বাংলাদেশের ফেনী জেলার ছাগলনাইয়ার হরিপুর গ্রামের ফারুক আবু তাহের ২০০৮ থেকে স্থায়ীভাবে ফিনল্যান্ডে বসবাস করছেন। তার আগে বেশ ক’বছর ছিলেন সাইপ্রাসে। ফিনল্যান্ডে স্বল্প সময়ের বসবাস হলেও অনেকটা হঠাত করেই এবছর তাঁর মেইনস্ট্রিম রাজনীতিতে অনুপ্রবেশ। ১১ এপ্রিল এই প্রতিবেদকের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় এমনটাই জানালেন ফারুক অঅবু তাহের। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে পেরেই দারুন উজ্জ্বীবিত তিনি। বললেন, “ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ইউরোপ জুড়ে সবার সমান অধিকার শতভাগ নিশ্চিত করতে চাই আমি। কোয়ালিফিকেশান থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় আমরা বিভিন্ন দেশে নিজেদেরকে মেলে ধরতে পারছি না, লিডারশিপের গুণাবলী থাকা সত্ত্বেও নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হতে পারছি না আমরা”।
প্রায় ৩ হাজার বাংলাদেশির বসবাস ফিনল্যান্ডে, যাদের বেশির ভাগই বসবাস করেন রাজধানী হেলসিংকিতে। এখানকার বাংলাদেশ কমিউনিটি ফারুক আবু তাহেরকে এতোদিন না চিনলেও ইউরো নির্বাচনে বামপন্থী রাজনৈতিক দল ‘ভাসেম্মিস্ত’ কর্তৃক তাঁকে প্রার্থী ঘোষণার পর গোটা ফিনল্যান্ডের মেইনস্ট্রিম রাজনৈতিক অঙ্গনে উচ্চারিত হচ্ছে তাঁর নাম। আলাপচারিতায় এই প্রতিবেদককে তিনি আরো বলেন, “২০০ আসন বিশিষ্ট ফিনিশ পার্লামেন্টে আমাদের দলের যে ১২ জন প্রভাবশালী এমপি রয়েছেন তাঁদের ২ জনের সাথে আমার অনেক আগে থেকেই ঘনিষ্ঠতা ছিলো এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে হিলসিংকিতে পার্লামেন্ট হাউজে তাঁরাই আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব করেন ইউরো নির্বাচনে প্রার্থী হবার”।
বাংলাদেশি-ফিনিশ ডুয়েল সিটিজেনশিপ ফারুক আবু তাহেরের। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হবার মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যে তিনি উজ্জ্বল করেছেন লাল-সবুজ পতাকার ভাবমূর্তি। প্রবাসে বাংলাদেশ ভিত্তিক রাজনীতি চর্চার ঘোর বিরোধী ফারুক আবু তাহের। দুঃখপ্রকাশ করে তিনি বলেন, “ইউরোপের যেকোন দেশেই আইনগতভাবে শতভাগ অবৈধ হলেও বাংলাদেশ ভিত্তিক রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা বা অংশগ্রহন তথা এর আনুষ্ঠানিক চর্চার মধ্যে দিয়ে দেশে দেশে বাংলাদেশিদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে বছরের পর বছর, ইন্টিগ্রেশনের জন্য যা এক বিশাল প্রতিবন্ধকতা।” প্রবাসে বাংলাদেশ ভিত্তিক রাজনীতি চর্চা পরিহার করে যার যার দেশের মেইনস্ট্রিম রাজনীতিতে অংশগ্রহনের মাধ্যমে নিজস্ব মেধাকে কাজে লাগাবার আহবান জানান ফারুক আবু তাহের।