১. সব সময় মনে রাখবেন আপনি সাবধানে চালালেও অন্যরা সাবধানে নাও চালাতে পারে। কাজেই যে কোন সময় যে কোন ঘটনার জন্যে প্রস্তুত থাকতে হবে। উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগাতে হবে। হয় স্পিড বাড়াতে হবে বা কমাতে হবে দুর্ঘটনা ঠেকাতে।
২. দুই ঘন্টা আগেও ম্যানহোলের ঢাকনা লাগান থাকতে পারে আপনার পরিচিত রাস্তায়। কাজেই বিলবোর্ড বা রিক্সায় সুন্দরি মেয়ের দিকে মনোযোগ না দিয়ে বাইক চালানো তে মনোযোগ দিতে হবে।
৩. ফাঁকা রাস্তা হলেও আপনি লেফ্ট রাইট বা স্ট্রেইট সিগনাল দিন। কারন আপনার মনের কথা অন্য চালক জানে না। তাকে জানতে দিন।
৪. যদি বেশি সমস্যা না হয়, তাহলে দিনের বেলায় হাইওেয়েতে দ্রুত মোড় নেবেন না।
৫. ওভার টেক করেবেন কন্ফিডেন্টলি। আর সেসময় হর্ন দিয়ে যে গাড়িকে ওভারটেক করেছেন, তাকে হর্ন + সিগনাল দিয়ে জানান দিন।
৬. আপনি যে গাড়ির সাথে মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন অথবা ডানে বামে মোড় নিতে চাচ্ছেন, সামনের সেই গাড়ির ড্রাইভারের সাথে আই কন্ট্রাক করুন। চোখের ভাষা সিদ্ধান্ত নিতে খুব সহায়ক হয়।
৭. কখনও ভাবা যাবে না যে, আপনার চাইতে কেউ দ্রুত বাইক চালাতে পারে না। যদি রেস খেলতে যান, তবে আলাদা কথা।
৮. হাইওয়েতে কিছু কিছু প্রাইভেট কারের হর্ন শোন যায় না, লো সাউন্ডের জন্যে বা হেলমেট পরে থাকার জন্যে। তাই হটাৎ করেই পেছন থেকে আপনাকে ওভারটেক করতে পারে। ভয় পেয়ে খুব দ্রুত সাইড দিতে যাবেন না। আপনি ব্যালেন্স হারিয়ে ফেলতে পারেন। দ্রুত ব্রেক করার কোন প্রশ্নই আসেনা। যদিও বা করেন তবে দুই ব্রেকই এক সঙ্গে সমান ব্যালেন্স করে।
৯. সিঙ্গেল হার্ড ব্রেক করার চাইতে, আমি ডাবল ব্রেক করে ভাল পারফরমেন্স পাই। সিঙ্গেল ব্রেকে, পেছনের চাকার ক্ষেত্রে স্লিপ করার চান্স থাকে, আর সামনেরটার ক্ষেত্রে পল্টি খাবার চান্স থাকে।
১০. বৃষ্টির ভেতর রাস্তা যতই ফাকা হোক, স্পিড কখনও ৪০ (ফোরটি)র উপর তুলবেন না। কারন ব্রেকে পানি ঢুকে বা রাস্তা ও টায়ারের ঘর্ষন বল কমে ব্রেকের পারফরমন্সে ৩০% এ নেমে আসে। কাজেই সাবধান।
১১. কোচ গুলোকে বিশ্বাস করা যায়, কিন্তু হাইওয়েতে ট্রাককে কোন বিশ্বাস নেই। ট্রাক চালকরা অনেক টেনশনে থাকে, অনেক নেশা করে, রাত্রিকালীন গাড়ি বেশি চালায় বলে ক্লান্ত থাকে । কাজেই ট্রাকের আগে পিছে থাকার সময় সাবধান।
১২. স্পিডব্রেকার: আমি এমনও স্পিড ব্রেকার পাইছি যা মোটামুটি ৬ ইঞ্চির এদিক ওদিক হবে। আবার বেশির ভাগের কোন জেব্রা কালার বা পাশে কোন সাইনবোর্ড নেই। হটাৎ দেখলেন ১০ হাত সামনে স্পিডব্রেকার তখন কি করবেন? অনেকে ধুম করে ব্রেক করে। আর স্লিপ কাটে বা সিটকে যায়। আমার সাজেশান হল, বাইকটাকে সোজা রাখুন, শক্ত হাতে হেন্ডেল ধরে রাখুন। আর নরমাল ব্রেক করুন। নরমালি যতটা স্পিড কমে সেটাই বোনাস। জোরে হয়ত ঝাকি খেলেন, তাতে কিছু যায় আসে না।
১৩. লঙ জার্নি করার সময় আপনার অজান্তেই হাত ঝি ঝি ধরে যায় বা পেশির জড়তা চলে আসে। তাই যখন ব্রেক কষতে চাইছেন, পারবেন না। হয়ত পারবেন, তবে দেরি হবে। তাই একটানা চালানোর ক্ষেত্রে দেড় থেকে দুঘন্টা পর ১৫ মিনিটের ব্রেক দিন। আপনার বাইকের ইঞ্জিনের জন্যেও ব্রেক দেয়াটা ভাল। হাত পা ঝাকা ঝাকি করে নিন, যদি ঘেমে যান তবে সেটা বেশি ভাল।
১৪. শীতের ভেতর ভাল নরম হ্যান্ড গ্লোভসের তুলনা হয়। হাতের কব্জি আর জুতা না পড়লে পা, এই দুটা জিনিস ঠান্ডায় অসার হয়ে যায়। ব্রেক করার জন্যে হাতের আঙ্গুল বা পায়ের পাতা কাজ করে না।
১৫. হাইওয়েতে রাস্তায় পিচ ঢালার জন্যে পার্ক লেনের চেয়ে ১-২ইঞ্চি উচু নিচু হয় মেইন রোড । অনেক সময় ডান পাশ দিয়ে অন্য গাড়ি ওভারটেক করতে থাকে। তখন হয়ত আপনাকে বামপাশের ৩ হাত চওড়া পার্ক লেনের অংশে বাইক নামিয়ে দিতে হয়, অনেকে স্পিড না কমিয়েই আবার মেইন রোডে উঠতে চায়, অত:পর এক্সিডেন্ট ঘটে। আমি বলব, ভাই ১ মিনিট সময়ের জন্যে কি একমাস কাটা ছেলা বা ভাঙ্গা হাত পা নিয়ে পড়ে থাকা ভাল? ২০-৩০ কিমি স্পিডে নিয়ে আস্তে করে মেইন রোডে উঠুন।
১৬.মারকারী হেলমেট রাতের জন্যে খুব খারাপ। তবে যদি ফগকাটার বা উন্নত হেডলাইট থাকে তাহলে অন্য কথা। আমার সাজেশান হল দিনে বা রাতের সুবিধার জন্যে সাদা গ্লাসের হেলমেট নির্বাচন করা উচিত। মার্কারী বা কাল কাচের হলে দিনের বেলায় অন্য ড্রাইভারে সাথে আই কন্ট্রাক করা যায় না। রাতে তো প্রশ্নই আসে না।
১৭. অনেক হেলমেটে হর্ন এর শব্দ ঠিক কোন পাশ থেকে আসছে, সেটা বোঝা যায়না। ভাল মানের হেলমেটে এই সমস্যা হয় না। আমার একটা হেলমেট ছিল, কোন গাড়ি সামনে থেকে হর্ন দিলে মনে হতো পেছনের কোন গাড়ি হর্ন বাজাচ্ছে। মদন সেজে জেতাম তখন। এটা এয়ার ভেন্টিলেশনের জন্যে হতো।
১৮. বাইকের চেইন ছিড়ে যেতে পারে যদি ৩-৪ জন নিয়ে যেন তেন ভাবে পিকআপ টানতে থাকেন। যদি ভাগ্য ভাল থাকে , পায়ের কোন ক্ষতি হবে না। তবে পেছন থেকে কেউ ধাক্কা দিতে পারে। হাইওয়েতে কোন গাড়ি ওভারটেক করার সময় আমার এই জিনিসটা বারবার মনে পড়ে। আমার ছোট ভাইয়ের এরকম হয়েছিল।
১৯. অনেকে কাধে ভাড়ি ব্যাগ নিয়ে লঙ জার্নি করে। আমার অভিমত হল, এতে কমর ব্যথা হয়। আর সেকেন্ডলি, এটা অনেক সময় পুরা বডির ব্যালেন্স কে নষ্ট করে ফেলে। কারন পিঠের ঐ ভাড়ি ব্যাগেরও একটা গতি জড়তা আছে। তাই ওর ভাড়টাও আপনার উপর এসে ব্যালেন্সটাকে নষ্ট করে দেয়। ডানে/বামের বাইকের পেছনে নিতে পারলেই মনে হয় ভাল।
২০. চাকার এয়ার প্রেসার ঠিক রাখলে পান্চার কম হয় বা বাস্ট হয় না। টায়ার লাস্টিং করে। বাতাসের চাপ সামনের টায়ারে ৩৫, পেছনে ৪৫ রাখাতে হবে।
সবশেষ কথা হল, ধৈর্য্য ধরে চোখ কান সজাগ রেখে, যে কোন প্ররিস্থিতি ঘটতে পারে ভেবেই বাইক চালাতে হবে।ভাল থাকবেন সবাই।
[[ আপনি জানেন কি? আমাদের সাইটে আপনিও পারবেন আপনার নিজের লেখা জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বা আপনার এলাকার খবর তুলে ধরতে এই লেখায় ক্লিক করে জানুন এবং তুলে ধরুন। নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান। আর আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে রয়েছে অনেক মজার মজার সব ভিডিও সহ আরো অনেক মজার মজার টিপস তাই এগুলো থেকে বঞ্চিত হতে না চাইলে এক্ষনি আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে লাইক দিয়ে আসুন। এবং আপনি এখন থেকে প্রবাস জীবনে আমাদের সাইটের মাধ্যমে আপনার যেকোনো বেক্তিগত জিনিসের ক্রয়/বিক্রয় সহ সকল ধরনের বিজ্ঞাপন ফ্রিতে দিতে পাড়বেন। ]]