এলসি (LC) কি? – প্রথমেই একটু ধারণা নিয়ে নেই এই এলসি কি। এলসি (LC) হচ্ছে সংক্ষিপ্ত নাম যার সম্পূর্ণ করলে হয় লেটার অব ক্রেডিট(ইংরেজিতে) আর ইতালিতে এটিকে বলে লেত্তেরা ডি ক্রেডিটো(Lettera di credito). এটা সাধারণত বিদেশ থেকে পণ্য বা যন্ত্রাংশ আমদানী করার জন্য অবশ্যই ব্যাংকের মারফত এলসি করতে হয় । এই এলসির মাধ্যমেই সরবরাহকারীরা একদেশ থেকে অন্য দেশে পন্য আমদানি রপ্তানি করে থাকে। এলসি করতে হলে সবার আগে আপনার কোম্পানীর টিন ভ্যাট করাতে হবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আর ইতালিতে এলসি করাতে হলে আপনার নামে পারতিতা ইভা ও কামেরা ডি কমেরচিওতে রেজিস্ত্রি করা থাকতে হবে। এরপর ব্যংকে গিয়ে কোম্পানীর নামে অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। তারপর ব্যাংক থেক এলসিএ ফর্ম কালেক্ট করে পূরণ করে ব্যাংকে জমা দিতে হয়(ইতালির ক্ষেত্রে ব্যাংক থেকে এই ফর্ম সংগ্রহ করতে হয় আপনার মালের উপর ভিত্তি করে) এই ফর্মে কিছু তথ্য প্রদান করতে হয়। যেমন কি পন্য, দাম কত, কোন দেশ থেকে আসবে প্রভৃতি। আরো সহজ ভাবে বললে বলা যায় এটা হচ্ছে আপনি কোন দেশ থেকে কোন কোম্পানির কাছ থেকে যখন কিছু আমদানি করবেন তখন কিন্তু তাদের সেই পন্ন বাবদ আপনাকে তার মূল্য পরিষোদ করতে হয়, কিন্তু যেহেতু আপনি ওদের চিনেন না তাই আপনার পণ্য হাতে না পেয়ে আগে থেকে ওদের কে মূল্য পরিশোধ করার পর যদি ওরা কোন ঝামেলা করে তখন আপনি কি করবেন? আবার আপনার মতো তারাও চিন্তা করতে পারে যে আপনাকে তারা পণ্য পাঠিয়ে দিলো এবং আপনি পণ্য হাতে পেয়ে তাদের আর টাকা পরিশোধ করছেন না, তখন তারাই বা কি করবে কার কাছে যাবে। কাজেই এই আমদানি ও রপ্তানি এই দুই জনের মধ্যে বিশ্বাস ও ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার জন্যই এই এলসির আবির্ভাব। আশা করি আপনাদের বুঝাতে পেরেছি। আর না বুঝলে নিচে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা আরো ভালো করে বুঝিয়ে দিবো।
কিভাবে এলসি করতে হয় এ বিষয়ে নিচে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হোলঃ
পর্যায় ১: কোম্পানীর ট্রেড লাইসেন্স, টিন, ভ্যাট করা। আইআর সি (ইমপোর্ট রেজি: সার্টিফিকেট) করা।
পর্যায় ২: কোন ব্যাংক এ কোম্পানীর একাউন্ট করা।
পর্যায় ৩: যে পন্য আনবেন তার ইনডেন্ট কালেক্ট করা (ধরা যাক আপনি ১৫ টন নিউজপ্রিন্ট কাগজ আনবেন চাইনা থেকে। এখন যে কোম্পানী থেকে আনবেন সে কোম্পানীর বাংলাদেশ প্রতিনিধির কাছে গিয়ে দাম দর ঠিক করে একটা ডকুমেন্ট নেবেন। এটাই ইনডেন্ট। আর সে কোম্পানীর যদি বাংলাদেশ প্রতিনিধি না থাকে তাহলে সে কোম্পানীতে সরাসরি মেইল করে দাম ঠিক করে ডকুমেন্ট আনাতে হবে। তখন এটাকে বলা হয় পি আই বা প্রফরমা ইনভয়েস। এতে পণ্যের বিস্তারিত, দাম, পোর্ট অব শিপমেন্ট এসব তথ্যাদি থাকে।)আপনাদের জন্য নিচে একটি ছবি দিয়ে দেওয়া হল।
পর্যায় ৪: ব্যাংক থেকে এলসিএ (লেটার অব ক্রেডিট এপ্লিকেশন) ফর্ম কালেক্ট করে ইনডেন্ট/পিআই অনুযায়ী তা পূরন করে ব্যাংক এ জমা দেয়া।
পর্যায় ৫: এলসি মার্জিন জমা দেয়া । প্রথম দিকে ব্যাংক এ পুরো টাকাটাই জমা দিতে হবে। ধরা যাক এলসি ভ্যালু ২০,০০০ ডলার। ব্যাংক এ আপনাকে ১৬ লাখ টাকা জমা দিতে হবে। তবে আস্তে আস্তে ব্যাংকের সাথে ব্যবসা বাড়লে তখন ১০-২০% মার্জিন দিয়ে এলসি খুলতে হবে। টাকার সাথে অন্যান্য কিছু ডকুমেন্টও দিতে হবে। যেমন:
- আপনার কোম্পানীর সব কাগজ (ট্রেড লাইসেন্স, টিন, ভ্রাট, আইআরসি)
- ইনডেন্ট/পিআই এর ৩/৪ টি কপি।
- সাপ্লায়ার কোম্পানীর ব্যাংক ক্রেডিট রিপোর্ট
- ইন্সুরেন্স কভার নোট (যে কোন ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে ইনডেন্ট দেখিয়ে ফি দিয়ে এটা নিত হবে)
এরপর ব্যাংক আপনাকে এলসির একটা কপি দেবে। অরিজিনালটা পাঠিয়ে দেবে বিদেশে সাপ্লাইয়ারের কাছে। আশা করি এই পোস্টটি আপনারা যারা নতুন তাদের কিছুটা হলেও উপকারে আসবে। এরকম আরো অনেক কিছু জানার জন্য আমাদের সাথেই আমাদের পরিবারের একজন হয়ে থাকুন। এবং আমাদের সম্পর্কে আপনার পরিচিতদের জানিয়ে তাদের কেও সাহায্য করুণ তাদের প্রবাস জীবনের সকল সমস্যার সমাধান পেতে। ধন্যবাদান্তে আমিওপারি ডট কম ।
[[ আপনি জানেন কি? আমাদের সাইটে আপনিও পারবেন আপনার নিজের লেখা জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বা আপনার এলাকার খবর তুলে ধরতে এই লেখায় ক্লিক করে জানুন এবং তুলে ধরুন। নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান। আর আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে রয়েছে অনেক মজার মজার সব ভিডিও সহ আরো অনেক মজার মজার টিপস তাই এগুলো থেকে বঞ্চিত হতে না চাইলে এক্ষনি আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে লাইক দিয়ে আসুন। এবং আপনি এখন থেকে প্রবাস জীবনে আমাদের সাইটের মাধ্যমে আপনার যেকোনো বেক্তিগত জিনিসের ক্রয়/বিক্রয় সহ সকল ধরনের বিজ্ঞাপন ফ্রিতে দিতে পাড়বেন। ]]
দেশীয় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে ওয়ার্ডার দিলে টাকার লেনদেন কিভাবে করলে সুবিধা হয়? এখানেও কি LC খোলার প্রয়োজন আছে?