তোফাজ্জল তপু ,পালেরমো-ইতালিঃ ইতালির পালেরমোর কৃতি শিক্ষার্থী প্রবাসী বাংলাদেশী তাহমিদা ইসলাম তানিয়া। তার কৃতিত্বে গোটা সিসিলির বাংলাদেশী প্রবাসীদের মুখ আরো উজ্জল করেছে। পালেরমো সিটি মেয়র তার এই কৃতিত্বের জন্য সম্মাননা ক্রেস্ট প্রধান করেছে।১৯৯৫ সালে মাত্র ৬ বছর বয়সে বাবা মায়ের সাথে ইতালিতে আসে তানিয়া। বাবা রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন থেকে ইতালিতে আছেন। ছোট বেলা থেকে তানিয়া পড়াশুনায় বেশ মনোযোগী। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তানিয়া ইতালিয়ান ভাষা শিখে ফেলে। ছোট বেলার স্মৃতি এখনো তার মনে পরে। বাংলাদেশের প্রতি তার রয়েছে অনেক ভালবাসা। সে নিজেকে সব সময় একজন বাংলাদেশী মনে করে। ইতালিতে বসবাস করলেও সে ইতালিয়ানদের কাছে বাংলাদেশের কথা গুলো তুলে ধরে। যাতে করে ইতালিয়ানরা আমাদের দেশকে সুদৃষ্টিতে দেখে। তাহমিদা ইসলাম তানিয়া বাংলাদেশের রাস্তার দু’পাশে ফুটপাতে বাসস্থান হীন মানুষের পাশে থেকে তাদের জন্য কিছু করতে চায়। তাদের মাথা গুজার ঠাই করে দিতে।
তানিয়া স্কুলের পড়ালেখা শেষে ২০০৭ সালে ভর্তি হন (Universita degli studi palermo Facoltà di Architettura) corso di laurea in pianificazione territoriale urbanistica & ambiente .এই ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে তানিয়া কে অনেক পরিশ্রম ও পড়ালেখা করতে হয়েছে। কারণ মাত্র ২০০ সিটের জন্য ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছে ৭০০ জন। শেষ পর্যন্ত তানিয়া তার মেধা দিয়ে ২০০ জনের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। আর এই ইউনিভার্সিটিতে প্রথম বাংলাদেশী হিসাবে একমাত্র তানিয়া ভর্তি হয়ে প্রমান করেছে যে চেষ্টা থাকলে সব সম্ভব।
পড়াশুনার পাশাপাশি তানিয়া তার বাবার ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট মুন ইন্ডিয়ান এ পার্ট টাইমে জব করতেন। ২০০৯ সালে মা বাবার পছন্দের পাত্রের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু স্বামীর অনুপ্রেরনায় তিনি পড়লেখা চালিয়ে গেছেন। স্বামী সংসার তার সাথে পড়ালেখা চালিয়ে ২০১৩ সালে তানিয়া অর্জন করেন তার কাঙ্খিত সাফল্য। ইউনিভার্সিটি থেকে উর্বাণ প্লানিং এন্ড ইনভায়রোমেনট ডিগ্রী লাভ করেন। তানিয়া ই একমাত্র বাঙালি মেয়ে যে এই সম্মান অর্জন করে এবং ইতালিয়ার এই সিসিলিতে আর কোনো প্রবাসী ছেলে মেয়ে এই ধরনের সম্মান অর্জন করতে পারেনি। তানিয়ার এই অর্জনের পর অনেক স্থানীয় পত্রিকা গুলো অনেক সংবাদ প্রকাশ করে। যা প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রশংসা ও সুনাম বৃদ্ধি করে। এছাড়া এই অর্জনের পর তানিয়া পালেরমোর সিটি মেয়র Leoluca Orlando কাছ থেকে আমন্ত্রণ পেয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। তানিয়া কে অনুপ্রানিত করতে মেয়র নিজ হাথে তুলে দেন সম্মাননা পদক। তানিয়ার এই পদক অর্জন ছিল পালেরমো প্রবাসী বাংলাদেশীদের গর্বের এবং আনন্দের। তানিয়ার এই সাফল্য দেখে পালেরমোর প্রবাসী ছেলে মেয়েরা আরো অনুপ্রানিত হয়ে তানিয়ার মতো অর্জন বয়ে নিয়ে আসবে এই প্রত্যাশা করেন প্রবাসী পালেরমো বাসী।