সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ায় মাটির তৈরি টালি ইতালিতে রপ্তানির জন্য মংলা বন্দরে রাখা হয়েছে।ইতালিতে মাটির টালি রপ্তানির চেষ্টা করেন রুহুল আমিন। সে জন্য তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উপযুক্ত মাটি খুঁজতে থাকেন। অবশেষে তিনি সেই কাঙ্ক্ষিত মাটির সন্ধান পান কলারোয়ার মুরারিকাটি-শ্রীপতিপুর এলাকায়। আর এতেই বদলে যায় কলারোয়ার মৃৎশিল্পীদের ভাগ্য। তাঁরা এখন আর হাঁড়ি-কলসী তৈরি করেন না। মাটির কারিগররা তৈরি করছেন বাহারি টালি। টালি রপ্তানি হচ্ছে ইতালি, বেলজিয়ামসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে। আয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা।
কলারোয়া থেকে ২০০৩ সালে ইতালিতে টালি রফতানি করেন কাররা এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্ত্বাধিকারী রুহুল আমিন। তিনিই প্রথম এ এলাকায় টালি রপ্তানির পথ দেখান। আর এ পথ ধরেই গত সাত বছরে এ এলাকায় স্থাপিত হয়েছে ২৫-৩০টির মতো টালি কারখানা। ইউরোপের দেশগুলোয় মাটির তৈরি টালির চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে। দীর্ঘ এ সময়ে সাতক্ষীরার তৈরি প্রচুর টালি মংলা বন্দর দিয়ে বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ার মৃৎশিল্পীরা এখন আর হাঁড়ি-কলসী তৈরি করেন না। তবুও তাঁদের ঘরে নেই অভাব-অনটন। মুরারিকাটি-শ্রীপতিপুরের মাটির কারিগররা এখন তৈরি করেন বাহারি টালি। তাদের মেধা ও শ্রমে তৈরি করা টালি আজ ঠাঁই করে নিয়েছে দেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যের তালিকায়। ইউরোপের কয়েকটি দেশে এখন রপ্তানি করা হচ্ছে এসব টালি। বাংলাদেশের কাদা মাটির তৈরি টালি শীতপ্রধান দেশে ভবনগুলোকে বরফ থেকে রক্ষায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ছাড়া শোভাবর্ধনের কাজেও ব্যবহার হচ্ছে টালি। মুরারিকাটি-শ্রীপতিপুর পরিচিতি পেয়েছে ‘ইতালি নগর’ নামে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রত্যেকটি কারখানায় রপ্তানির জন্য মজুদ করা আছে বিপুল পরিমাণ বাহারি ডিজাইনের টালি। শত শত নরী-পুরুষ মাটি দিয়ে তৈরি করছেন টালি। প্রতি কারখানাতে ২৫-৩০ জন করে কারিগর ও শ্রমিক কাজ করেন। এসব মাটির কারিগররা কাজের দক্ষতার ভিত্তিতে ১০০ থেকে ২৫০ টাকা দৈনিক পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন। এ টাকায় তাঁরা সংসারের প্রয়োজন মিটিয়েও কিছুটা সঞ্চয় করতে পারেন। জানা যায়, শীতই টালি তৈরির মৌসুম। কলারোয়া ক্লে টাইলস, আরনো এক্সপোর্ট- ইমপোর্ট, জেএস ট্রেডার্স, ডি চন্দ্র পাল, নিকিতা ইন্টারন্যাশনাল ও কটো ইনোভেটর লিমিটেড গত কয়েক বছর ধরে টালি রপ্তানি করে আসছে। রেক্ট্যাঙ্গুলার, স্কয়ার, অ্যাঙ্গুলার, ব্রিকস শেপড_এসব বিভিন্ন আকার ও ডিজাইনের টালি তৈরি ও রপ্তানি করা হয়। ক্লে টাইলসের স্বত্বাধিকারী গোষ্ঠ চন্দ্র গোপাল বলেন, ‘ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে দিন-দিন আমাদের তৈরি করা টালির চাহিদা বাড়ছে। তবে টালি কারখানার সংখ্যা বেশি হওয়ায় স্টক থেকে যাচ্ছে। প্রতিবছর মংলা বন্দর দিয়ে কনটেইনারে ভর্তি করে ৭ থেকে ১০ মেট্রিকটন টালি ইটালি, জার্মানি ও বেলজিয়ামে রপ্তানি হচ্ছে। মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী ট্রাফিক ম্যানেজার শেখ আবদুস সালাম জানান, গত ৭ বছরে মংলা বন্দর দিয়ে সাতক্ষীরার তৈরি কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ হাজার মেট্রিক টন টালি বিদেশে রপ্তানি হয়েছে। সরকার এ খাতকে উৎসাহী করতে রপ্তানি পণ্যের অর্থের ওপর শতকরা আড়াই পারসেন্ট রেয়াতি সুবিধা দিচ্ছে। এখান থেকে প্রতি বছর ৩০০-৪০০ কনটেইনার টালি ইতালি জার্মানি ও বেলজিয়াম যায়। টালি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করলেও এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তেমন নজর নেই। যদি আশানুরূপ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া যেত, তাহলে কারখানাগুলোর উৎপাদনের মান আরো ভালো হতো। শিল্পটি আরো বিকশিত হতো।
[[ আপনি জানেন কি? আমাদের সাইটে আপনিও পারবেন আপনার নিজের লেখা জমা দেওয়ার মাধ্যমে আপনার বা আপনার এলাকার খবর তুলে ধরতে এই লেখায় ক্লিক করে জানুন এবং তুলে ধরুন। নিজে জানুন এবং অন্যকে জানান। আর আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে রয়েছে অনেক মজার মজার সব ভিডিও সহ আরো অনেক মজার মজার টিপস তাই এগুলো থেকে বঞ্চিত হতে না চাইলে এক্ষনি আমাদের ফেসবুক ফ্যানপেজে লাইক দিয়ে আসুন। এবং আপনি এখন থেকে প্রবাস জীবনে আমাদের সাইটের মাধ্যমে আপনার যেকোনো বেক্তিগত জিনিসের ক্রয়/বিক্রয় সহ সকল ধরনের বিজ্ঞাপন ফ্রিতে দিতে পাড়বেন। ]]