে আলয় আলোকিত হয়ে বাংলাদেশ সমিতি , থেমে থাকেনি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি পিপলসের প্লাটফর্মে বাতি দেওয়ার জনগণও নিস্তেজ হয়ে গেল আজ অবধি ২০০০ থেকে ২০১৪ সালে এসেও ।
হঠাত পুরনো দিনের সৃতি কে ধরে রাখার জন্য, নাকি কমিউনিটির জনগন কে আলোর দিশারী করার জন্য এই সুবুদ্ধি উদয় ঘটলো নাকি জিদের বসুভুতি হয়ে হবে বাংলাদেশ পিপলস এসোসিয়েসন কে দ্বার করানোর জন্য ভুলের মাসুল কিংবা জনগনের কৈফিয়ত এড়ানোর জন্য,নাকি এত বছর পর ভুলের মাসুল শোধ করার জন্য তরিঘরি করে একটি আহবায়ক কমিটি করে ওয়াদা বদ্ধ করে গেলেন প্রাক্তন বাংলাদেশ পিপলস এসোসিয়েসন এর সভাপতি জনাব সফিউল আলম সিরাজ সিকদার । গাধা কে খোঁচা মারলে যদি তিন মাস পরে সারা পায় এমনটি ধারনা এখনো প্রত্যন্ত অঞ্চলের সমস্যা কোথায় ! ভুল মানুষের হয় চিরাচরিত নিয়ম যদিও প্রায় ১৪ বছর পার হয়ে গেল মানুষের প্রস্ন থেকেই যাবে একটি নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হয়ে কেন জন বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘুমিয়ে থাকল জনগন কে পথে নামিয়ে কাদের আসায় ?পাঠক প্রবাসে বাংলাদেশী কমিউনিটির দুঃখ কিছুটা হলেও হালকা করলাম মস্তিস্ক ঝরা কলমে , কারন বিচারের রায় নিরবে কাঁদে । দায়িত্ব না বিলুপ্ত না পরবর্তী কাউকে বুঝাইয়া দেয়াও সুধু অবহেলাই নয় বিবেকের বিচারেও বন্দী । উজাড় করা কিংবা অবহেলা অথবা সরলতা যাই বুঝান না কেন আমরা সবাই ক্ষতি গ্রস্থ । তাই হঠাৎ বোধ উদয়ের হতাশা সত্যি সেই লেখকের ছন্দের মত ঢেউ উঠে গেল আমড়ার চেয়ে কমলা ভাল , আমড়া কেন বিভাগ হল !