যুবরাজ শাহাদাতঃ সুইডেন এর ডিগ্রী ওয়ার্ল্ড ক্লাস ডিগ্রী এবং ওয়ার্ল্ড এর বেস্ট নামকরা ইউনিভার্সিটি গুলো রয়েছে।পড়াশুনার মান নিয়ে সন্দেহ করার কোনো প্রশ্নই আসে না কারন বিভিন্ন শাখায় খ্যাতিমান নোবেল লরেটরা সুইডিশ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে পড়ান।পরিবেশ বান্ধব লাইফস্টাইল এবং গ্লোবাল ক্যারিয়ার এর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবেন। আন্তর্জাতিক ছাত্র-বন্ধুত্বপূর্ণ এনভায়রনমেন্ট। ওয়ার্ল্ড এর শান্তিপ্রিয় মানুষ এবং দেশগুলোর মধ্যে সুইডেন প্রথম ৩ এর ভিতরে। আর উপরের বিষয় গুলো যদি আপনের সাথে মিলে যায় তাহলে দেরী না করে আজই শুরু করুন সুইডেন এ স্টাডি নিয়ে।
এই আর্টিকেল এ কিভাবে স্টাডি এর জন্য এপ্লিকেশন করবেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। কত সময় পর্যন্ত কাজ করতে পারবেন? পার্ট টাইম জব সম্পর্কে ও কিভাবে ওয়ার্ক পার্মিট এ যেতে পারবেন স্টাডি পার্মিট থেকে এবং পার্মানেন্ট হবেন? ওয়ার্ক পার্মিট এর জন্য সর্বনিম্ন্ন কত ইনকাম দেখাতে হবে? ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
আসুন তাহলে এবার জেনে নেই স্টাডি এর জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো:
সেমিস্টার:
১) স্প্রিং সেমিস্টার ( মধ্য জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত)।
২) অটাম সেমিস্টার (প্রথম সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য জানুয়ারী পর্যন্ত)।
এপ্লিকেশন কখন থেকে শুরু:
১) স্প্রিং সেমিস্টার এর এপ্লিকেশন শুরু: মে মাসের শেষের দিকে।
২) অটাম সেমিস্টার এর এপ্লিকেশন শুরু: মধ্য অক্টোবর থেকে।
আসুন এবার দুই সেমিস্টার এর মধ্যে একটু পার্থক্য টা দেখে নেই:
স্প্রিং সেমিস্টার এ সাধারণত ৬ মাসের শর্ট কোর্স গুলো তে এপ্লিকেশন করা যায় এ কারণে আপনি ৬ মাসের ই ভিসা পাবেন। অটাম সেমিস্টার এ আপনি ব্যাচেলর এবং মাস্টার্স প্রোগ্রাম এ এপ্লিকেশন করতে পারবেন। ব্যাচেলর প্রোগ্রাম সাধারণত ৩ বছরের হয় তবে কিছু কিছু ইউনিভার্সিটি তে ৪ বছরের ও হয়। মাস্টার্স প্রোগ্রাম ১ এবং ২ বছরের হয়।ইউনিভার্সিটি স্টাডিস যত বছরের ই হোক না কেন আপনি ১৩ মাসের বেশি ভিসা পাবেন না। তবে আপনার ভিসা যত মাসের ই হোক না কেন তা মেয়াদ শেষ হবার আগেই এপ্লিকেশন করে মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে পারবেন। মেয়াদ বাড়ানোর সময় মাথায় রাখতে হবে কি কারনে বাড়াবেন তা ৬ মাস আগে থেকেই মাথায় রাখা উচিত।
আসুন এবার কি কি ডকুমেন্টস দরকার তা জেনে নেই:
ইংলিশ শর্ট কোর্স (৬ মাস) গুলো তে সবচে কম ডকুমেন্টস লাগে। আইএলটিএস এ ৫.৫ আর এসএসসি এবং এইচএসসি থাকলেই যথেষ্ট।তবে ব্যাচেলর এবং মাস্টার্স লেভেল এর কোর্স এবং প্রোগ্রাম গুলোতে আইএলটিএস সর্বনিম্ন ৬.৫ দরকার। মাস্টার্স প্রোগ্রাম এ চান্স পেতে হলে ব্যাচেলর ডিগ্রী থাকতে হবে ভালো ইউনিভার্সিটি থেকে। যারা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে বা ইংলিশ লিটারেচার অথবা ইংলিশ সাবজেক্ট এ পড়াশুনা করেছেন তাদের জন্য আইএলটিএস লাগে না বা আইএলটিএস শিথিলযোগ্য।এখানে একটা তথ্য জেনে রাখা দরকার তা হলো বাংলাদেশ এর কিছু কিছু প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি সুইডেন এ ব্লাক লিস্টেড এবং কিছু কিছু ইউনিভার্সিটি এর ডিগ্রী কমপ্লিট ডিগ্রী হিসেবে কাউন্ট হয় না সুতরাং এই ব্যাপারে আগে থেকেই সতর্ক থাকা উচিত।
বিঃদ্রঃ বাংলাদেশের অনেক ফার্ম তাদের বিজ্ঞাপনে লেখেন যে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করলে আর একটা মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশন দিলে এ্যাডমিশন হয়। এটা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য।২০১৫ থেকে মিডিয়াম অফ ইন্সট্রাকশন কোনো ডকুমেন্টস হিসেবে কাউন্ট হয় না। তবে যারা ফাইন অফ আর্ট ইন ইংলিশ এ স্টাডি করেছেন তারা এ্যাডমিশন পাবেন।
টিউশন ফিস:
বিসনেস, সমাজবিজ্ঞান রিলেটেড কোর্স এবং প্রোগ্রাম গুলো তে সাধারণত = ৪২৫০০ (+) সুইডিশ সেক।
ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজ্ঞান এবং কম্পিউটার রিলেটেড কোর্স বা প্রোগ্রাম গুলো তে সাধারণত = ৬৫০০০ (+) সুইডিশ সেক।
এবার আসুন কত টাকা লাগবে এপ্লিকেশন করতে:
১) শিক্ষাগত সব ডকুমেন্ট সুইডেন এ পাঠাতে ২০০০ + টাকা লাগতে পারে তবে এর পরিমান পরিবর্তন হয় ডকুমেন্টস এর ওজন ও কোম্পানি এর উপর ডিপেন্ড করে।
২) এপ্লিকেশন প্রসেসিং ফিস ৯০০ সুইডিশ সেক।
৩) ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি নিশ্চিত হলে টিউশন ফিস দিতে হবে ( ৪২৫০০ + অথবা ৬৫৫০০ +)।
ভিসা এপ্লিকেশন:
ইউনিভার্সিটি টিউশন ফিস রিসিভ করলে অথবা টিউশন ফিস এর সুইফট কপি ব্যাঙ্ক থেকে পাবা মাত্র আপনি ভিসা এপ্লিকেশন এর জন্য প্রস্তুত।
ভিসা এপ্লিকেশন এ যা যা লাগবে:
১) অফার লেটার ইউনিভার্সিটি থেকে সফট কপি
২) ব্যাঙ্ক সচ্ছলতা (কত টাকা দেখাতে হবে তা নিচের লেখা গুলো পড়ুন)
৩) ভিসা ফিস (১০০০ সেক)
৪) টিউশন ফিস এর পেমেন্ট কপি।
৫) আর স্টাডি পার্মিট এর পূরণকৃত এপ্লিকেশন ফর্ম ফ্যামিলি ডিটেলস সহ।
৬) পাসপোর্ট
নোট: সুইডেন এ ভিসা এপ্লিকেশন এর জন্য ইন্সুরেন্স লাগে যা ইউনিভার্সিটি থেকেই দেয়, সুতরাং আলাদা ভাবে ইন্সুরেন্স করার প্রোয়োজন হয় না।
ব্যাঙ্ক সচ্ছলতা ভিসা এর জন্য:
যারা ৬ মাসের কোর্স এ আসবেন তাদের জন্য ব্যাঙ্ক এ ৮০১০ X ৬ = ৪৮০৬০ সুইডিশ সেক দেখানো লাগবে।
নোট: যারা ১ বছর, ২ বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় এর জন্য স্টাডি করতে আসবেন তাদের ব্যাঙ্ক এ ৮০১০ (প্রতি মাস) সেক কে বছর অনুযায় মাস দিয়ে গুন দিবেন। একটা উদাহরণ দিয়ে ক্লিয়ার করা যাক।
ধরেন আপনি ২ বছর এর জন্য স্টাডি করতে আসবেন আর ২ বছর এ ২৪ মাস আসে। তাহলে আপনার ব্যাঙ্ক এ ৮০১০ X ২০ = ১৬০২০০ সুইডিশ সেক দেখাতে হবে (যারা ১ বছর বা তার বেশি স্টাডি এর জন্য আসবেন তাদের জন্য বসর ১০ মাসে, এ কারনে ২ বসর কে ২৪ এর পরিবর্তে ২০ দিয়ে গুন করা হয়েছে)।
ভিসা এর ডিসিশন:
স্টাডি পার্মিট এর জন্য ম্যাক্সিমাম ৩ মাস লাগে যদি সুইডেন এর বাহির থেকে এপ্লিকেশন করেন তবে সাধারণত ৩ মাস লাগে না।
পার্ট টাইম জব:
পড়াশুনার পাশাপাশি পার্ট টাইম জব করে এখানে থাকা এবং খাবার এর টাকার যোগান দিতে পারবেন।
ওয়ার্ক পার্মিট:
৩০ ক্রেডিট (১ সেমিস্টার বা ৬ মাস) কমপ্লিট করার পরে ফুল টাইম কাজ খুঁজে পান তাহলে ওয়ার্ক পার্মিট এ এপ্লিকেশন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে কমপক্ষে প্রতি মাসে ১৩৫০০ সুইডিশ সেক আফটার ট্যাক্স দেখাতে হবে।
কাজের সময় সীমা:
সুইডেন এ পার্ট টাইম কাজ করার জন্য কোনো ধরা বাধা নিয়ম নেই। একটু ক্লিয়ার করি, ইংল্যান্ড সহ আরো অনেক দেশে স্টুডেন্ট দের জন্য ধরা বাধা নিয়ম আছে, সেটা হলো স্টুডেন্ট রা ২০ ঘন্টার বেশি কাজ করতে পারবে না ১ সপ্তাহে কিন্তু সুইডেন এ আপনি যতক্ষণ খুশি কিংবা যতক্ষণ পারেন ততক্ষণ কাজ করতে পারবেন। আর ফুল টাইম জব সাধারণত ৮ থেকে ১০ ঘন্টা।
পার্মানেন্ট:
ওয়ার্ক পার্মিট এ এপ্লিকেশন করলে প্রথমে ২ ইয়ার্স এর রেসিডেন্স পার্মিট দেয় তারপর আরো ২ ইয়ার্স এবং ৪ ইয়ার্স পরে আপনি পার্মানেন্ট হবার জন্য এপ্লিকেশন করতে পারবেন।
নোট: সুইডিশ ভাষা জানা থাকলে অনেক সহজেই কাজ খুঁজে পাবেন কিন্তু জানা না থাকলে ঠিক ততটাই কঠিন।
যেকোনো তথ্য ও সহায়তা পেতে যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে।
উল্লেখ্য আমিওপারিতে পূর্বে প্রকাশিত ইউরোপ নিয়ে অনেক প্রয়োজনীয় কিছু লেখার লিঙ্ক এখানে তুলে ধরা হল যা আপনাদের কাজে আসতে পারে।
*ইতালিতে নির্যাতিত নারীরা কিভাবে তাদের অধিকার,হক আদায় করবেন?কোথায় যাবেন?কি করবেন? পার্ট – ১ এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিন।
*ইতালিতে ফ্যামিলি ভিসার ফি ১২৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকার মতো ধার্য করা হয়েছে। এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিন।
*সেঞ্জেন ভুক্ত ইউরোপের যেকোনো দেশের পাসপোর্ট,রেসিডেন্স কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ইত্যাদি ডকুমেন্টস গুলো চিনে রাখুন।এখানে ক্লিক করে।
*ইতালিতে ফ্যামিলি ভিসা ছাড়া কিভাবে দ্রুত স্বামী/স্ত্রী কে টুরিস্ট ভিসায় নিয়ে আসা যায়? জেনে নিন বিস্তারিত এখানে ক্লিক করে।
* বন্ধ হল ইতালির স্টুডেন্ট ভিসায় আসার পথ। এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
* কিভাবে ইতালির টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করবেন? কি কি লাগবে ইত্যাদি বিষয় জানতে এখানে ক্লিক করে জেনে নিতে পারেন।
* ইউরোপে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা অথবা এণ্ট্রি ব্যান কি? কি কি কারনে আপনাকে ব্যান করতে পারে? এখানে ক্লিক করে জেনে নিতে পারেন।
* অবশেষে এপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই ইতালির ভিসা আবেদন কেন্দ্র ভিএফএস গ্লোবালে ভিসার আবেদন জমা নিচ্ছে। এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
* ইতালিতে ফ্যামিলি ভিসার আবেদনের ক্ষেত্রে পুরাতন সিস্টেম পরিবর্তন করে সম্পূর্ণ নতুন সিস্টেম চালু করা হয়েছে। এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
* ইতালিয়ান পাসপোর্ট দ্রুত পাবো কিভাবে?ও ইতালিয়ান নাগরিকত্ব পেতে সে সংক্রান্ত কিছু বিষয় না জানলেই নয়। এখানে ক্লিক করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারেন।
যারা ইউরোপের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন অথবা ইতালিতে ফ্যামিলি ভিসা নিয়ে নানা ধরণের সমস্যায় ভুগছেন? অথবা দেশে জমা দিয়ে ভিসা পাচ্ছেন না? বা ফ্যামিলি ভিসা থেকে শুরু করে ইতালি ও ইউরোপের যেকোনো ধরণের ভিসা সংক্রান্ত বিষয়ে আইনি সহায়তার জন্য সরাসরি আমিওপারি টিম এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
আমাদের সাথে যোগাযোগের বিস্তারিতঃ স্ক্যাইপ- amiopari টেলঃ +৩৯ ০৬২৪৪০৫২১৭ মোবাইল +৩৯ ৩৩৮১৪০৮৯১৭ (WIND)মোবাইলঃ +৩৯ ৩২০০৪১২৫৪০ (WIND) মোবাইলঃ +৩৯ ৩৪২৭৯৭৩২৮০ (WIND) ইমেইলঃ info@amiopari.com
ঠিকানাঃ Via Delle Albizzie-27, 00172 Rome (Centocelle), Italy.
আর যারা আপনাদের ফেসবুকে আমাদের সাইটের প্রতিটি লেখা পেতে চান তারা এখানে ক্লিক করে আমাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গিয়ে লাইক দিয়ে রাখতে পারেন। তাহলে আমিওপারিতে প্রকাশিত প্রতিটি লেখা আপনার ফেসবুক নিউজ ফিডে পেয়ে যাবেন। ধন্যবাদ।