বাংলাদেশে অনেকে ইউরোপকে স্বপ্নের রাজ্য মনে করে থাকেন। কিন্তু সঠিক পথে ও দিকনির্দেশনায় এগোতে না পারলে এই স্বপ্নরাজ্য অনেকের জন্য অভিশাপ বলে মনে হবে। আমাদের দেশ থেকে একসময় প্রচুর ছাত্র বিলেতে পাড়ি জমাতেন উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য। যুক্তরাজ্য অভিবাসন কর্তৃপক্ষের মতে, গত এক দশকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছেন এমন বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা চার লাখের কাছাকাছি। শুধু ২০০৯-১০ সালে এসেছেন প্রায় পাঁচ হাজার ছাত্রছাত্রী।
এখন প্রশ্ন হলো, যুক্তরাজ্যে এত ছাত্রছাত্রী আসার কারণ কী? ২০০৯ সালের মে থেকে যুক্তরাজ্য স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনে। ট্রিট-৪ নামে স্টুডেন্ট ভিসা প্রবর্তনের ফলে একজন ছাত্র অতিসহজে ছাত্র হয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের অধিকার পান। এ ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষার দক্ষতা প্রমাণের দরকার নেই। শুধু উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট থাকলেই আসার সুযোগ পাওয়া যেত। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে এককালীন পরিশোধ করতে হতো বিশাল অঙ্কের টাকা। এতসব কিছু করার পেছনে একটাই উদ্দেশ্য, জীবনটাকে ভালো একটা জায়গায় দাঁড় করানো। পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরি করে কিছু টাকা আয় করে নিজের ভবিষ্যৎটাকে উজ্জ্বল করা।
কিন্তু বর্তমানে চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশিরা যুক্তরাজ্যে আসেন, তার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। একদিকে কলেজের বাড়তি টিউশন ফি, অন্যদিকে কাজের ক্ষেত্রে পুলিশের ঝামেলা। সব মিলিয়ে ভালো নেই যুক্তরাজ্যে বাঙালি ছাত্ররা।
যা-ই হোক এটা হলো যুক্তরাজ্যের কথা। এবার আসি সেন্ট্রাল ইউরোপের কথায়। বর্তমান সময়ে একটা জিনিস লক্ষ করার মতো যে বাংলাদেশি ছাত্ররা বিনা বেতনে অধ্যয়ন করা যায় এমন সব দেশগুলোতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। যেমন জার্মানি, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে। গত বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ছাত্রছাত্রী জার্মানি ও ফিনল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছেন। তার কারণ হলো, পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোনো টিউশন ফি দাবি করে না। সম্পূর্ণ বিনা বেতনে আপনি পড়াশোনা করতে পারছেন। অন্যদিকে কাজের ক্ষেত্রেও ইউরোপিয়ান আইন অনুযায়ী যত ঘণ্টা করার অনুমতি আছে সেটা করতে কোনো সমস্যা নেই।
তবে ইউরোপে আসার ক্ষেত্রে অনেকে আবার দালালের খপ্পরে পড়ে অনেক টাকা-পয়সা নষ্ট করেন। এসব দেশে আসতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কোনো প্রকার টাকা-পয়সা প্রদান করতে হয় না। কিন্তু কতিপয় বাংলাদেশি এজেন্ট ১০০ শতাংশ ভিসা করিয়ে দেবে বলে অনেকে ছাত্রছাত্রীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে বড় অঙ্কের টাকা। বিশেষ করে জার্মানির ক্ষেত্রে এমন ঘটনা অহরহ ঘটছে। অনেক টাকার বিনিময়ে স্টুডেন্টস ভিসার কথা বলে লাংগুয়েজ কোর্সের ভিসা দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে জার্মানিতে। সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে এমনটি ঘটছে।
তাই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রী মিলে ইউরোপ আসতে ইচ্ছুক ভাইবোনদের জন্য সম্পূর্ণ ফ্রি ইনফরমেশন সার্ভিস দিতে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে দুই গ্রুপে খুলেছেন। ওই গ্রুপের সব সদস্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অধ্যয়নরত আছেন। তাঁরা বাংলাদেশি যেসব ছাত্র ইউরোপ আসার কথা ভাবছেন, তাঁদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
এ জন্য আপনাকে কোনো প্রকার টাকা-পয়সা প্রদান করতে হবে না। শুধু তাঁদের ফেসবুক গ্রুপে যোগদান করে জেনে নিতে পারবেন প্রয়োজনীয় তথ্য। তাঁদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারবেন ইউরোপ আসার আগে ও পরে কী কী করণীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির তথ্য, স্কলারশিপ ও অভিবাসনসংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য।
কয়েকজন বাংলাদেশি ছাত্রের উদ্যোগে এই ফেসবুক গ্রুপগুলো পরিচালিত হয়। তাঁদের উদ্দেশ্য একটাই, বাংলাদেশি যাঁরা ইউরোপে পড়াশোনা কিংবা চাকরি নিয়ে আসতে ইচ্ছুক, তাঁদের সঠিক পথ দেখানো। কেউ যেন দালালের খপ্পরে না পড়েন।
যাঁরা এ সব দেশে আসতে চান, তাঁরা সব ধরনের সেবা পেতে হলে যুক্ত হন তাঁদের ফেসবুক পেজে। আশা করি, আপনাদের কাঙ্ক্ষিত বিষয়গুলো আপনি তাঁদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারবেন। ফেসবুকে যোগ দিতে এই লিংক দুটি অনুসরণ করুন: www.facebook.com/Bangladesh.Europe,www.facebook.com/study.abroad.eu।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন।
শাহাদাত হোসেন, অসলো, নরওয়ে
shahadat_oslo@yahoo.no
shahadat_uk@yahoo.com
[[ আপনি জানেন কি? আমাদের সাইটে আপনিও পারবেন আপনার নিজের লেখা জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বা আপনার এলাকার খবর তুলে ধরতে জানতে “এখানে ক্লিক করুণ” তুলে ধরুন নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান। ]]