আসলে এটি একটি ক্রিয়েটিভ চিন্তা ভাবনা যা আমরা কখনো ভেবে দেখেনি বা ভাবার প্রয়োজন মনে করিনি। তাই আপনাদের হয়ে আমিওপারি ডট কম আপনাদের কাছে উপস্থাপন করবে কিছু বাস্তব ও আমাদের সকলের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য যা আমাদের দেশ ও দেশের মানুষের চেহারা পালটিয়ে দিতে অনেক সাহায্য করবে।আসলে আমার এই কথাটি প্রবাসীদের নিয়ে এবং তাদের দ্বারা দেশে প্রেরিত রেমিটেন্স নিয়ে। তাহলে আসুন দেখি এই রেমিটেন্সটাকে আমরা কিভাবে যথাযথ ভাবে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগাতে পারি।
যারা প্রবাসে থাকেন তাদের কাছে প্রথম পছন্দ হোক বাঙালি দোকান; দ্বিতীয়টা অন্য কিছুঃ ”স্বদেশী পণ্য কিনে হোন ধন্য”- এই শ্লোগানটা দেশে এক সময় খুব প্রচলিত ছিলো। কিন্তু বিদেশে মানে যারা প্রবাসে থাকেন তাদের জন্য কি প্রযোজ্য? নাকি এমন শ্লোগান প্রবাসীদের জন্য নয়? কিন্তু যতই আমরা প্রবাসী হই, আমাদের শেকড় তো দেশে। মানে আমাদের পরিবার বা আমাদের আদিভূমি বা আমাদের ফেরার জায়গা তো সেই বাংলাদেশ। প্রতি বছর প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিটেন্সে লাভবান হচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু কিভাবে লাভবান হচ্ছে একবার ভেবেছেন? এই যে বিশাল অংকের রেমিট্যান্স যাচ্ছে দেশে সেখানে আপনার বা আমার ভূমিকা কি? যদি সরাসরি ভূমিকা থাকে তাহলে অনেক ভালো আর না থাকলে কেনো নয় তা কি ভেবেছেন কখনো? উত্তর হয়তো সহজ, আমি টাকা পাঠাই না তাই আমার ভূমিকা নেই!উত্তরটা সহজ হলেও সত্য নয়! টাকা না পাঠিয়েও আপনি এর চেয়ে বেশী এবং গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন প্রবাসী রেমিটেন্স বাড়ানোতে। চলুন দেখি কিভাবে কাজটা করা যায়।
আপনি চা বা কফি পান করতে চাইলে কোথায় যান? পাশের কোনো দোকানে? দোকানটা কার? ঘরের জন্য যে বাজার করেন, সেই দোকানটা কার? গরমে ঠান্ডা, ঠাণ্ডায় গরমের জিনিস কিংবা নিছক একটা সিঙ্গারা অথবা ফোনকার্ড কিনলে কিংবা দেশে টাকা পাঠালে কার দোকান থেকে পাঠান? একবারও কি ভেবেছেন, আপনার পকেট থেকে যে টাকাটা গেলো তা কোথায় যায়? নিশ্চয় সেই দোকানটার মালিকের পকেটে অথবা সে যে দেশের সেই দেশেই যায় টাকাটা!সাধরারণত চাইনিজ, শ্রীলঙ্কান, এ্যরাবিক, ইন্ডিয়ান/পাকিস্তানি, আফ্রিকানদের কি তেমন দেখেন বাঙালি দোকান থেকে সবকিছু কিনে নিতে? আপনি হয়তো বলতে পারেন ন্যায্য দাম এবং ভালো কোয়ালিটির কথা। সেই প্রসঙ্গেই আসছি!
মনে করুন আপনি একটা বাঙালি দোকান থেকে কোনো কিছু কিনলেন এবং দেখলেন যে তার দাম অন্য দোকানের চেয়ে বেশী। সেই ক্ষেত্রে আপনি অতি সহজে নিজের ভাষায় সেই দোকানিকে তা জানাতে পারেন। আপনি তাকে জানালে কতজন লাভবান হচ্ছে দেখুন।
- আপনি নিজেঃ নিজের ভাষায় দরদাম করে সঠিক মূল্যে পন্য কেনা নিশ্চিত হচ্ছে।
- আপনার দোকানিঃ হয়তো সেই দোকানি উক্ত পন্যটি বেশী দামে কিনেছে যার কারণে সে বেশী দামে বিক্রি করছে। আপনি তাকে বললে সে সতর্ক হলো এবং ন্যায্য দামে ক্রয় করে ন্যায্য দামে বিক্রি করলো।
- সাধারণ ক্রেতাঃ আপনি অভিযোগ দেয়ার কারণে যদি সেই পন্যটার ন্যায্য মূল্য নির্ধারিত হয়, তাহলে সাধারণত যে সকল ক্রেতারা যাচাই-বাচাই না করে কিনে থাকেন, তারাও উপকৃত হলেন।
- কমিউনিটি’র কল্যানঃ এভাবে কমিউনিটির একজন যদি ভালো আর্থিক অবস্থানে যান, ব্যক্তিগত ভাবে সামর্থবান হন তাহলে তো দেশ এবং প্রবাসি সকলেরই কল্যান। রেমিটেন্স বৃদ্ধি, প্রবাসিদের কর্মক্ষেত্র বৃদ্ধিসহ প্রবাসে সামাজিক স্থিতিশীলতার একটা রূপরেখা তৈরি হবে।
- আরো মনে রাখা উচিৎ বাঙালি দোকানে সাধারণত যারা কাজ করেন তারা সবাই বাঙালিই হয়ে থাকেন। সেখানে বেতন কাঠামোর ক্ষেত্রে তারতম্য থাকলেও বৈধ অবৈধ কিন্তু বিবেচ্য নয়।
তবে আপনি সর্তক করে দিয়ে সময় দেওয়া সত্বেও যদি সেই দোকানির কোনো পরিবর্তন না দেখেন, সেক্ষেত্রে অন্যকে সর্তক করুন, প্রতারিত হওয়া থেকে বাঁচান।এবং সবাই মিলে তার বীরুধে পদক্ষেপ নিন, কেননা দশে মিলে করি কাজ হারি জিতি নাহি লাজ। যদি আমরা সকল প্রবাসী একসাথে একি স্লোগানে কাজ করি তাহলে কিন্তু সব কিছুই আমাদের আয়ত্তের মধ্যেই থাকবে।
মনে রাখতে হবে, প্রতিটা প্রবাসী কমিউনিটির অবস্থান সাদারণত নির্ধারিত হয়ে থাকে সেই কমিউনিটির আর্থিক অবস্থানের উপরই। তাই পৃথিবীর অনেক কমিউনিটিই কিছু ভূমিকা পালন করে। যেমন, কমিউনিটির কেউ নতুন ব্যবসা বা দোকান দিলে সেই দোকানের ৩০০ মিটারের মধ্যে যারা থাকেন তারা ৩ মাস বাধ্যতামূলক ভাবে ন্যায্য মূল্যে ঐ দোকান থেকে পন্য কিনে থাকেন। যার ফলে শুরুর তিন মাসের নিজেদের সাপোর্টে ঐ ব্যবসা/ব্যবসায়ী একটা মোটামুটি অবস্থানে চলে যান। তার ব্যবসাটা দাঁড়িয়ে যায়। কিন্তু আমরা বাঙালিরা কি তা করি? আমরা অনেকেই হয়তো এই সিষ্টেমটা জানিও না।
চায়নার মতো পৃথিবীর বৃহৎ জনবহুল দেশের মানুষজন প্রবাসে কেমন একত্রিত থাকে। মানে নীতিগত ভাবে এক থেকে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ সবার থেকে উপরে নিয়ে দেশকে এক শক্ত অবস্থানে নিয়ে গেছে। তারা যদি করতে পারে তাহলে আমরা কেনো পারি না? অথচ আমাদেরই বেশী একত্রিত থাকা উচিৎ, বেশী পারা উচিৎ। প্রবাসীদের রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে কমিউনিটির উন্নয়ন এবং বৈদেশিক মুদ্রার মজুদের ক্ষেত্রে নীতিগত ভাবে এক থাকা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব এবং এটাই উচিৎ।
আর কিছু না করে, কোনো টাকা না পাঠিয়েও যদি দেশপ্রেম দেখাতে পারি, কমিউনিটির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারি, দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বাড়িয়ে দেশকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করতে পারি; তাহলে কেনো করবো না?মনে রাখবেন ছোট ছোট বালুকনা বিন্দু বিন্দু জল, কাজেই আপনার সামান্য তৎপরতা একদিন আমাদের দেশের জন্য সমুদ্র অতল অর্থ জড় করবে যা হয়তো আপনি এখন বুঝতে পাড়বেন না।
আর একটি কথা মনে রাখবেন আমাদের সামান্য চেস্তায় যখন একটি বাঙ্গালির দোকান চাঙ্গা হয়ে উঠে তখন তার দোকানের সকল অর্থ কিন্তু আমাদের দেশেই যাচ্ছে, এবং সেই দোকানদার কৃপণ হোক বা সহৃদয়বান সেটা বড় বিষয় না, একবার তার দ্বারা অর্জন করা রেমিটেন্স কিন্তু সে না চাইলেও তার মনের অজান্তেই সেটি আমদের সবার কাজে লাগছে। কিভাবে? যেমন ধরুন মানুষের কাছে যখন অনেক টাকা থাকে তখন কিন্তু তার খরচও বেড়ে যায়, যেমন এক্ষেত্রে ভালোমনের মানুষগণ মসজিদ মাদ্রাসা ও বিভিন্ন কর্মসংস্থানে দান করা নিয়ে বেস্ত হয়ে পড়ে। কৃপণ টাইপ এর লোক যেমন- যারা সামনে দিয়ে একটি পিপড়া যেতে দেয়না অথচ পিছন দিয়ে হাতি চলে যায় বা নিজেদের সম্পদ খরচ না করে বুকে ধরে রাখতে চায়,তারা কিন্তু একটা কথা ভুলে যায় যে শত হোলেও সে একজন মানুষ এবং একদিন তার মৃত্যু হবে, তো এখানে কৃপণ সভাবের লোকদের নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই, কেননা রেমিটেন্স একবার যখন দেশে গিয়েছে সেটা একদিন না একদিন কোন না কোন ভাবে আমাদের দেশের কাজে আসবেই, কেননা সেই কৃপণ লোক কিছু না করে গেলেও তার উপার্জিত অর্থ মৃত্যুর পর তার বংশোধরদের মধ্যে ভাগাভাগি হবে এবং তাদের দ্বারা সেই অর্থ একদিন সবার কাছে ছড়িয়ে পড়বে, যেমন হঠাট করে আপনি বড়লোক হয়ে গেলেন তখন কিন্তু আর হেটে চলাফেলা করবেন না তখন আপনি রিস্কা দিয়ে যাবেন, যারা ফকিরমিস্কিন দের দান করেন তারা ৫ টাকার বদলে ১০ টাকা দান করবেন ইত্যাদি ইত্যাদি আরো অনেক উদাহরন রয়েছে এতে করে সেই রেমিটেন্স এখন একজন রিস্কা ও ফকিরের পরিবারের পিছনে ব্যয় হচ্ছে এবং তারা খেয়ে দেয়ে বেঁচে থাকছে। উল্লেখ্য এটি সম্ভব হয়েছে কেননা আজকে আপনার দেশের মানুষের কাছে টাকা রয়েছে বিধায়, যদি আজকে টাকা না থাকে তাহলে একজন রিস্কাআলা সাঁরা দিন রিস্কা নিয়ে বসে থাকলেও টাকা উপার্জন করতে পারবেনা, কেননা আমরা কিছুই করিনি তাদের জন্য তাই, একসময় আমাদের দেশের আর্থিক অবস্থা খারাপ হতে থাকবে,এবং মানুষের কাছে পরিপূর্ণ টাকা থাকবে না কাজেয় টাকা নেই তো সে কিভাবে রিস্কা দিয়ে ঘুরবে তারা ইত্যাদি ইত্যাদি এখানে শুধু আপনাদের বুঝাতে একটি উধাহরন দিলাম।কাজেই ফলাফল যা দাঁড়ালো প্রবাসে কেউ ভালো করলে তা কোন না কোন ভাবে আমাদের কাজে আসবেই।আসুন আজ থেকে আমাদের প্রথম পছন্দ হিসেবে রাখি বাঙালি দোকান; দ্বিতীয়টা হউক অন্য কিছু।
✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔✔
বিঃদ্রঃ দেশের ভাইবোনদের বলছি যারা দেশে থেকে এই লেখাটি পড়ছেন তারা দয়া করে তাদের পরিচিত প্রবাসীদের কাছে আমাদের এই ম্যাসেজ টি পৌছে দিবেন এবং আমরা চাই এই পোস্টটা লাইক দিয়ে, শেয়ার করে অথবা আপনারা আপনাদের স্ট্যাটাস হিসেবে; যেভাবে পারেন ছড়িয়ে দিন সবার মাঝে। যেকোনো কমিউনিটি পেজ এই লেখাটা পোস্ট করুন আপনাদের পেজে। এবং প্রবাসীদের বলছি আমরা জানি আপনাদের অনেকের মধ্যে অনেক ক্রিয়েটিভ চিন্তা ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে, তাই সেগুলো নিজের মধ্যে তালাবদ্ধ না রেছে নিজের ও দেশের কল্যাণে সবার সাথে শেয়ার করুন তুলে ধরুন আপনার ভিতর লুকায়িত প্রতিভা এবং সবাইকে জানিয়ে দিন আমিওপারি।
[[ আপনি জানেন কি? আমাদের সাইটে আপনিও পারবেন আপনার নিজের লেখা জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বা আপনার এলাকার খবর তুলে ধরতে জানতে “এখানে ক্লিক করুণ” তুলে ধরুন নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান। ]] আর আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে রয়েছে অনেক মজার মজার সব ভিডিও সহ আরো অনেক মজার মজার টিপস তাই এগুলো থেকে বঞ্চিত হতে না চাইলে এক্ষনি আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে লাইক দিয়ে আসুন। আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে যেতে এখানে ক্লিক করুন।